ঢাকা ১০:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




নজরদারিতে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯৬ বার পড়া হয়েছে
দল ও সরকারের ক্লিন ইমেজ তৈরি করতে অব্যাহত থাকবে অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিতর্কিত অনেক সাবেক ও বর্তমান এমপি-মন্ত্রী, বিভিন্ন স্তরের নেতা ও ২০ থেকে ৫০ বিঘার ওপর নতুন বাড়ি বানানো উপজেলা চেয়ারম্যানরা রয়েছেন নজরদারিতে। এর মধ্যে একটি গ্রুপকে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক আগেই তালিকাভুক্ত করে রেখেছে। কয়েকজনের বিষয়ে তদন্তও করে রেখেছে দুদক। এবার এই বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে রয়েছে সরকার। দল ও সরকারকে ক্লিন করতে অভিযান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটেরাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধেও উদ্যোগী হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে, দুর্নীতিবাজ ও বেআইনি অর্থলিপ্সুদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যার এ অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে তা সারা দেশেই চলবে। শুধু যুবলীগ বা ছাত্রলীগের প্রশ্ন নয়; যেখানেই দুর্নীতি-অনিয়ম হবে, আওয়ামী লীগেরও যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। যাদের কারণে ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বাইরে অন্যায়-অনিয়ম ও দুর্নীতিতে প্রশাসন বা রাজনীতির কেউ যদি মদদ দিয়ে থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো গডফাদারই ছাড় পাবে না। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে। আমাদের দলের বেশ কিছু নেতা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। তবে এ সংখ্যা কত, তা আপাতত বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমাদের মূল দল ও অঙ্গসংগঠনের যেসব নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, তারা এখন নজরদারিতে আছেন। অপরাধী যে-ই হোক, পার পাবে না। যারা পলাতক আছেন, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। যত দিন পর্যন্ত দুর্বৃত্তায়ন, মাদক বন্ধ হবে না, তত দিন এ অভিযান চলবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। গতকাল সিলেটে এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাসিনোর টাকা যাদের পকেটে গেছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, অন্যান্য দলের কারও পকেটে গেলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্রমতে, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে কারণে তিনি কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা ও নিজস্ব জরিপ চালিয়েছেন সারা দেশে। দলের এমপি-মন্ত্রী, সাবেক এমপি-মন্ত্রী এবং নেতাদের আমলনামা তৈরি করেছেন। এরপর শুরু করেছেন নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযান। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাজপথে বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলা করতে হচ্ছে না বলে এখন সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নজর প্রধানমন্ত্রীর। সে কারণে নিজ দলের অপরাধীদের শাস্তি দিতে শুরু করেছেন। এরপর তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদেরও ধরবেন। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক গণভবনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অভিযান শুরু হওয়ার পর বিতর্কিত নেতারা দৌড়ের ওপর রয়েছেন। কেউ কেউ গণভবনে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। জানার চেষ্টা করছেন এ অভিযানে তাদের নাম আছে কিনা। আবার কেউ কেউ চিকিৎসার নামে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। অভিযান বন্ধ না হলে তারা দেশে ফিরবেন না বলেও জানা গেছে। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে থেকেই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। টেলিফোনে কথা বলছেন অভিযান-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। অভিযান যে চলতে থাকবে সে কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদকও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




নজরদারিতে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা

আপডেট সময় : ১১:২৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
দল ও সরকারের ক্লিন ইমেজ তৈরি করতে অব্যাহত থাকবে অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিতর্কিত অনেক সাবেক ও বর্তমান এমপি-মন্ত্রী, বিভিন্ন স্তরের নেতা ও ২০ থেকে ৫০ বিঘার ওপর নতুন বাড়ি বানানো উপজেলা চেয়ারম্যানরা রয়েছেন নজরদারিতে। এর মধ্যে একটি গ্রুপকে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক আগেই তালিকাভুক্ত করে রেখেছে। কয়েকজনের বিষয়ে তদন্তও করে রেখেছে দুদক। এবার এই বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে রয়েছে সরকার। দল ও সরকারকে ক্লিন করতে অভিযান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটেরাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধেও উদ্যোগী হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে, দুর্নীতিবাজ ও বেআইনি অর্থলিপ্সুদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে সাধারণ মানুষের মধ্যে ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যার এ অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে তা সারা দেশেই চলবে। শুধু যুবলীগ বা ছাত্রলীগের প্রশ্ন নয়; যেখানেই দুর্নীতি-অনিয়ম হবে, আওয়ামী লীগেরও যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে, তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। যাদের কারণে ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বাইরে অন্যায়-অনিয়ম ও দুর্নীতিতে প্রশাসন বা রাজনীতির কেউ যদি মদদ দিয়ে থাকে, তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো গডফাদারই ছাড় পাবে না। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে। আমাদের দলের বেশ কিছু নেতা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। তবে এ সংখ্যা কত, তা আপাতত বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমাদের মূল দল ও অঙ্গসংগঠনের যেসব নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, তারা এখন নজরদারিতে আছেন। অপরাধী যে-ই হোক, পার পাবে না। যারা পলাতক আছেন, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। যত দিন পর্যন্ত দুর্বৃত্তায়ন, মাদক বন্ধ হবে না, তত দিন এ অভিযান চলবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। গতকাল সিলেটে এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাসিনোর টাকা যাদের পকেটে গেছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, অন্যান্য দলের কারও পকেটে গেলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্রমতে, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে কারণে তিনি কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা ও নিজস্ব জরিপ চালিয়েছেন সারা দেশে। দলের এমপি-মন্ত্রী, সাবেক এমপি-মন্ত্রী এবং নেতাদের আমলনামা তৈরি করেছেন। এরপর শুরু করেছেন নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযান। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাজপথে বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলা করতে হচ্ছে না বলে এখন সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নজর প্রধানমন্ত্রীর। সে কারণে নিজ দলের অপরাধীদের শাস্তি দিতে শুরু করেছেন। এরপর তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদেরও ধরবেন। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক গণভবনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অভিযান শুরু হওয়ার পর বিতর্কিত নেতারা দৌড়ের ওপর রয়েছেন। কেউ কেউ গণভবনে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। জানার চেষ্টা করছেন এ অভিযানে তাদের নাম আছে কিনা। আবার কেউ কেউ চিকিৎসার নামে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। অভিযান বন্ধ না হলে তারা দেশে ফিরবেন না বলেও জানা গেছে। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে থেকেই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। টেলিফোনে কথা বলছেন অভিযান-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। অভিযান যে চলতে থাকবে সে কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদকও।