ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo পরিচালকের ওপর হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্ষোভ Logo ট্রাইব্যুনালে বিএনপির অভিযোগ, আন্দোলনে শহীদ ৮৪৮ নেতাকর্মীর তালিকা জমা Logo দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা Logo বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির অভিযোগ: প্রশাসন নীরব Logo সাংবাদিক সন্তানদের চেক প্রদান নিয়ে ডিসির অশোভন কান্ড Logo প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্স বাণিজ্য করে পরিবেশ অধিদপ্তরের জহিরুল কোটিপতি Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্সের নামে পরিবেশ অধিদপ্তরের আবুল কালামের কোটি টাকার বাণিজ্য Logo বেসরকারি টিভি চ্যানেল এস’ সুজিত চক্রবর্তী গং কর্তৃক সাংবাদিকদের হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo ফ্যাসিস্টের দোসর বিটিভির প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি! পর্ব ১




ভিক্ষার টাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯ ১০৫ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
পঞ্চম ধামে কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত এসএম শহিদুল্লাহ সবুজ বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকায় তার নামে কোনো জমিজমা, ঘর-বাড়ি কিছুই নেই।

বিভিন্ন শ্রেণি পেশার স্থানীয় ভোটারসহ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শুভাকাঙ্ক্ষীরা অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে নির্বাচনী খরচ চালিয়েছেন। এমনকি ভিক্ষুকরা প্রতিদিন ভিক্ষা করে যা আনতো তাও তুলে দিতেন শহিদুল্লাহ সবুজের হাতে।

এর আগে তিনি বিএনপি ও আওয়াম লীগ প্রার্থীদের হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেবার নির্বাচিত হয়ে সামান্য জায়গা-জমি যা ছিল তা বিক্রি করে মানুষের সেবায় খরচ করেছেন।

এখন তিনি সহায় সম্বলহীন। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন সিরাজগঞ্জ শহরের হোসেনপুর বাগানবাড়ি মহল্লায়। আদি বাড়ি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়নের বড়ধুল গ্রামে।

বুধবার সকালে সরেজমিনে কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

তারা জানান, সহায় সম্বল বলতে শহিদুল্লাহ সবুজের কিছুই নেই। এলাকায় বাপ-দাদার কিছু জমিজমা ছিল। জনসেবা করতে গিয়ে সেগুলোও বিক্রি করে ফেলেছেন। দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কিন্তু কোনোবারই তার টাকা ছিল না। এলাকার লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা বা চাল তুলে তার নির্বাচনী খরচ চালিয়েছেন।

বড়ধুল গ্রামের সাবেক মেম্বর ইসমাইল হোসেন (৭০) জানান, তার তো ভিটে বাড়ি কিছুই নেই। তিনি সিরাজগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঠিকমতো বাড়ি ভাড়াও দিতে পারেন না।

কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি জনগণের টাকায় চলেন। নির্দিষ্ট কোনো ইনকাম নেই। বাড়িওয়ালা জানে তার কাছে বাড়ি ভাড়া দেয়ার মত তেমন সামর্থ নেই। কিন্তু সৎ ও নির্লোভ রাজনীতিক হওয়ায় সবাই তাকে ছাড় দিয়ে থাকেন।

একই গ্রামের আবদুল আউয়াল জানান, শহিদুল্লাহ সবুজ লোভ লালসার উর্ধ্বে। এর আগে তিনি ৫ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপরও কোনো বাড়িঘর করতে পারেননি। তার বাড়িই ছিল উপজেলা অফিস। সেই জন্যই দলমত নির্বিশেষে উপজেলার সব জনগণ তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম শহিদুল্লাহ সবুজকে বলেন, বাড়ি দিয়ে কী হবে। আমাকে খোঁজার জন্য জনগণকে বাড়িতে যেতে হয় না। আমিই তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেই।

তিনি আরও বলেন, আমার অফিসে কোনো পর্দা থাকবে না। আমি ভিক্ষুকের দেয়া ৭২ টাকা আর ৫ কেজি চাউল দিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছিলাম। এছাড়া আমার এলাকার মানুষসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রচুর সহযোগিতা করেছেন। আমি শুধু ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, টাকার চিন্তা করেছে জনগণ। এটা নিয়ে আমাকে কখনো ভাবতে হয়নি। জনগণের ভালোবাস ছাড়া আমার অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভিক্ষার টাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান!

আপডেট সময় : ০৮:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
পঞ্চম ধামে কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত এসএম শহিদুল্লাহ সবুজ বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকায় তার নামে কোনো জমিজমা, ঘর-বাড়ি কিছুই নেই।

বিভিন্ন শ্রেণি পেশার স্থানীয় ভোটারসহ দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শুভাকাঙ্ক্ষীরা অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে নির্বাচনী খরচ চালিয়েছেন। এমনকি ভিক্ষুকরা প্রতিদিন ভিক্ষা করে যা আনতো তাও তুলে দিতেন শহিদুল্লাহ সবুজের হাতে।

এর আগে তিনি বিএনপি ও আওয়াম লীগ প্রার্থীদের হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেবার নির্বাচিত হয়ে সামান্য জায়গা-জমি যা ছিল তা বিক্রি করে মানুষের সেবায় খরচ করেছেন।

এখন তিনি সহায় সম্বলহীন। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন সিরাজগঞ্জ শহরের হোসেনপুর বাগানবাড়ি মহল্লায়। আদি বাড়ি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়নের বড়ধুল গ্রামে।

বুধবার সকালে সরেজমিনে কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

তারা জানান, সহায় সম্বল বলতে শহিদুল্লাহ সবুজের কিছুই নেই। এলাকায় বাপ-দাদার কিছু জমিজমা ছিল। জনসেবা করতে গিয়ে সেগুলোও বিক্রি করে ফেলেছেন। দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কিন্তু কোনোবারই তার টাকা ছিল না। এলাকার লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা বা চাল তুলে তার নির্বাচনী খরচ চালিয়েছেন।

বড়ধুল গ্রামের সাবেক মেম্বর ইসমাইল হোসেন (৭০) জানান, তার তো ভিটে বাড়ি কিছুই নেই। তিনি সিরাজগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঠিকমতো বাড়ি ভাড়াও দিতে পারেন না।

কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি জনগণের টাকায় চলেন। নির্দিষ্ট কোনো ইনকাম নেই। বাড়িওয়ালা জানে তার কাছে বাড়ি ভাড়া দেয়ার মত তেমন সামর্থ নেই। কিন্তু সৎ ও নির্লোভ রাজনীতিক হওয়ায় সবাই তাকে ছাড় দিয়ে থাকেন।

একই গ্রামের আবদুল আউয়াল জানান, শহিদুল্লাহ সবুজ লোভ লালসার উর্ধ্বে। এর আগে তিনি ৫ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপরও কোনো বাড়িঘর করতে পারেননি। তার বাড়িই ছিল উপজেলা অফিস। সেই জন্যই দলমত নির্বিশেষে উপজেলার সব জনগণ তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম শহিদুল্লাহ সবুজকে বলেন, বাড়ি দিয়ে কী হবে। আমাকে খোঁজার জন্য জনগণকে বাড়িতে যেতে হয় না। আমিই তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেই।

তিনি আরও বলেন, আমার অফিসে কোনো পর্দা থাকবে না। আমি ভিক্ষুকের দেয়া ৭২ টাকা আর ৫ কেজি চাউল দিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছিলাম। এছাড়া আমার এলাকার মানুষসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রচুর সহযোগিতা করেছেন। আমি শুধু ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, টাকার চিন্তা করেছে জনগণ। এটা নিয়ে আমাকে কখনো ভাবতে হয়নি। জনগণের ভালোবাস ছাড়া আমার অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।