ঢাকা ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




ধর্ষকের সাজা কমাতে কোটি টাকার প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করলেন তরুণী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ৭৩ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রশ্নটা শুনে আদালতে উপস্থিত অনেকেই রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। শাস্তির বদলে ধর্ষক যদি মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেন? তাতে কি রাজি হবেন? ধর্ষণের শিকার তরুণীকে এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিচারক। তবে সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি তরুণী। ফিরিয়ে দিয়েছেন দেড় লাখ ডলারের (বাংলাদেশি প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ টাকা) ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব।

বিচারককে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না, ওই ব্যক্তি যা করেছে তা অর্থ দিয়ে পুষিয়ে দেয়া যাবে।’
বিচার চলছিল গত বৃহস্পতিবার, আমেরিকার লুইজিয়ানার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির আদালতে। কাঠগড়ায় ছিলেন ৪৫ বছর বয়সী সেড্রিক হিল।

২০০৩ সালে ১৫ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। সেই কিশোরীর বয়স এখন ৩১ বছর। তার কাছেই প্রশ্নটা রেখেছিলেন স্টেট ডিস্ট্রিক্ট জাজ ব্রুস বেনেট। ১২ বছরের কারাবাস কমানোর জন্য সেড্রিক যদি তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেড় লাখ ডলার দেন, তা কি নেবেন তিনি? সঙ্গে সঙ্গে সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন ওই যুবতী। তিনি চান, ধর্ষণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তার জীবনের যে ১৬ বছর কেড়ে নিয়েছে, সে সময়টাই জেলে কাটাক সেড্রিক।

ধর্ষণের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো অভিজ্ঞতাটাই যেন একটা সিনেমার মতো, একটা ভয়ের সিনেমা।’ ধর্ষকের কড়া শাস্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। সে কথা জানিয়ে ওই যুবতী বলেন, ‘জীবনের অর্ধেক সময়েরও বেশি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমি ক্লান্ত। আমি ক্ষুব্ধ। এ ধরনের অভিজ্ঞতায় একজন মানুষের জীবনকে ক্ষয় ধরিয়ে যায়। আমার অস্তিত্বও ক্ষয়ে গিয়েছে। এখনও বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি, আমি কে!’

লুইজিয়ানার ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৪ সালে সেড্রিক হিলের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে পুলিশ। ২০০৩ সালের ওই ধর্ষণের প্রমাণ হিসাবে তার ডিএনএ মিলে যায় গত বছর। এরপর গত বছরের আগস্টে তাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।

তবে সেড্রিককে ১২ বছরের কারাবাসের সাজা দিলেও সেই সঙ্গে ওই প্রস্তাবও দিয়ে বসেন বিচারক ব্রুস বেনেট। বিচারকের এই আচরণে একেবারেই হতবাক ইস্ট ব্যাটন রুজ ডিস্ট্রিক্টের আইনজীবী হিসার মুর। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই অদ্ভুত আচরণ। জানি না, বিচারক এ কথা কেন বললেন। আমার মনে হয়, হয়তো ওই যুবতীকে সাহায্য করার জন্য এমনটা করেছেন তিনি।’

ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে বিচারক ব্রুস বেনেটে অবশ্য জানিয়েছেন, ধর্ষণের সাজা কাটিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাবে সেড্রিক, এটা বোধহয় ঠিক নয়। এই অপরাধের ফলে যে মানসিক আঘাত পেয়েছেন ওই যুবতী, তার পরিবর্তে কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। অন্তত অর্থনৈতিক ভাবে যদি কিছুটা সুরাহা হয়, সে চেষ্টাই করেছেন তিনি। আনন্দবাজার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ধর্ষকের সাজা কমাতে কোটি টাকার প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করলেন তরুণী

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রশ্নটা শুনে আদালতে উপস্থিত অনেকেই রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। শাস্তির বদলে ধর্ষক যদি মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেন? তাতে কি রাজি হবেন? ধর্ষণের শিকার তরুণীকে এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিচারক। তবে সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি তরুণী। ফিরিয়ে দিয়েছেন দেড় লাখ ডলারের (বাংলাদেশি প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ টাকা) ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব।

বিচারককে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না, ওই ব্যক্তি যা করেছে তা অর্থ দিয়ে পুষিয়ে দেয়া যাবে।’
বিচার চলছিল গত বৃহস্পতিবার, আমেরিকার লুইজিয়ানার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির আদালতে। কাঠগড়ায় ছিলেন ৪৫ বছর বয়সী সেড্রিক হিল।

২০০৩ সালে ১৫ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। সেই কিশোরীর বয়স এখন ৩১ বছর। তার কাছেই প্রশ্নটা রেখেছিলেন স্টেট ডিস্ট্রিক্ট জাজ ব্রুস বেনেট। ১২ বছরের কারাবাস কমানোর জন্য সেড্রিক যদি তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেড় লাখ ডলার দেন, তা কি নেবেন তিনি? সঙ্গে সঙ্গে সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন ওই যুবতী। তিনি চান, ধর্ষণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তার জীবনের যে ১৬ বছর কেড়ে নিয়েছে, সে সময়টাই জেলে কাটাক সেড্রিক।

ধর্ষণের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো অভিজ্ঞতাটাই যেন একটা সিনেমার মতো, একটা ভয়ের সিনেমা।’ ধর্ষকের কড়া শাস্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। সে কথা জানিয়ে ওই যুবতী বলেন, ‘জীবনের অর্ধেক সময়েরও বেশি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমি ক্লান্ত। আমি ক্ষুব্ধ। এ ধরনের অভিজ্ঞতায় একজন মানুষের জীবনকে ক্ষয় ধরিয়ে যায়। আমার অস্তিত্বও ক্ষয়ে গিয়েছে। এখনও বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি, আমি কে!’

লুইজিয়ানার ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৪ সালে সেড্রিক হিলের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে পুলিশ। ২০০৩ সালের ওই ধর্ষণের প্রমাণ হিসাবে তার ডিএনএ মিলে যায় গত বছর। এরপর গত বছরের আগস্টে তাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।

তবে সেড্রিককে ১২ বছরের কারাবাসের সাজা দিলেও সেই সঙ্গে ওই প্রস্তাবও দিয়ে বসেন বিচারক ব্রুস বেনেট। বিচারকের এই আচরণে একেবারেই হতবাক ইস্ট ব্যাটন রুজ ডিস্ট্রিক্টের আইনজীবী হিসার মুর। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই অদ্ভুত আচরণ। জানি না, বিচারক এ কথা কেন বললেন। আমার মনে হয়, হয়তো ওই যুবতীকে সাহায্য করার জন্য এমনটা করেছেন তিনি।’

ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে বিচারক ব্রুস বেনেটে অবশ্য জানিয়েছেন, ধর্ষণের সাজা কাটিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাবে সেড্রিক, এটা বোধহয় ঠিক নয়। এই অপরাধের ফলে যে মানসিক আঘাত পেয়েছেন ওই যুবতী, তার পরিবর্তে কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। অন্তত অর্থনৈতিক ভাবে যদি কিছুটা সুরাহা হয়, সে চেষ্টাই করেছেন তিনি। আনন্দবাজার।