ঢাকা ০৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




চৌকিদারের ছেলে আতিকের প্রতারণা: এক ভিজিটিং কার্ডেই ২১ পদবি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০১৯ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্টঃ
কখনো মানবাধিকার চেয়ারম্যান, কখনো সাংবাদিক সংগঠনের চেয়ারম্যান, আবার কখনো তদন্ত কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারক সিন্ডিকেট গড়ে সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ছোট শিবের চর গ্রামের গ্রাম পুলিশ হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান।

প্রতারণার একাধিক বিয়েসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে গেলেও এই প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না হওয়ায় প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতারাও।

প্রতারক আতিকুর নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে তাঁর পিতার নামের পাশে মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে সরকারি অনুমোদনহীন একটি মানবাধিকার সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রচার করেছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মানবাধিকার কমিশন, পুলিশ, র‌্যাবসহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে বেশকিছু গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আতিক চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে চট্রগ্রামের একাধিক গণমাধ্যমকর্মী অভিযোগগুলো করেন।

প্রতারক আতিকুর রহমানের সিন্ডিকেটে থাকা সরকারি অনুমোদনহীন ‘ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এবং জাতীয় সাংবাদিক ফাউন্ডেশন’ নামের দুটি সংগঠনের অনুসন্ধান শুরু হয়। এরপর একের পর এক অপকর্মের প্রমাণ পেয়ে যায় অনুসন্ধানী টিম।

আতিকুর রহমান সারাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলাসহ গ্রাম পর্যায়ে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও কমিটি গঠনের নামে প্রতারণা করেন। এছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে সাংবাদিক নিয়োগসহ সরকারি অনুমোদনহীন ওই দুটি সংগঠনের সদস্য আইডি কার্ড দেয়ার নামেও অবৈধভাবে টাকা নেন। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন মামলাসহ অপরাধ অনুসন্ধানের নামে করেও চলে আতিকুরের প্রতারণা।

প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে মানবাধিকার চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক সংগঠনের চেয়ারম্যান পরিচয়ে ফোন করে অনৈতিক সুবিধা নেয়ারও প্রমাণ মিলেছে সময়ের কণ্ঠস্বরের অনুসন্ধানী টিমের কাছে।

জানা যায়, আতিকুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ড রাজধানীসহ সারাদেশেই বিতরণ করেছেন। ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে মানবাধিকার চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, ডিজিটাল ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশনের চেয়ারম্যান, ক্রাইম পেট্রোলের নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী জাতীয়তা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সিনিয়র সাংবাদিকসহ ২১টি পদ-পদবী উল্লেখ করেছে। সেই ভিজিটিং কার্ড ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কোন সাংবাদিক তার বিরুদ্দে সংবাদ প্রকাশ করলে ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাতে শুরু করেন প্রতারক আতিক।

প্রতারক আতিকুর চক্রে রয়েছে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার আব্দুল মোমিন, লক্ষীপুরের কমল নগরের শাহরিয়ার কামাল, খুলনার শাহিনুরসহ অনেকেই। এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে উল্টো অপপ্রচার শুরু করে ওই সিন্ডিকেট।

শনিবার (৬ জুলাই) প্রতারক আতিকুর রহমানের নিজ গ্রামের ইউপি সদস্য আবুল কালাম মুঠোফোনে সময়ের বলেন, আতিকুরের পিতা একজন গ্রাম পুলিশ। সেতো মুক্তিযোদ্ধা নয়। আতিকুর নাকি মানবাধিকার চেয়ারম্যান, সরকারি সাংবাদিক। জেলার এসপি ডিসিকেও ফোন করে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে। আমাকেও ভয়ভীতি দেখায়। সাংবাদিকদের সত্য বলতেছি তাই ফোন করে হুমকিও দিচ্ছে। সে এলাকায় তিনটি বিয়ে করেছে। একবার মার খেয়ে এলাকা ছেড়েছে। এই প্রতারকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ইউপি সদস্য আবুল কালাম।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আতিকুর রহমানের বক্তব্য নিতে চাইলে থেকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




চৌকিদারের ছেলে আতিকের প্রতারণা: এক ভিজিটিং কার্ডেই ২১ পদবি!

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০১৯

স্পেশাল করেসপন্ডেন্টঃ
কখনো মানবাধিকার চেয়ারম্যান, কখনো সাংবাদিক সংগঠনের চেয়ারম্যান, আবার কখনো তদন্ত কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারক সিন্ডিকেট গড়ে সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ছোট শিবের চর গ্রামের গ্রাম পুলিশ হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান।

প্রতারণার একাধিক বিয়েসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে গেলেও এই প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না হওয়ায় প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতারাও।

প্রতারক আতিকুর নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে তাঁর পিতার নামের পাশে মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে সরকারি অনুমোদনহীন একটি মানবাধিকার সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রচার করেছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মানবাধিকার কমিশন, পুলিশ, র‌্যাবসহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে বেশকিছু গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আতিক চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে চট্রগ্রামের একাধিক গণমাধ্যমকর্মী অভিযোগগুলো করেন।

প্রতারক আতিকুর রহমানের সিন্ডিকেটে থাকা সরকারি অনুমোদনহীন ‘ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এবং জাতীয় সাংবাদিক ফাউন্ডেশন’ নামের দুটি সংগঠনের অনুসন্ধান শুরু হয়। এরপর একের পর এক অপকর্মের প্রমাণ পেয়ে যায় অনুসন্ধানী টিম।

আতিকুর রহমান সারাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলাসহ গ্রাম পর্যায়ে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও কমিটি গঠনের নামে প্রতারণা করেন। এছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে সাংবাদিক নিয়োগসহ সরকারি অনুমোদনহীন ওই দুটি সংগঠনের সদস্য আইডি কার্ড দেয়ার নামেও অবৈধভাবে টাকা নেন। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন মামলাসহ অপরাধ অনুসন্ধানের নামে করেও চলে আতিকুরের প্রতারণা।

প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে মানবাধিকার চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক সংগঠনের চেয়ারম্যান পরিচয়ে ফোন করে অনৈতিক সুবিধা নেয়ারও প্রমাণ মিলেছে সময়ের কণ্ঠস্বরের অনুসন্ধানী টিমের কাছে।

জানা যায়, আতিকুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ড রাজধানীসহ সারাদেশেই বিতরণ করেছেন। ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে মানবাধিকার চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, ডিজিটাল ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশনের চেয়ারম্যান, ক্রাইম পেট্রোলের নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী জাতীয়তা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সিনিয়র সাংবাদিকসহ ২১টি পদ-পদবী উল্লেখ করেছে। সেই ভিজিটিং কার্ড ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কোন সাংবাদিক তার বিরুদ্দে সংবাদ প্রকাশ করলে ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাতে শুরু করেন প্রতারক আতিক।

প্রতারক আতিকুর চক্রে রয়েছে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার আব্দুল মোমিন, লক্ষীপুরের কমল নগরের শাহরিয়ার কামাল, খুলনার শাহিনুরসহ অনেকেই। এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে উল্টো অপপ্রচার শুরু করে ওই সিন্ডিকেট।

শনিবার (৬ জুলাই) প্রতারক আতিকুর রহমানের নিজ গ্রামের ইউপি সদস্য আবুল কালাম মুঠোফোনে সময়ের বলেন, আতিকুরের পিতা একজন গ্রাম পুলিশ। সেতো মুক্তিযোদ্ধা নয়। আতিকুর নাকি মানবাধিকার চেয়ারম্যান, সরকারি সাংবাদিক। জেলার এসপি ডিসিকেও ফোন করে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে। আমাকেও ভয়ভীতি দেখায়। সাংবাদিকদের সত্য বলতেছি তাই ফোন করে হুমকিও দিচ্ছে। সে এলাকায় তিনটি বিয়ে করেছে। একবার মার খেয়ে এলাকা ছেড়েছে। এই প্রতারকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ইউপি সদস্য আবুল কালাম।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আতিকুর রহমানের বক্তব্য নিতে চাইলে থেকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।