বগুড়ায় ‘গোলাগুলিতে’ চরমপন্থী দলের আঞ্চলিক নেতা নিহত
- আপডেট সময় : ১০:৫৭:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মে ২০১৯ ৯৪ বার পড়া হয়েছে
বগুড়া ব্যুরো;
বগুড়ার শেরপুরে আবারও নিজেদের মধ্যে ‘গোলাগুলিতে’ শফিউর রহমান জ্যোতি (৫৩) নামে চরমপন্থী দলের এক আঞ্চলিক নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শেরপুর-ধুনট সড়কের বোয়ালকান্দি ব্রিজের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর বাজার সংলগ্ন ব্রিজের কাছে দু’দল চরমপন্থীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ লিটন (৩৬) ও আফসার (৪৫) নামে দুজন নিহত হন। লিটনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এবং আফসার একই জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার রাতে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত শফিউর রহমান জ্যোতি ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের প্রতাপখাদুলি গ্রামের মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ানশুটার গান, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা এবং জ্যোতির ব্যবহৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতি খুব অল্প বয়সে চরমপন্থী দলের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা হিসেবে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে বিচরণ করতেন। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলাসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৮৭ সালে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা লুটের একটি মামলায় তার ৮৪ বছরের সাজা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, শেরপুর উপজেলার বোয়ালকান্দি এলাকায় শেরপুর-ধুনট সড়কে ব্রিজের কাছে গোলাগুলি হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তিনি এবং শেরপুর থাার ওসি হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় এবং একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানোর সময় নাম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নিজের নাম জ্যোতি এবং বাড়ি ধুনট বলে জানান। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জ্যোতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, পুলিশের ক্রিমিনাল ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) খুঁজে নিহত জ্যোতির নামে ১৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাঁচটিই হত্যা মামলা। শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর চরমপন্থীরা গত ৮ এপ্রিল রাতে বগুড়ার শেরপুরে টহল পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নিজেদের তৎপরতার কথা জানান দেয়। ৯ এপ্রিল পাবনায় চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণের বিরোধিতা করে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা ওই দিন রাতে শেরপুরের ভবানীপুর বাজার এলাকায় সর্বহারা পার্টির পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। এ সময় টহল পুলিশ সেখানে গেলে তারা গুলিবর্ষণ করে। চরমপন্থীদের গুলিতে টহল দলের সদস্য শেরপুর থানার এএসআই নান্নু মিয়া আহত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ সেদিন ওই এলাকা থেকে চরমপন্থীদের লাগানো বেশকিছু পোস্টার এবং ‘গণযুদ্ধ’ নামে একটি পত্রিকাও উদ্ধার করে।