ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo গণপূর্ত প্রধান প্রকৌশলীর গাড়ি চাপায় পিষ্ট সহকারী প্রকৌশলী -উত্তাল গণপূর্ত Logo শাবিপ্রবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ Logo সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাহিনুরের সীমাহীন সম্পদ ও অনিয়ম -পর্ব-০১ Logo তামাক সেবনের আলাদা কক্ষ বানালেন গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী: রয়েছে দুর্নীতির পাহাড়সম অভিযোগ! Logo দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি: কালবে সর্বোচ্চ পদ দখলে রেখেছে আগস্টিন! Logo আইআইএফসি ও মার্কটেল বাংলাদেশ’র মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর পরিদর্শনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী Logo সর্বজনীন পেনশন প্রত্যাহারে শাবি শিক্ষক সমিতি মৌন মিছিল ও কালোব্যাজ ধারণ Logo শাবিপ্রবিতে কুমিল্লা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত Logo শাবিপ্রবি কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভর্তির তিন ইউনিটের পরীক্ষা সম্পন্ন




তবু তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

ঢাকা জোনের ই/এম শাখা লুটপাটের আখড়া: নেতৃত্বে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী 

এইচ আর শফিক:
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩ ২৬৮ বার পড়া হয়েছে

এইচ আর শফিক: নির্বাহী প্রকৌশলী ও বর্তমান ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খানের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের ই/এম শাখা দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে আখড়া হিসেবে গড়ে উঠেছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এসব কর্মকর্তারা বিদেশে পাছার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির সিন্ডিকেটে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজুমদার ট্রেডিং।

দুর্নীতির চিত্র সূচনা চিত্রপট:
এই অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিসি ক্যামেরা না বসিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ গাড়ি চালকের বেতন বাবদ ৮৭ লক্ষ টাকা অপচয়, পর্যাপ্ত জনবল থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ নিয়ে তারা বহাল তবিয়তে চেয়ারে দুলছেন।

দুর্নীতির চিত্র-১
সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/ত্রম বিভাগ-৬-এর প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির চিত্র-২
অন্যদিকে গণপূর্ত কাঠের কারখানা বিভাগ উচ্চমান মূল্যে হস্তান্তর হওয়ার পরেও বছরে ব্যয় প্রায় ছয় কোটি টাকা। আর ই/এম বিভাগ-৮-এ দুটি গাড়ির বিপরীতে ৩১ জন চালকের পেছনে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ সালের অডিট রিপোর্টে এই অনিয়ম ধরা পড়েছে।
অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে- ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগ- ৬ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় ৩টি ১৬ চ্যানেল বিশিষ্ট ডিডিআর, ১২টি পিটিডোঙ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ৩টি ডিসপেণ্ড মনিটর, ১০টি ডে নাইট ভিশন ক্যামেরাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মালামাল চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ ও স্থাপনের জন্য পর পর দুদিনে একজন ঠিকাদারকে তিনটি কার্যাদেশ দেয়। উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর পত্র স্মারক নং- ৩৫০২ (তারিখ; ১৪-০৬-২০১৬) এবং স্মারক নং-৩৫০৭ ও ৩৫০৮ (তারিখ : ১৫- ০৬-২০১৬)- এর মাধ্যমে চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা | চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হলেও কাজগুলো সমাপ্ত করা হয়নি। ওই বছরের ২০ অক্টোবর অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা সাভার স্মৃতিসৌধে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া পর্যাপ্ত কারিগরি লোক থাকার পরও উৎপাদন শূন্য অথচ বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বলে অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা নিলেও কোনো কাজ করছে না। তা ছাড়া অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পর্যাপ্ত জনবল থাকার পরও দৈনিক মজুরি ও চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োজিত রয়েছে, এতে সরকারের আর্থিক অপচয় হচ্ছে বলে অডিট বিভাগ জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান বলেন, অডিট আপত্তির জবাব সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অডিট বিভাগকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুর্নীতির চিত্র-৩
এমন অপরাধ সিন্ডিকেটের নেটের গুরু গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান গ্রামের বাড়ীতে তার নিজ ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামে শতশত একর কৃষি জমি রয়েছে। সূত্র মতে জানা যায়, তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে তিনি ঢাকা শহরে ও তার আশে। পাশে একাধিক বাড়ী ও এ্যাপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক প্লট, আবাসিক প্লট ক্রয় করেছেন এবং বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের নামে বিরাট অংকের টাকা এফডিআর করে রেখেছেন। তাছাড়া, বিভিন্ন দেশে সে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে। যে কোন সময় বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, দুর্নীতিবাজ গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান এর ঘুষ, দুর্নীতি, অবৈধভাবে প্রদোন্নতি প্রাপ্ত, অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে টাকা পাচারের বিষয় দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে গণপূর্তির সুনাম ও মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করা হয়েছে কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




তবু তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

ঢাকা জোনের ই/এম শাখা লুটপাটের আখড়া: নেতৃত্বে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী 

আপডেট সময় : ০৮:২০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

এইচ আর শফিক: নির্বাহী প্রকৌশলী ও বর্তমান ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খানের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের ই/এম শাখা দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে আখড়া হিসেবে গড়ে উঠেছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এসব কর্মকর্তারা বিদেশে পাছার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির সিন্ডিকেটে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজুমদার ট্রেডিং।

দুর্নীতির চিত্র সূচনা চিত্রপট:
এই অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিসি ক্যামেরা না বসিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ গাড়ি চালকের বেতন বাবদ ৮৭ লক্ষ টাকা অপচয়, পর্যাপ্ত জনবল থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ নিয়ে তারা বহাল তবিয়তে চেয়ারে দুলছেন।

দুর্নীতির চিত্র-১
সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/ত্রম বিভাগ-৬-এর প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির চিত্র-২
অন্যদিকে গণপূর্ত কাঠের কারখানা বিভাগ উচ্চমান মূল্যে হস্তান্তর হওয়ার পরেও বছরে ব্যয় প্রায় ছয় কোটি টাকা। আর ই/এম বিভাগ-৮-এ দুটি গাড়ির বিপরীতে ৩১ জন চালকের পেছনে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ সালের অডিট রিপোর্টে এই অনিয়ম ধরা পড়েছে।
অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে- ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগ- ৬ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় ৩টি ১৬ চ্যানেল বিশিষ্ট ডিডিআর, ১২টি পিটিডোঙ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ৩টি ডিসপেণ্ড মনিটর, ১০টি ডে নাইট ভিশন ক্যামেরাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মালামাল চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ ও স্থাপনের জন্য পর পর দুদিনে একজন ঠিকাদারকে তিনটি কার্যাদেশ দেয়। উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর পত্র স্মারক নং- ৩৫০২ (তারিখ; ১৪-০৬-২০১৬) এবং স্মারক নং-৩৫০৭ ও ৩৫০৮ (তারিখ : ১৫- ০৬-২০১৬)- এর মাধ্যমে চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা | চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হলেও কাজগুলো সমাপ্ত করা হয়নি। ওই বছরের ২০ অক্টোবর অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা সাভার স্মৃতিসৌধে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া পর্যাপ্ত কারিগরি লোক থাকার পরও উৎপাদন শূন্য অথচ বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বলে অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা নিলেও কোনো কাজ করছে না। তা ছাড়া অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পর্যাপ্ত জনবল থাকার পরও দৈনিক মজুরি ও চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োজিত রয়েছে, এতে সরকারের আর্থিক অপচয় হচ্ছে বলে অডিট বিভাগ জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান বলেন, অডিট আপত্তির জবাব সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অডিট বিভাগকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুর্নীতির চিত্র-৩
এমন অপরাধ সিন্ডিকেটের নেটের গুরু গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান গ্রামের বাড়ীতে তার নিজ ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামে শতশত একর কৃষি জমি রয়েছে। সূত্র মতে জানা যায়, তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে তিনি ঢাকা শহরে ও তার আশে। পাশে একাধিক বাড়ী ও এ্যাপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক প্লট, আবাসিক প্লট ক্রয় করেছেন এবং বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের নামে বিরাট অংকের টাকা এফডিআর করে রেখেছেন। তাছাড়া, বিভিন্ন দেশে সে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে। যে কোন সময় বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, দুর্নীতিবাজ গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান এর ঘুষ, দুর্নীতি, অবৈধভাবে প্রদোন্নতি প্রাপ্ত, অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে টাকা পাচারের বিষয় দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে গণপূর্তির সুনাম ও মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করা হয়েছে কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

Loading