ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




হুহু পানিতে হঠাৎ বন্যায় প্লাবিত কমলগঞ্জ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯ ৫৭ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি;
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নাজাতকোনা এলাকায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরনো ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকছে হুহু করে। এরইমধ্যে দুই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও গ্রাম।

এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার। হুমকির মুখে পড়েছে এসব পরিবারের অন্তত ২০টি বসতঘর।

কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর আদমপুর ইউনিয়নের নাজাতকোনা ও পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে কয়েক বছর ধরে বাঁধ ভাঙা থাকায় এই অবস্থা দেখা দিয়েছে। তবে বাঁধ মেরামতে স্থানীয়দের অসহযোগিতাকে দায়ী করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার দুপুর থেকে ধলাই নদীর পানি বেড়ে ঘোড়ামারা গ্রাম এলাকায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুরে নাজাতকোনা এলাকায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরনো একটি বড় ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে গ্রাম।

নাজাতকোনা গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদ, নুরুজ্জামান মিয়া, তমিজ উদ্দীন, রমিজ উদ্দীন, মন্নাফ মিয়া, জমশেদ মিয়া, মর্জিনা বিবি, আবেদা বেগম, আব্দুল গফুর, সমেদ মিয়া, ওয়েছ মিয়া, হেলাল উদ্দীন, সাজেদা বেগম, মাজিদা বেগমসহ আরও কয়েকজন গ্রামবাসীর বসতঘর নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। পানির তোড়ে ঘোড়ামারা গ্রামের এলজিইডি’র সড়কটি দুই-তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরী থিয়েটার ভবন কমপ্লেক্সে।

পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে নদীর গ্রাস হওয়া বাড়িঘর ঘুরে দেখা যায়, নদীর স্রোতে হোসেন আলীসহ গ্রামের ১৫টি ঘর নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। আরও পাঁচটি বসতভিটা রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। হোসেন আলীর পাকা ঘরের অর্ধেক অংশ নদীতে চলে গেছে। ঘরের অবশিষ্ট অংশে বাঁশের বেড়া দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন পরিবারের সদস্যরা।

ঘোড়ামারা গ্রামের মজিদা বেগম, নুরুজ্জামান, সাজেদা বেগম ও আব্দুল গফুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বন্যার আগে যদি নদীর বাঁধ মেরামত করা হতো তাহলে এই ক্ষতি হতো না। কিছুদিন আগে তাঁদের ঘরগুলো নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন তাঁদের থাকার জায়গা নেই। এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন পর্যন্ত তারা কোনও সহযোগিতা পাননি।

ঘোড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার জ্যোতি সিন্হা বলেন, আকম্মিক বন্যায় ফের প্লাবিত হয়েছে ঘোড়ামারা গ্রাম। গ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ধলাই নদীতে গতবার যে বিরাট ভাঙন হয়েছিল, একটি মাত্র পরিবারের বাঁধায় ওই বাঁধটি মেরামত করা হয়নি। মাত্র বর্ষা মৌসুম শুরু। তিনি বাঁধটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছি।

আদমপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দীন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর বাঁধটি মেরামত করতে পারেনি এলাকার কিছু মানুষের বাধার কারণে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘স্থানীয়দের আপত্তির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি। এখনও যদি জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে কাজ করা সম্ভব হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




হুহু পানিতে হঠাৎ বন্যায় প্লাবিত কমলগঞ্জ

আপডেট সময় : ১১:০৮:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি;
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নাজাতকোনা এলাকায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরনো ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকছে হুহু করে। এরইমধ্যে দুই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও গ্রাম।

এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার। হুমকির মুখে পড়েছে এসব পরিবারের অন্তত ২০টি বসতঘর।

কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর আদমপুর ইউনিয়নের নাজাতকোনা ও পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে কয়েক বছর ধরে বাঁধ ভাঙা থাকায় এই অবস্থা দেখা দিয়েছে। তবে বাঁধ মেরামতে স্থানীয়দের অসহযোগিতাকে দায়ী করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার দুপুর থেকে ধলাই নদীর পানি বেড়ে ঘোড়ামারা গ্রাম এলাকায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুরে নাজাতকোনা এলাকায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরনো একটি বড় ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে গ্রাম।

নাজাতকোনা গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদ, নুরুজ্জামান মিয়া, তমিজ উদ্দীন, রমিজ উদ্দীন, মন্নাফ মিয়া, জমশেদ মিয়া, মর্জিনা বিবি, আবেদা বেগম, আব্দুল গফুর, সমেদ মিয়া, ওয়েছ মিয়া, হেলাল উদ্দীন, সাজেদা বেগম, মাজিদা বেগমসহ আরও কয়েকজন গ্রামবাসীর বসতঘর নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। পানির তোড়ে ঘোড়ামারা গ্রামের এলজিইডি’র সড়কটি দুই-তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরী থিয়েটার ভবন কমপ্লেক্সে।

পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে নদীর গ্রাস হওয়া বাড়িঘর ঘুরে দেখা যায়, নদীর স্রোতে হোসেন আলীসহ গ্রামের ১৫টি ঘর নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। আরও পাঁচটি বসতভিটা রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। হোসেন আলীর পাকা ঘরের অর্ধেক অংশ নদীতে চলে গেছে। ঘরের অবশিষ্ট অংশে বাঁশের বেড়া দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন পরিবারের সদস্যরা।

ঘোড়ামারা গ্রামের মজিদা বেগম, নুরুজ্জামান, সাজেদা বেগম ও আব্দুল গফুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বন্যার আগে যদি নদীর বাঁধ মেরামত করা হতো তাহলে এই ক্ষতি হতো না। কিছুদিন আগে তাঁদের ঘরগুলো নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন তাঁদের থাকার জায়গা নেই। এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন পর্যন্ত তারা কোনও সহযোগিতা পাননি।

ঘোড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার জ্যোতি সিন্হা বলেন, আকম্মিক বন্যায় ফের প্লাবিত হয়েছে ঘোড়ামারা গ্রাম। গ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ধলাই নদীতে গতবার যে বিরাট ভাঙন হয়েছিল, একটি মাত্র পরিবারের বাঁধায় ওই বাঁধটি মেরামত করা হয়নি। মাত্র বর্ষা মৌসুম শুরু। তিনি বাঁধটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছি।

আদমপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দীন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর বাঁধটি মেরামত করতে পারেনি এলাকার কিছু মানুষের বাধার কারণে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘স্থানীয়দের আপত্তির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি। এখনও যদি জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে কাজ করা সম্ভব হবে।’