শীতে শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরিষার তেল

- আপডেট সময় : ১০:৪৯:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০ ২০২ বার পড়া হয়েছে

লাইফ স্টাইল ডেস্ক; রান্নায় সরিষার তেলের যেমন জুড়ি নেই, তেমনি ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং ত্বক মসৃণ করতেও সরিষার তেলের রয়েছে নানান গুণ।
যুগ যুগ ধরে গ্রাম বাংলায় নানি-দাদিরা তার ভবিষ্যৎ বংশধরদের শরীরে অত্যন্ত যত্ন সহকারে সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করে দিতেন। এটি যেন গ্রাম-বাংলার চিরপরিচিত একটি দৃশ্য। তবে মায়েরা শিশুর ত্বক সুন্দর রাখতে বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজ লোশন ও তেল ব্যবহার করে থাকেন। অনেক মা জানেন না কোন তেল শিশুর জন্য ভালো। শীতে শিশুর সুরক্ষায় বিভিন্ন ধরনের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। পক্ষে বিপক্ষে মতামতও রয়েছে গবেষকদের।
সৌদি আরবের জিজান জেনারেল হাসপাতালের সাবেক আবাসিক চিকিৎসক ও কমিউনিটি হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী সভাপতি ডাক্তার খন্দকার মো. আনোয়ারুল হক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে- সরিষার তেল শিশু ও বয়স্ক সবার ত্বকের জন্যই উপকারী। বিশেষ করে শীতকালে এই তেল ব্যবহারের ফলে ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
অনেকে মনে করেন সরিষার তেল ত্বকের জন্য উপকারী নয়। এর একটি কারণ হতে পারে যে, অধিকাংশ গবেষণাই হয়েছে ইউরোপ আমেরিকা ভিত্তিক, যেখানে সরিষার তেলের কোনও ব্যবহারই নেই। সেসব দেশে এখনও সরিষার তেল ত্বকে ব্যবহার করতে অনুমতি দেয়া হয় না। আবার আমাদের দেশে যেহেতু অনেক আগে থেকেই এই তেল সহজলভ্য তাই মনে করা হয়, হাতের কাছে ছিল বলেই তা ত্বকের জন্য ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়।
তিনি বলেন, সরিষার তেল ত্বকের যত্নে ও খাওয়ার জন্য উপকারী। কারণ সরিষার তেলে প্রচুর পরিমাণে মনো-স্যাচুরেটেড ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া এই তেলে ওমেগা থ্রি ও সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই রান্নায় এই তেল ব্যবহার হলে হার্ট ডিজিজ হওয়ার প্রবণতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। শিশুদের রোদে বসিয়ে সরিষার তেল মাখালে তা ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, যদি পর্যাপ্ত রোদ না থাকে তাহলে সরিষার তেল নয়, বাজারে প্রচলিত লোশন দিতে হবে। তবে শিশু বা বয়স্ক সবার জন্য সরিষার তেল মুখে দেয়া যাবে না।
সম্প্রতি আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ড–সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল ব্যবহারে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, যা হৃদরোগের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।
ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, সরিষার তেলের ওষুধি গুণাগুণ প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। সরিষার তেল খুব ঘন হয় এবং এতে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন ই থাকে। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে ত্বককে সুরক্ষা করে এই তেল। তাই এটি ত্বকের ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে।
শীতকালে অনেকেরই পা ও ঠোঁট ফেটে যায়। সেক্ষেত্রেও সরিষার তেল খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে বলে জানান এই চিকিৎসক। এছাড়া সরিষার তেলের সাথে রসুন গরম পায়ের নিচে লাগালে অনেক ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।