অনিরুদ্ধ পাল, ইন্ডিয়া ব্যুরো চিফ: আগামিকাল ভারতের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হতে চলেছে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। প্রস্তুতি এখন সম্পূর্ণ। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ১৫০ বছরের সময়কাল ধরেই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই ভবনে আগের ভবনের চেয়ে অনেক বেশি আসন সংখ্যা থাকছে।

ভারতের বর্তমান সংসদ ভবনটি ১৯২৬ সালে নির্মাণ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। উদ্বোধন করেছগিলেন ভাইসরয় লর্ড আরউইন। কিন্তু ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দিকে তাকিয়ে ভবিশ্যতে লোকসভার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই আরও বড় আকারে এই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।ভারতের সেন্ট্রাল ভিস্তা রিডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে, বর্তমানে নতুন দিল্লিতে একটি নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছে।
নতুন এই সংসদ ভবনটি ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৭৫০ মিটার দূরত্বে, সংসদ মার্গে অবস্থিত যা সেন্ট্রাল ভিস্তা অতিক্রম করে এবং বিজয় চক, ইন্ডিয়া গেট (অল ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল), ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল (ভারত), ভাইস প্রেসিডেন্ট হাউস দ্বারা বেষ্টিত। কাছেই আছে হায়দ্রাবাদ হাউস, সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বাসভবন, মন্ত্রী ভবন এবং ভারত সরকারের অন্যান্য প্রশাসনিক ইউনিট।
নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান ২০২০ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল।

কেমন হয়েছে ভারতের নতুন সংসদ ভবন- এই প্রসঙ্গে সেন্ট্রাল ভিস্তার নতুন নকশার দায়িত্বে থাকা স্থপতি বিমল প্যাটেলের মতে, নতুন কমপ্লেক্সটি একটি ষড়ভুজ আকৃতির । এটি বিদ্যমান কমপ্লেক্সের পাশে নির্মিত হবে এবং প্রায় আগেরটির সমান হবে।ভবনটি ১৫০ বছরেরও বেশি সময়কালের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ভূমিকম্প প্রতিরোধ মূলক ক্ষমতা রাখে। এখানে ভারতের বিভিন্ন অংশের স্থাপত্য শৈলীকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। লোকসভা এবং রাজ্যসভার জন্য প্রস্তাবিত চেম্বারগুলিতে বর্তমানের চেয়ে বেশি সদস্যদের জায়গা দেওয়ার জন্য বিশাল আসনের জায়গা থাকবে, কারণ ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে সীমাবদ্ধতার সাথে সাংসদের সংখ্যা বাড়তে পারে।

নতুন ভবনে লোকসভা কক্ষে ৮৮৮টি আসন এবং রাজ্যসভার কক্ষে ৩৮৪টি আসন থাকবে। বর্তমান সংসদ ভবনের মতো এতে কেন্দ্রীয় হল থাকবে না। একটি যৌথ অধিবেশনের ক্ষেত্রে লোকসভা চেম্বার ১,২৭২ সদস্যকে জায়গা দিতে সক্ষম হবে। বাকি ভবনে ৪ তলায় থাকবে মন্ত্রীদের অফিস ও কমিটি কক্ষ। সংসদ ভবনের ৩টি প্রবেশপথ রয়েছে, যার নাম- জ্ঞান দ্বার, শক্তি দ্বার এবং কর্মদ্বার।
নতুন ভবনে ‘সেঙ্গোল’ও থাকবে। এটি তামিলনাড়ুতে তৈরি একটি ঐতিহাসিক রাজদণ্ড এবং চোল সাম্রাজ্যের যুগের ‘সেঙ্গোল’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এক শাসকের কাছ থেকে অন্য শাসকের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছিল, যা ব্রিটিশরা প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য দিয়েছিল এবং এটি স্থাপন করা হবে।
বর্তমান সংসদ ভবনে লোকসভায় ৫৫০ জন এবং রাজ্যসভায় ২৫০ জন সদস্য থাকার ব্যবস্থা আছে। যাইহোক, নতুন সংসদ ভবনটি ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা মিটমাট করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে লোকসভায় 888 জন এবং রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন সদস্যের আসন রয়েছে। উপরন্তু, এটি উভয় হাউসের একযোগে বৈঠকের জন্য একটি যৌথ অধিবেশন চেম্বার রাখে, সহযোগিতা এবং দক্ষ শাসনকে উৎসাহিত করে।