ঢাকা ১০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




৮০ টাকার আদা ৩৫০, ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পালালেন ব্যবসায়ীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০ ১৩০ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, 

চট্টগ্রামে ৮০ টাকায় আমদানি করা আদা পাইকারি বাজারে ২৫০ টাকা এবং নগরের বাজারগুলোতে খুচরা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখবরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান শুরু করলে নগরীর হামিদুল্লাহ বাজার, নবী সুপার মার্কেট, আমির মার্কেট, ইয়াকুব বিল্ডিং, চাক্তাই এলাকার বেশ কিছু আমদানিকারক তাদের অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দেন।

এসময় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে আদা বিক্রি করায় ৭ ব্যবসায়ীকে ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে খাতুনগঞ্জে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জ বাজারে অভিযানকালে দেখা যায়, আদার আড়তগুলোতে আমদানি মূল্যের চাইতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ দামে আদা বিক্রি হচ্ছে। হাতেনাতে অধিক মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আদা বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেটের কামাল উদ্দিন ব্রাদার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া পাহাড়তলী বাজার ও ফইল্লাতলী বাজারে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার পাহাড়তলী বাজারে এক ব্যবসায়ীকে অতিরিক্ত দামে আদা বিক্রি, আদা ক্রয়ের রশিদ না থাকা এবং মূল্য তালিকা না থাকায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া সর্বমোট ৫টি মামলায় পাঁচজন ব্যবসায়ীকে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
আমদানি তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি ২০২০ হতে ২৪ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩৫ জন আমদানিকারক মোট ৩১৪৩.৯৫ মেট্রিক টন আদা আমদানি করেছে। যার কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সসহ আমদানি খরচ ২৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭ হাজার টাকা। এ হিসেবে আদার গড় আমদানি মূল্য কেজি প্রতি ৮০ টাকার মতো। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ থেকে যে আদা আমদানি হয়েছে সেগুলোর কেজি প্রতি মূল্য ৯০-৯৫ টাকার মতো।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, পাহাড়তলির বিভিন্ন আড়ত ও মোকামে রেজিস্ট্রার অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, বিগত ১৫ এপ্রিলের পর থেকে আদা ব্যবসায়ী চক্র (আমদানিকারক, ব্রোকার, কমিশন এজেন্ট, আড়তদার) আদার মূল্য বাড়িয়ে ১২৫ টাকা থেকে কয়েক দিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকার উপরে নিয়ে গেছেন। আমদানিকারকরা বন্দর থেকে সরাসরি দালাল (ব্রোকার), কমিশন এজেন্টদের মাধ্যমে আড়তদারদের নিকট এসব পণ্য পৌঁছে দেন। মূলত চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আদার বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে কতিপয় আমদানিকারক ও ব্রোকারদের (দালাল) যোগসাজশে আদার বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে।
খাতুনগঞ্জে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এবং আলী হাসান র‌্যাব-৭ সদস্যরা বিভিন্ন আদা, রসুন, পেঁয়াজ, খেজুর, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান শুরু করলে হামিদুল্লাহ বাজার, নবী সুপার মার্কেট, আমির মার্কেট, ইয়াকুব বিল্ডিং, চাক্তাই এলাকার বেশ কিছু আমদানিকারক তাদের অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দেয়। এদের মধ্যে যেসকল প্রতিষ্ঠান গা ঢাকা দিয়েছে তাদের অধিকাংশই আদা ব্যবসায়ী। বিভিন্ন পাইকারি দোকান, আড়ত ও মোকামে বিক্রেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আদার আমদানিকারকদের সাথে একটি দালাল (ব্রোকার) এবং কমিশন এজেন্টচক্র যুক্ত হয়ে আদার বাজার মূল্যে কারসাজি করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




৮০ টাকার আদা ৩৫০, ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পালালেন ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, 

চট্টগ্রামে ৮০ টাকায় আমদানি করা আদা পাইকারি বাজারে ২৫০ টাকা এবং নগরের বাজারগুলোতে খুচরা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখবরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান শুরু করলে নগরীর হামিদুল্লাহ বাজার, নবী সুপার মার্কেট, আমির মার্কেট, ইয়াকুব বিল্ডিং, চাক্তাই এলাকার বেশ কিছু আমদানিকারক তাদের অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দেন।

এসময় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে আদা বিক্রি করায় ৭ ব্যবসায়ীকে ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে খাতুনগঞ্জে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জ বাজারে অভিযানকালে দেখা যায়, আদার আড়তগুলোতে আমদানি মূল্যের চাইতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ দামে আদা বিক্রি হচ্ছে। হাতেনাতে অধিক মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আদা বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেটের কামাল উদ্দিন ব্রাদার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া পাহাড়তলী বাজার ও ফইল্লাতলী বাজারে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার পাহাড়তলী বাজারে এক ব্যবসায়ীকে অতিরিক্ত দামে আদা বিক্রি, আদা ক্রয়ের রশিদ না থাকা এবং মূল্য তালিকা না থাকায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া সর্বমোট ৫টি মামলায় পাঁচজন ব্যবসায়ীকে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
আমদানি তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি ২০২০ হতে ২৪ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩৫ জন আমদানিকারক মোট ৩১৪৩.৯৫ মেট্রিক টন আদা আমদানি করেছে। যার কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সসহ আমদানি খরচ ২৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭ হাজার টাকা। এ হিসেবে আদার গড় আমদানি মূল্য কেজি প্রতি ৮০ টাকার মতো। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ থেকে যে আদা আমদানি হয়েছে সেগুলোর কেজি প্রতি মূল্য ৯০-৯৫ টাকার মতো।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, পাহাড়তলির বিভিন্ন আড়ত ও মোকামে রেজিস্ট্রার অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, বিগত ১৫ এপ্রিলের পর থেকে আদা ব্যবসায়ী চক্র (আমদানিকারক, ব্রোকার, কমিশন এজেন্ট, আড়তদার) আদার মূল্য বাড়িয়ে ১২৫ টাকা থেকে কয়েক দিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকার উপরে নিয়ে গেছেন। আমদানিকারকরা বন্দর থেকে সরাসরি দালাল (ব্রোকার), কমিশন এজেন্টদের মাধ্যমে আড়তদারদের নিকট এসব পণ্য পৌঁছে দেন। মূলত চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আদার বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে কতিপয় আমদানিকারক ও ব্রোকারদের (দালাল) যোগসাজশে আদার বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে।
খাতুনগঞ্জে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এবং আলী হাসান র‌্যাব-৭ সদস্যরা বিভিন্ন আদা, রসুন, পেঁয়াজ, খেজুর, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান শুরু করলে হামিদুল্লাহ বাজার, নবী সুপার মার্কেট, আমির মার্কেট, ইয়াকুব বিল্ডিং, চাক্তাই এলাকার বেশ কিছু আমদানিকারক তাদের অফিস বন্ধ করে গা ঢাকা দেয়। এদের মধ্যে যেসকল প্রতিষ্ঠান গা ঢাকা দিয়েছে তাদের অধিকাংশই আদা ব্যবসায়ী। বিভিন্ন পাইকারি দোকান, আড়ত ও মোকামে বিক্রেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আদার আমদানিকারকদের সাথে একটি দালাল (ব্রোকার) এবং কমিশন এজেন্টচক্র যুক্ত হয়ে আদার বাজার মূল্যে কারসাজি করেছে।