বিআইটিআইডিতে খাবার পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা!

- আপডেট সময় : ১১:৫৫:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০২০ ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার;
চট্টগ্রাম: করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের খাবার পরিবেশনে বিআইটিআইডি কর্তৃপক্ষ গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয় বলে জানা গেছে।
এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন বিআইটিআইডিতে দায়িত্ব পালন করা এক স্বাস্থ্যকর্মী।
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত দুটি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি জেনারেল হাসপাতাল, অন্যটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)।
কিন্তু নগরের মধ্যে থাকা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরতরা কিছু সুযোগ সুবিধা পেলেও বিআইটিআইডিতে সেবা দানকারীদের জন্য কোনো সুবিধা নেই বললেই চলে।
এনিয়ে বিআইটিআইডি’তে সেবা দানকারী এক স্বাস্থ্যকর্মী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে আমাদের টানা ৭দিন হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে জানায় নিজ খরচে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। কিন্তু আমাদের হাসপাতালের বাইরে যাওয়া নিষেধ। তাহলে কিভাবে আমরা খাওয়া-দাওয়া করবো?
‘পরে অবশ্য হাসপাতালের ডাইনিংয়ে নিজ খরচে রান্নার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। তাও আবার দুপুর আর রাতের খাবার। কিন্তু সারা রাত ডিউটি করার পর সকালে আমরা কি খাবো তা নিয়ে কোনো সমাধান দেয়নি কর্তৃপক্ষ।’
আরেকজন স্বাস্থ্যকর্মী জানান, ৩টি টিম ৭দিন করে হাসপাতালে সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু প্রথম প্রথম আমাদের যে টিমগুলো কাজ করেছে তাদের থাকার জায়গা পর্যন্ত দেয়া হয়নি। ফলে করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে আবার বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের। তবে এখন বিশ্রামের জন্য ৩টি কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল বিআইটিআইডি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী তানজিমা চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খাবার এবং মাস্ক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তার ফেসবুক প্রোফাইলে তিনি লেখেন, ‘সারারাত ক্ষুধার্ত অবস্থায় কোভিড-১৯ আইসোলেশন ওয়ার্ডে কাজ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে যখন কিছু খেয়ে বিশ্রামে যাওয়ার কথা সেই সময় যদি শুনতে পাই যে- নাস্তা নেই, দিতে পারবে না, বাজেট নেই। নিজের খাবার নিজেকে জোগাড় করতে হবে।’
‘আইসোলেশনে থেকে কি এখন আমরা খাবারের জন্য বাইরে ঘুরবো? আজকে এ পেশায় এসে কি খুব অপরাধ করে ফেলেছি? নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের সেবা দেয়াটাই কি আমাদের অপরাধ? পজিটিভ করোনা রোগী নিয়ে কাজ করছি অথচ এন-৯৫ মাস্ক পাচ্ছি না। আমরা কি আমাদের প্রাপ্য অধিকারটাও পাবো না?’
এ ব্যাপারে বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল হাসান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, যারা করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে তাদের জন্য হাসপাতালে থাকার ব্যবস্থা করেছি। খাওয়া-দাওয়া হাসপাতালের ডাইনিংয়ে নিজেদের খরচে মিল মেস করে খাবে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম প্রথম ডাক্তার নার্সদের সুযোগ সুবিধা দিতে একটু কষ্ট হচ্ছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিভাবে তাদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো যায়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বাংলানিউজকে বলেন, করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর সব ধরনের প্রয়োজন মেটানোর দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আশা করছি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে বিআইটিআইডি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।