করোনা যুদ্ধে বিজয়ের পথে ইতালি, সূস্হতার ছাড়ালো ৬৬ হাজারের বেশি
- আপডেট সময় : ১১:৫৯:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০ ১৩০ বার পড়া হয়েছে
তুহিন মাহামুদ ইউরোপ ব্যুরো :
করোনাভাইরাসে কবল থেকে ইতালি এখন অনেকটা মুক্তির পথে। দিন আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে পাশাপাশি সূস্হতার সংখ্যা বাড়ছে।যদিও মৃত্যুর সংখ্যা আগের তুলনায় কম তবে একদিন বাড়ছে আবার কমছে। তবুও আশার আলো দেখছে ইতালির ছয় কোটি মানুষ। সোমবার (২৭ এপ্রিল ) মৃত্যুবরণ করেছে ৩৩৩জন,গতকাল রবিবারের চেয়ে আজ ৭০ জন বেশি। রবিবার এ সংখ্যা ছিলো ২৬০জন। সুরক্ষা দিতে ইতালি সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে ইতালিতে মোট মৃত্যুবরণ করেছে ২৬হাজার ৯৭৭জন।
গত কয়েকদিনে রেকর্ড পরিমান লোক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।আজও এ সংখ্যা অব্যাহত রয়েছে।শনিবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ হাজার ৬৯৪জন।
এদিন নতুন আক্রান্ত ১ হাজার ৭৩৯ জন। । দেশটিতে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।গুরুতর অসুস্থ রোগির সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৬ জন ,যা গতকালের চেয়ে ৫৩ জন কম।মোট চিকিৎসাধীন রুগির সংখ্যা এক লক্ষ ৫ হাজার ৮১৩ জন এবং দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৯৯ হাজার ৪১৪ জন বলে জানিয়েছেন নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি।
তিনি বলেন, জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৬ হাজার ৬২৪ জন।
ইতালির ২১ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত (মিলান, বেরগামো, ব্রেসিয়া, ক্রেমনাসহ) ১১টি প্রদেশ। আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ১২৪ জন,যা গতকালের চেয়ে ৬৮ জন বেশি ।শুধু এ অঞ্চলেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ৪৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে।এ অঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৪৭৯ জন । আজ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯০জন ।গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৫২ জন।এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ২৫হাজার ৯২ জন।
এদিকে লকডাউন কিছুটা শিথিলের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে। ফলে আশার আলো দেখছেন দেশটির জনগণ।দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করে গতকাল রোববার ভিডিও কনফারেন্সেরের মাধ্যমে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে।লকডাউন শিথিলের অংশ হিসেবে দেশটিতে ৪ মে থেকে উৎপাদন শিল্প, নির্মাণ খাত ও পাইকারি দোকান পুনরায় চালুর প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।তবে আপাতত সীমিত আকারে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে খাবারের হোম ডেলিভারি আরও বৃদ্ধি করতে চায় সরকার। খ্রিস্টান ধর্মের মৃত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পালন করতে পারবে তবে ১৫জনের বেশি জড়ো হতে পারবেনা।তবে অবশ্যই মাক্স এবং নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। আগের মত অনেকটা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবেন তবে এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে স্ব ঘোষিত-সার্টিফিকেট সাথে থাকতে হবে।
এছাড়া ১৮ মে থেকে বাণিজ্যিক কিছু অংশ, প্রদর্শনী, জাদুঘর, প্রশিক্ষণ টিম, ক্রীড়া ক্ষেত্র এবং গ্রন্থাগার খোলার ঘোষণা করা হয়। ১ জুন থেকে রেষ্টুরেন্ট, বার, সেলুন, ম্যাসেজ সেন্টার খোলা হবে বলে
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কন্তে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি ভাল না হওয়ায় আগামী সেপ্টেম্বরেও স্কুলগুলি খোলা সম্ভব হচ্ছেনা।পাশাপাশি শিথিলের অর্থ এ নয় যে একজন আরেকজনের বাসায় বেড়াতে যাবেন। মৃতুর হার শুন্যে আনা এখনই সম্ভব নয়, যতোদিন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয়।অন্যদিকে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বাসে ও রাস্তাসহ প্রতিটি কর্মস্থলে।প্রসঙ্গত,সরকার দেশটির নাগরিকদের জন্য প্রথম থেকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
কর্মহীনদের প্রথম ধাপে ৬০০ ও পরে ৩০০ ইউরো দেন বোনাসের মাধ্যমে।তাছাড়াও বাসা ভাড়ার জন্য ৪০ ভাগ আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আগামী মার্চের পরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে স্বার্বিক পরিস্থিতি। বিদেশী পর্যটকদেরও নিদিষ্ট সংখ্যায় আসার ঘোষনা দিয়েছে সরকার ২০২১ সালে মার্চের শেষের দিকে।