ঢাকা ০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করলেন তিন অধ্যাপক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক; 

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করেছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের তিন অধ্যাপক। তারা এই ভাইরাসের বিভিন্ন প্রোটিনসমূহ পর্যবেক্ষণ করে তাদের প্রকৃতি ও তাদের নেতিবাচক দিকসমূহ নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করেন।

এরা হলেন- যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সাহিদ ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম।

প্রোটিনগুলো পর্যবেক্ষণ করে তারা দেখেন যে, এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা শ্বাস-নালীসহ মানবদেহের ক্ষতি করতে সক্ষম। এমনকি মানুষের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এইসব রাসায়নিক উপাদানসমূহ নিবিড়ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান করে তারা দেখতে পান ভাইরাসের মধ্যে কার্বোক্সিল (-COOH) এবং এমাইনো (-NH2) গ্রুপ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে তারা দেখতে পান, এই কার্বোক্সিল (-COOH) এবং এমাইনো (-COOH) গ্রপের উপাদানগুলোকে অকার্যকর ও নিস্ক্রিয় করতে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপের প্রভাব রয়েছে।

এই অবস্থায় তারা দেশীয় ও সহজলভ্য হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রুপের বিভিন্ন উৎস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন। এটা করতে গিয়ে তারা দেখেন যে, আমাদের দেশের বিভিন্ন উদ্ভিদের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপ রয়েছে। সেইসব উদ্ভিদকে প্রথমে এক্সট্র্যাক্ট করা হয়। তারা মনে করেন এটির সাথে আরও কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যুক্ত করে বিশ্বমানের করোনা নিরোধক ওষুধ তৈরি করা যেতে পারে। এই গবেষকদল তাদের গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। অচিরেই এটি করোনা নিরোধক ওষুধে রূপান্তর করতে পারবেন বলে তারা জানান।

তারা প্রাথমিকভাবে উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে লিকোরিজ বা যষ্টি মধুকে ব্যবহার করেছেন যা করোনা ভাইরাসের খারাপ প্রোটিনগুলোর ওপর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। এই গবেষণার খুঁটিনাটি বিভিন্ন দিক ও পরীক্ষাগারের বিভিন্ন পরীক্ষাসমূহ চলছে। তারা এখন থেকে ওষুধ তৈরির আগে পুষ্টিবিদদের মাধ্যমে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপের একটি তালিকা সরকার প্রকাশ করতে পারেন বলে মনে করছেন। এতে সাধারণ মানুষ এই খাদ্যগুলি তাদের খাদ্য তালিকায় রেখে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী।

এছাড়া ইলেক্ট্রো-ইস্পান পদ্ধতি ব্যবহার করে এই গবেষকরা এন্টি-ভাইরাল ন্যানো-মেমব্রেন তৈরি করেছেন। এই ধারণা চিকিৎসকসহ সাধারণ মানুষের এন্টি-ভাইরাল পোশাক, গ্লাভস ও মাক্সসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিতে সহায়তা করবে।

ইতোমধ্যে গবেষক দলটি তাদের গবেষণা ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নালে সাবমিট করেছেন। তারা আশাবাদী তাদের এই পরিবেশ ও মানব-বান্ধব আবিষ্কার আমাদের দেশসহ পৃথিবীর মানুষের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করবে। সাথে সাথে তারা গবেষণাটির বিভিন্ন দিক নিয়ে অন্যদেরও কাজ করার আহ্বান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করলেন তিন অধ্যাপক

আপডেট সময় : ১০:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০

অনলাইন ডেস্ক; 

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করেছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের তিন অধ্যাপক। তারা এই ভাইরাসের বিভিন্ন প্রোটিনসমূহ পর্যবেক্ষণ করে তাদের প্রকৃতি ও তাদের নেতিবাচক দিকসমূহ নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করেন।

এরা হলেন- যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সাহিদ ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম।

প্রোটিনগুলো পর্যবেক্ষণ করে তারা দেখেন যে, এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা শ্বাস-নালীসহ মানবদেহের ক্ষতি করতে সক্ষম। এমনকি মানুষের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এইসব রাসায়নিক উপাদানসমূহ নিবিড়ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান করে তারা দেখতে পান ভাইরাসের মধ্যে কার্বোক্সিল (-COOH) এবং এমাইনো (-NH2) গ্রুপ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে তারা দেখতে পান, এই কার্বোক্সিল (-COOH) এবং এমাইনো (-COOH) গ্রপের উপাদানগুলোকে অকার্যকর ও নিস্ক্রিয় করতে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপের প্রভাব রয়েছে।

এই অবস্থায় তারা দেশীয় ও সহজলভ্য হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রুপের বিভিন্ন উৎস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন। এটা করতে গিয়ে তারা দেখেন যে, আমাদের দেশের বিভিন্ন উদ্ভিদের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপ রয়েছে। সেইসব উদ্ভিদকে প্রথমে এক্সট্র্যাক্ট করা হয়। তারা মনে করেন এটির সাথে আরও কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যুক্ত করে বিশ্বমানের করোনা নিরোধক ওষুধ তৈরি করা যেতে পারে। এই গবেষকদল তাদের গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। অচিরেই এটি করোনা নিরোধক ওষুধে রূপান্তর করতে পারবেন বলে তারা জানান।

তারা প্রাথমিকভাবে উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে লিকোরিজ বা যষ্টি মধুকে ব্যবহার করেছেন যা করোনা ভাইরাসের খারাপ প্রোটিনগুলোর ওপর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। এই গবেষণার খুঁটিনাটি বিভিন্ন দিক ও পরীক্ষাগারের বিভিন্ন পরীক্ষাসমূহ চলছে। তারা এখন থেকে ওষুধ তৈরির আগে পুষ্টিবিদদের মাধ্যমে হাইড্রোক্সিল (-OH) গ্রপের একটি তালিকা সরকার প্রকাশ করতে পারেন বলে মনে করছেন। এতে সাধারণ মানুষ এই খাদ্যগুলি তাদের খাদ্য তালিকায় রেখে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী।

এছাড়া ইলেক্ট্রো-ইস্পান পদ্ধতি ব্যবহার করে এই গবেষকরা এন্টি-ভাইরাল ন্যানো-মেমব্রেন তৈরি করেছেন। এই ধারণা চিকিৎসকসহ সাধারণ মানুষের এন্টি-ভাইরাল পোশাক, গ্লাভস ও মাক্সসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিতে সহায়তা করবে।

ইতোমধ্যে গবেষক দলটি তাদের গবেষণা ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নালে সাবমিট করেছেন। তারা আশাবাদী তাদের এই পরিবেশ ও মানব-বান্ধব আবিষ্কার আমাদের দেশসহ পৃথিবীর মানুষের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করবে। সাথে সাথে তারা গবেষণাটির বিভিন্ন দিক নিয়ে অন্যদেরও কাজ করার আহ্বান জানান।