ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




শিশু ধর্ষণ ও হত্যা : ‘প্রমাণের অভাবে’ খালাস দুই আসামি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ ১১০ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি: যশোরের শিশু কথা আফরিন তৃষাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী (পিপি) সেতারা খাতুন।

এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী নিহতের বাবা তরিকুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তিনি।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরের ইজিবাইকচালক তরিকুল ইসলাম খোলাডাঙ্গার স্যালভেশন আর্মিপাড়ার ওমর আলীর বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তার বড় মেয়ে শিশু আফরিন কথা তৃষা কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করত।

২০১৯ সালের ৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির পাশে গির্জার মাঠে খেলতে যায় তৃষা। সন্ধ্যার পরও তৃষা বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরদিন তৃষার বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এদিন বিকেলে এলাকার প্রফুল্ল নামে এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে মাটি খোঁড়া দেখে সকলের সন্দেহ হয়। এরপর সেখানকার মাটি সারিয়ে বস্তাবন্দি তৃষার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কর্মকর্তা হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত সন্দেহে সাইফুল ইসলামকে আটক করেন। সাইফুল ইসলাম একই এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে। ওই সময় সাইফুল শিশু তৃষাকে হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। এরপর এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন শামীমকে পুলিশ আটক করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে শামীম নিহত হয়।

শামীমকে মাদক সেবনে বাধা ও ইজিবাইকে ওঠা নিয়ে তৃষার বাবার সঙ্গে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তারা তৃষাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।

তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকায় মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুলসহ দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কসবা ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেহাবুর রহমান শিহাব। আদালতে চার্জশিট প্রদানকালে অভিযুক্ত আসামি মেহেদী হাসান শক্তি গাজী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতকে অনুরোধ করা হয়।

এছাড়া এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শামীম গত বছরের ৬ মার্চ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার কারণে চার্জশিটে তার অব্যাহতির আবেদন করা হয়। কিন্তু এরপর চার্জশিটে অভিযুক্ত শক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করেন।

দীর্ঘদিন পর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত সোমবার। রায়ে আটক আসামি মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলার দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান শক্তি খোলাডাঙ্গা গাজীপাড়ার কামরুজ্জামানের ছেলে এবং সাইফুল ইসলাম মৃত আব্দুল আওয়ালের ছেলে।

এই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি সেতারা খাতুন বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলার দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শিশু ধর্ষণ ও হত্যা : ‘প্রমাণের অভাবে’ খালাস দুই আসামি

আপডেট সময় : ০৯:৪১:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১

জেলা প্রতিনিধি: যশোরের শিশু কথা আফরিন তৃষাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী (পিপি) সেতারা খাতুন।

এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী নিহতের বাবা তরিকুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তিনি।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরের ইজিবাইকচালক তরিকুল ইসলাম খোলাডাঙ্গার স্যালভেশন আর্মিপাড়ার ওমর আলীর বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তার বড় মেয়ে শিশু আফরিন কথা তৃষা কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করত।

২০১৯ সালের ৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির পাশে গির্জার মাঠে খেলতে যায় তৃষা। সন্ধ্যার পরও তৃষা বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরদিন তৃষার বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এদিন বিকেলে এলাকার প্রফুল্ল নামে এক ব্যক্তির বাড়ির পাশে মাটি খোঁড়া দেখে সকলের সন্দেহ হয়। এরপর সেখানকার মাটি সারিয়ে বস্তাবন্দি তৃষার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কর্মকর্তা হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত সন্দেহে সাইফুল ইসলামকে আটক করেন। সাইফুল ইসলাম একই এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে। ওই সময় সাইফুল শিশু তৃষাকে হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। এরপর এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন শামীমকে পুলিশ আটক করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে শামীম নিহত হয়।

শামীমকে মাদক সেবনে বাধা ও ইজিবাইকে ওঠা নিয়ে তৃষার বাবার সঙ্গে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তারা তৃষাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।

তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকায় মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুলসহ দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কসবা ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেহাবুর রহমান শিহাব। আদালতে চার্জশিট প্রদানকালে অভিযুক্ত আসামি মেহেদী হাসান শক্তি গাজী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতকে অনুরোধ করা হয়।

এছাড়া এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শামীম গত বছরের ৬ মার্চ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার কারণে চার্জশিটে তার অব্যাহতির আবেদন করা হয়। কিন্তু এরপর চার্জশিটে অভিযুক্ত শক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করেন।

দীর্ঘদিন পর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত সোমবার। রায়ে আটক আসামি মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলার দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান শক্তি খোলাডাঙ্গা গাজীপাড়ার কামরুজ্জামানের ছেলে এবং সাইফুল ইসলাম মৃত আব্দুল আওয়ালের ছেলে।

এই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি সেতারা খাতুন বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলার দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।