ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




রিকশাচালকের বাড়িতে হামলা: মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০ ৫৪ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী ব্যুরো | 

রাজশাহী মহানগরীতে এক রিকশাচালকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে এলাকার ‘মাদক কারবারিরা’। পুলিশ গিয়ে ভাঙচুর থামিয়েছে। কিন্তু এখন আর মামলা নিচ্ছে না। এ অবস্থায় হামলাকারীরা পরিবারটির সাথে আরও বেপরোয়া আচরণ করছে।

ভুক্তভোগী রিকশাচালকের নাম শাহীন আলী নবী। নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম বিদ্দিরপাটাল এলাকায় তার বাড়ি। গত রবিবার (২৬ এপ্রিল) তার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করছে না। উল্টো মীমাংসা করার জন্য পুলিশ চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাহীন আলীর স্ত্রী রহিমা আক্তার আদরী জানান, তার বাড়ির সামনে একটি আমবাগান রয়েছে। তার বাড়ির পাশের একটি রাস্তা দিয়ে এলাকার বখাটেরা ওই বাগানে গিয়ে গাঁজা সেবন করে। সেখানে বসে মাদক কেনাবেচাও হয়। এ জন্য বাইরের লোকজনেরও আনাগোনা রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে এলাকায় যেন কেউ না আসতে পারে সে জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তাই কিছু দিন আগে তিনি বাড়ির পাশের রাস্তাটি বন্ধ করে দেন।

আর এ কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাদক ব্যবসায়ীরা। এর জের ধরে গত রবিবার দুপুরে ওই এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে সুকচাঁন আলী (২২), মৃত আবদুল হান্নানের ছেলে শাকিব আলী (২৫) ও সাইদুল ইসলামের ছেলে রজন আলী (২২) বহিরাগত সাত-আটজন যুবককে নিয়ে তাদের বাড়ির সামনে গিয়ে গালিগালাজ শুরু করে।

রহিমা আক্তার জানান, এদের প্রত্যেকের হাতে চাইনিজ কুড়াল ও রামদা ছিল। এসব দেখে প্রাণভয়ে তিনি বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। সে সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ ছিলেন না। এ সময় মাদক কারবারিরা বাড়ির দরজায় চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে আঘাত করে। জানালা ভাঙচুর করে। লাঠি দিয়ে বৈদ্যুতিক মিটারও ভেঙে ফেলে।

হামলাকারীরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। তারা বাড়ির লোকজনকে বাইরে বের হয়ে আসতে বলে। রাস্তা লকডাউন করার শিক্ষা দেয়া হবে বলে তারা ঘোষণা দিতে থাকে। তখন রহিমা আক্তার রাজপাড়া থানায় ফোন করেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশের একটি টহল দল সেখানে যায়। পুলিশ দেখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন রহিমা আক্তার। কিন্তু সেটি মামলা হয়নি।

বুধবার দুপুরে রহিমা আক্তারের বাড়িতে গেলে দরজা-জানালায় চাইনিজ কুড়ালের আঘাত দেখা যায়। ভাঙচুর করা বৈদ্যুতিক মিটারটিও দেখা যায়।

রহিমা আক্তারের প্রতিবেশীরা জানান, হামলাকারীরা মাদক ব্যবসায়ী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। কিছুদিন পরপরই পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু এই হামলার পর পুলিশ তাদের ধরেনি। ফলে এলাকায় তারা আরও বেপরোয়া আচরণ করছে।

রহিমা আক্তার জানান, ঘটনার পর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আবার হামলাকারীরাই তাদের ওপর হামলার একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। অথচ তারা যে হামলা চালিয়েছে তার ভিডিও রয়েছে। এরপরেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে মামলা নিয়ে আসামি ধরা যাবে না। মীমাংসা করতে হবে।

হামলাকারীদের একজন শাকিব দাবি করেন, রাস্তা বন্ধ করার প্রতিবাদ করায় রহিমা আক্তার লোকজন নিয়ে তাদের মারধর করেছেন। তাই তারাও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। নিজেরা মাদক ব্যবসা করেন না বলেও দাবি করেন শাকিব।

জানতে চাইলে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আলী আরিফ বলেন, দুটো পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আছে। সে জন্য মামলা নেয়া যাচ্ছে না। একজন তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রিকশাচালকের বাড়িতে হামলা: মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০

রাজশাহী ব্যুরো | 

রাজশাহী মহানগরীতে এক রিকশাচালকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে এলাকার ‘মাদক কারবারিরা’। পুলিশ গিয়ে ভাঙচুর থামিয়েছে। কিন্তু এখন আর মামলা নিচ্ছে না। এ অবস্থায় হামলাকারীরা পরিবারটির সাথে আরও বেপরোয়া আচরণ করছে।

ভুক্তভোগী রিকশাচালকের নাম শাহীন আলী নবী। নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম বিদ্দিরপাটাল এলাকায় তার বাড়ি। গত রবিবার (২৬ এপ্রিল) তার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করছে না। উল্টো মীমাংসা করার জন্য পুলিশ চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাহীন আলীর স্ত্রী রহিমা আক্তার আদরী জানান, তার বাড়ির সামনে একটি আমবাগান রয়েছে। তার বাড়ির পাশের একটি রাস্তা দিয়ে এলাকার বখাটেরা ওই বাগানে গিয়ে গাঁজা সেবন করে। সেখানে বসে মাদক কেনাবেচাও হয়। এ জন্য বাইরের লোকজনেরও আনাগোনা রয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে এলাকায় যেন কেউ না আসতে পারে সে জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তাই কিছু দিন আগে তিনি বাড়ির পাশের রাস্তাটি বন্ধ করে দেন।

আর এ কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাদক ব্যবসায়ীরা। এর জের ধরে গত রবিবার দুপুরে ওই এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে সুকচাঁন আলী (২২), মৃত আবদুল হান্নানের ছেলে শাকিব আলী (২৫) ও সাইদুল ইসলামের ছেলে রজন আলী (২২) বহিরাগত সাত-আটজন যুবককে নিয়ে তাদের বাড়ির সামনে গিয়ে গালিগালাজ শুরু করে।

রহিমা আক্তার জানান, এদের প্রত্যেকের হাতে চাইনিজ কুড়াল ও রামদা ছিল। এসব দেখে প্রাণভয়ে তিনি বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। সে সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ ছিলেন না। এ সময় মাদক কারবারিরা বাড়ির দরজায় চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে আঘাত করে। জানালা ভাঙচুর করে। লাঠি দিয়ে বৈদ্যুতিক মিটারও ভেঙে ফেলে।

হামলাকারীরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। তারা বাড়ির লোকজনকে বাইরে বের হয়ে আসতে বলে। রাস্তা লকডাউন করার শিক্ষা দেয়া হবে বলে তারা ঘোষণা দিতে থাকে। তখন রহিমা আক্তার রাজপাড়া থানায় ফোন করেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশের একটি টহল দল সেখানে যায়। পুলিশ দেখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন রহিমা আক্তার। কিন্তু সেটি মামলা হয়নি।

বুধবার দুপুরে রহিমা আক্তারের বাড়িতে গেলে দরজা-জানালায় চাইনিজ কুড়ালের আঘাত দেখা যায়। ভাঙচুর করা বৈদ্যুতিক মিটারটিও দেখা যায়।

রহিমা আক্তারের প্রতিবেশীরা জানান, হামলাকারীরা মাদক ব্যবসায়ী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। কিছুদিন পরপরই পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু এই হামলার পর পুলিশ তাদের ধরেনি। ফলে এলাকায় তারা আরও বেপরোয়া আচরণ করছে।

রহিমা আক্তার জানান, ঘটনার পর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আবার হামলাকারীরাই তাদের ওপর হামলার একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। অথচ তারা যে হামলা চালিয়েছে তার ভিডিও রয়েছে। এরপরেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে মামলা নিয়ে আসামি ধরা যাবে না। মীমাংসা করতে হবে।

হামলাকারীদের একজন শাকিব দাবি করেন, রাস্তা বন্ধ করার প্রতিবাদ করায় রহিমা আক্তার লোকজন নিয়ে তাদের মারধর করেছেন। তাই তারাও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। নিজেরা মাদক ব্যবসা করেন না বলেও দাবি করেন শাকিব।

জানতে চাইলে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আলী আরিফ বলেন, দুটো পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আছে। সে জন্য মামলা নেয়া যাচ্ছে না। একজন তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।