ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




সাংবাদিককে প্রেসক্লাবের নিবন্ধন দেখাতে বললেন ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার মাহতাব উদ্দিন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ অনলাইন ডেস্ক: রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি এবং লকডাউনের সার্বিক পরিস্থিতি মোবাইলে ভিডিও করার দায়ে ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদকের মোবাইল কেড়ে নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আ. স. ম. মাহতাব উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় মিরপুর-১ নাম্বর ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে এই প্রতিবেদকের মোবাইল কেড়ে নেন মিরপুর জোনের ডিসি।মিরপুর ১ নাম্বার থেকে ভিডিও ও ছবি তোলার জন্য ঢাকা পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার সাইদ রিপনের মোবাইল নিয়ে গেছেন মিরপুর জোনের ডিসি। বলেছেন প্রেস ক্লাবের নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে মোবাইল ফেরত নিতে।

মোবাইলে ভিডিও ধারণের সময় পুলিশের কাছাকাছি গেলে হঠাৎ ডিসি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এই আপনি কে? এমন প্রশ্নের জবাবে গলায় ঝুলানো অফিসের আইডি কার্ড দেখালে, তিনি কার্ড ধরে বলেন, কিসের ঢাকা পোস্টের সাংবাদিক। এই কথা বলার পরই মোবাইল কেড়ে নিয়ে প্রতিবেদকের মোবাইলেই ডিসি নিজেই ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। ডিসি ভিডিও করার সময় এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনি কিসের সাংবাদিক, কিসের ভিডিও করছেন বলেন। ঢাকা পোস্টের কি প্রেসক্লাবের নিবন্ধন আছে? প্রতিবেদককে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই পুলিশের এই কর্মকর্তা নিজের গাড়িতে উঠে যান। গাড়িতে উঠে বলেন, প্রেসক্লাবে নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে আমার অফিস থেকে মোবাইল নিয়ে যাবেন।’
এই ঘটনার পর ডিসির সাথে ঢাকা পোস্ট থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনাদের এই প্রতিবেদক আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছে। কিন্তু মোবাইল দেওয়ার বিষয়ে তিনি অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর হস্তক্ষেপে ডিসি মোবাইল দিতে বাধ্য হোন।
মোবাইল আনতে ডিসির অফিসে গেলে তিনি জানান, এই প্রতিবেদকের সাথে সেভাবে কথা বলার সুযোগ হয়নি। তাই খারাপ আচরণ করার সুযোগ ছিল না। তাহলে কেন মোবাইল নিলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে এই সাংবাদিক বাধা দিয়েছেন। উনি আমাদের কাছাকাছি গিয়ে ভিডিও করেছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ডিএমপির মিরপুর জোনের ডিসি একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি এটা কেন করলেন বুঝতে পারছি না। তাছাড়া সাংবাদিকদের আটকে রাখা বা মোবাইল নেওয়ার কোন নির্দেশনা ডিএমপি বা সরকার দেয়নি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘মুভমেন্ট পাস’ উদ্বোধনের সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের সড়কে চলাফেরার জন্য ‘মুভমেন্ট পাস’ প্রয়োজন হবে না। তবে অন্য পেশার যারা প্রয়োজনে বাইরে বের হতে চান এই পাস তাদের নিতে হবে।

আইজিপি বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপনে সাংবাদিকসহ জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চলাফেরায় বাধা দেওয়া হয়নি। তাই সাংবাদিকদের এই পাস সংগ্রহ করতে হবে না।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। প্রতিদিনই মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন আরোপ করেছে সরকার। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারিসহ সবধরনের অফিস, গণপরিবহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ থাকবে। মাঠপর্যায়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন। কেউ যেন অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা করতে না পারে সেজন্য রাজধানীজুড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেক পোস্ট। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের থানা ও ট্রাফিক বিভাগের সম্মিলিত টহলও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের মুভমেন্ট পাস ও জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কাউকে বাইরে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সাংবাদিককে প্রেসক্লাবের নিবন্ধন দেখাতে বললেন ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার মাহতাব উদ্দিন

আপডেট সময় : ০৪:৫৮:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১

সকালের সংবাদ অনলাইন ডেস্ক: রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি এবং লকডাউনের সার্বিক পরিস্থিতি মোবাইলে ভিডিও করার দায়ে ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদকের মোবাইল কেড়ে নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আ. স. ম. মাহতাব উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় মিরপুর-১ নাম্বর ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে এই প্রতিবেদকের মোবাইল কেড়ে নেন মিরপুর জোনের ডিসি।মিরপুর ১ নাম্বার থেকে ভিডিও ও ছবি তোলার জন্য ঢাকা পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার সাইদ রিপনের মোবাইল নিয়ে গেছেন মিরপুর জোনের ডিসি। বলেছেন প্রেস ক্লাবের নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে মোবাইল ফেরত নিতে।

মোবাইলে ভিডিও ধারণের সময় পুলিশের কাছাকাছি গেলে হঠাৎ ডিসি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এই আপনি কে? এমন প্রশ্নের জবাবে গলায় ঝুলানো অফিসের আইডি কার্ড দেখালে, তিনি কার্ড ধরে বলেন, কিসের ঢাকা পোস্টের সাংবাদিক। এই কথা বলার পরই মোবাইল কেড়ে নিয়ে প্রতিবেদকের মোবাইলেই ডিসি নিজেই ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। ডিসি ভিডিও করার সময় এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনি কিসের সাংবাদিক, কিসের ভিডিও করছেন বলেন। ঢাকা পোস্টের কি প্রেসক্লাবের নিবন্ধন আছে? প্রতিবেদককে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই পুলিশের এই কর্মকর্তা নিজের গাড়িতে উঠে যান। গাড়িতে উঠে বলেন, প্রেসক্লাবে নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে আমার অফিস থেকে মোবাইল নিয়ে যাবেন।’
এই ঘটনার পর ডিসির সাথে ঢাকা পোস্ট থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনাদের এই প্রতিবেদক আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছে। কিন্তু মোবাইল দেওয়ার বিষয়ে তিনি অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর হস্তক্ষেপে ডিসি মোবাইল দিতে বাধ্য হোন।
মোবাইল আনতে ডিসির অফিসে গেলে তিনি জানান, এই প্রতিবেদকের সাথে সেভাবে কথা বলার সুযোগ হয়নি। তাই খারাপ আচরণ করার সুযোগ ছিল না। তাহলে কেন মোবাইল নিলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে এই সাংবাদিক বাধা দিয়েছেন। উনি আমাদের কাছাকাছি গিয়ে ভিডিও করেছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ডিএমপির মিরপুর জোনের ডিসি একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি এটা কেন করলেন বুঝতে পারছি না। তাছাড়া সাংবাদিকদের আটকে রাখা বা মোবাইল নেওয়ার কোন নির্দেশনা ডিএমপি বা সরকার দেয়নি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘মুভমেন্ট পাস’ উদ্বোধনের সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের সড়কে চলাফেরার জন্য ‘মুভমেন্ট পাস’ প্রয়োজন হবে না। তবে অন্য পেশার যারা প্রয়োজনে বাইরে বের হতে চান এই পাস তাদের নিতে হবে।

আইজিপি বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপনে সাংবাদিকসহ জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চলাফেরায় বাধা দেওয়া হয়নি। তাই সাংবাদিকদের এই পাস সংগ্রহ করতে হবে না।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। প্রতিদিনই মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন আরোপ করেছে সরকার। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারিসহ সবধরনের অফিস, গণপরিবহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ থাকবে। মাঠপর্যায়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন। কেউ যেন অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা করতে না পারে সেজন্য রাজধানীজুড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেক পোস্ট। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের থানা ও ট্রাফিক বিভাগের সম্মিলিত টহলও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের মুভমেন্ট পাস ও জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কাউকে বাইরে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।