একজন শিক্ষকের বোবা কান্না
- আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে
এম. এ. আলিম খানঃ
একজন শিক্ষক তখনই তারা সেরাটা শিক্ষার্থীদের দিতে পারেন যখন তার শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। এর একটির ব্যত্যয় ঘটলে কোন শিক্ষকের পক্ষে তার সেরাটা দেয়া সম্ভব হয় না। হয়তো তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু যতটুকু দেয়া সম্ভব ছিল ততটুকু দিতে পারেন না। এজন্য কর্তৃপক্ষকে তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করতে হয়। এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককের কথা বলবো যিনি প্রতিনিয়ত স্কুলে যেতে আসতে অঝোরে বোবা কান্না করছেন কিন্তু কিছু বলতে পারছেন না। খুব সকালে মেয়েটিকে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ঘুম থেকে উঠিয়ে অনেক সময় না খাওয়ায়ে নিয়ে চলে যান স্কুলে। আসেন সন্ধ্যার সময় যখন মেয়েটি ঘুমিয়ে পড়ে। কোন বাবা-মা চায় না তার সন্তান এভাবে বেড়ে উঠুক। কিন্তু ভাগ্য বলে একটি কথা আছে। কপালে থাকলে কি করে আপনি তা খন্ডন করবেন।
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহানারা পারভীন। সাড়ে ৩ বছর বয়সী মেয়ে রাইসাকে নিয়ে প্রতিদিন মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলা সদর থেকে বিদ্যালয়ে যান। স্বামী মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম। শাহনারা পারভীন প্রতিদিন মহম্মদপুর-কালিগঞ্জ-লাহুড়িয়া সড়কে আসা-যাওয়া প্রায় ৫০ কি.মি. দুর্গম রাস্তা কখনও ভ্যান, কখনো অটোরিকশায় যাতায়াত করেন। সকাল পৌনে আটটার দিকে মহম্মদপুর থেকে রওনা দেন এবং সোয়া নয়টার মধ্যে স্কুলে হাজির হয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দিতে হয়। সাড়ে চারটায় আবার সাইন আউট দিয়ে স্কুল থেকে বের হয়ে প্রায় ৬টার দিকে বাসায় পৌছান। রোদ, বৃষ্টি ঝড়ের মধ্যেও ছোট মেয়েটিকে নিয়ে স্কুল করতে শুধু শাহানারার নয়, ছোট মেয়েটিরও অনেক কষ্ট হয়। দুই বার বদলীর আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। প্রথমবার চাকরির বয়স দুই বছর না হওয়ায় বদলির আবেদন মঞ্জুর হয়নি এবং দ্বিতীয়বার প্রতিস্থাপক দিয়ে বদলির সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু স্কুলটি লোহাগড়া উপজেলার শেষ সীমান্তে হওয়ায় প্রতিস্থাপক দেয়া সম্ভব না হওয়ায় শাহনারা পারভীনের বদলিও হচ্ছে না। যদি কেউ শাহানারা পারভীনকে বদলির বিষয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে তিনি খুবই উপকৃত হবে। যোগাযোগ তার স্বামী- মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোবাইল: ০১৯১২ ২৮৯৫৬৮।