ঢাকা ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসিমের যৌন হায়রানি ও দূর্নীতি পর্ব -১ Logo এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে আলি আখতার হোসেনের দায়িত্ব গ্রহণ Logo ইবিতে তারুণ্যের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সম্পন্ন” Logo স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে বেনাপোলে দূর্বার তারুণ্য এর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ Logo স্বাস্থ্য বাতায়ন নিয়ে কুবি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পেইন Logo গণপূর্তের দুর্নীতির মহারাজ প্রকৌশলী মহিবুল পর্ব- ১ Logo “দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে আতাউস সামাদ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত” Logo হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ Logo ‘ভালো থাকিস সবাই’ স্টোরি দেয়ার পর আত্মহত্যা করেন কুবি শিক্ষার্থী Logo শেয়ার মার্কেট ধ্বংসের ডন কাজী সাইফুর: রয়েছে শত কোটি টাকার অবৈধ রিপ্লেসমেন্ট শেয়ার!




খাবার চাইতে গেলে ৫০ টাকা দিয়ে তাড়িয়ে দিলেন ইউএনও

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০ ৩০ বার পড়া হয়েছে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: সোমবার দুপুর ১২টা। চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার মোহাম্মদ রায়হানের অফিসকক্ষ থেকে অশ্রুসজল চোখে বের হয়ে এলেন এক নারী।বাইরে বের হয়েই সামনের সিঁড়িতে বসে পড়লেন তিনি।

ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছেন খোলা আকাশের দিকে। পাশেই একটি গামলায় রাখা কয়েক আঁটি ডাটার শাক। ডালার এক কোণের প্যাকেটে রয়েছে এক ব্যক্তির দেয়া ১ কেজি চাল।কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ঘরে খাবার নেই, ইউএনও স্যারের কাছে চাইতে এসেছিলাম। তিনি ৫০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে দূর দূর করে ঘর থেকে বের করে দিলেন। যেতে বললেন চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে।ওই নারীর নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩৫)। পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরপুর ইউনিয়নের ভাদ্রা গ্রামে অন্যের জমিতে ছাপড়া ঘরে অসুস্থ স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন এই নারী। করোনা ভাইরাসের কারণে উপজেলাকে অঘোষিত লকডাউনের পর থেকেই ঘরে খাবার নেই এই নারীর।

জানা গেল, স্বামী অসুস্থ হয়ে হয়ে বিছানা শয্যা হওয়ার পর থেকেই তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে শাক বিক্রি করেন এবং মানুষের বাড়ি কাজ করে অর্ধাহারে অনাহারে সংসার চালান। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাসা-বাড়ির কেউ শাক কেনেন না বা বাড়িতে ঢুকতেও দেন না। বন্ধ হয়ে গেছে বাসা-বাড়ির কাজও।তাই সোমবার দুপুরে ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হানের কাছে খাবারের জন্য যান। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বরের কাছে যেতে বলেন। পরে নাছোড়বান্দা ওই নারী খাবারের জন্য আকুতি জানালে ইউএনও তার হাতে ৫০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন।এ সময় সেখানে উপস্থিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম শামীম এহসান ওই নারীকে ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।কান্নাজড়িত কণ্ঠে আঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতিনি! কিন্তু উপার্জন বন্ধ হওয়ায় খাবার চাইতে এসেছিলাম। ইউএনও স্যার ধমকের সুরে ৫০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলেন। পরে আপনার সঙ্গে কথা বলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে আমাকে এক প্যাকেট খাবার দিয়েছে এবং ভুল স্বীকার করেছে।

ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, তখন আমি ব্যস্ত ছিলাম। দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলে তো আমি ৫০ টাকা দিতাম না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও দিল আবার আমিও দিলাম। এতে ডাবলিং হতে পারে। তাই যাচাই করে পরে ওই মহিলাকে (আঞ্জুয়ারা) খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




খাবার চাইতে গেলে ৫০ টাকা দিয়ে তাড়িয়ে দিলেন ইউএনও

আপডেট সময় : ১১:২১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: সোমবার দুপুর ১২টা। চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার মোহাম্মদ রায়হানের অফিসকক্ষ থেকে অশ্রুসজল চোখে বের হয়ে এলেন এক নারী।বাইরে বের হয়েই সামনের সিঁড়িতে বসে পড়লেন তিনি।

ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছেন খোলা আকাশের দিকে। পাশেই একটি গামলায় রাখা কয়েক আঁটি ডাটার শাক। ডালার এক কোণের প্যাকেটে রয়েছে এক ব্যক্তির দেয়া ১ কেজি চাল।কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ঘরে খাবার নেই, ইউএনও স্যারের কাছে চাইতে এসেছিলাম। তিনি ৫০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে দূর দূর করে ঘর থেকে বের করে দিলেন। যেতে বললেন চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে।ওই নারীর নাম আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩৫)। পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরপুর ইউনিয়নের ভাদ্রা গ্রামে অন্যের জমিতে ছাপড়া ঘরে অসুস্থ স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন এই নারী। করোনা ভাইরাসের কারণে উপজেলাকে অঘোষিত লকডাউনের পর থেকেই ঘরে খাবার নেই এই নারীর।

জানা গেল, স্বামী অসুস্থ হয়ে হয়ে বিছানা শয্যা হওয়ার পর থেকেই তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে শাক বিক্রি করেন এবং মানুষের বাড়ি কাজ করে অর্ধাহারে অনাহারে সংসার চালান। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাসা-বাড়ির কেউ শাক কেনেন না বা বাড়িতে ঢুকতেও দেন না। বন্ধ হয়ে গেছে বাসা-বাড়ির কাজও।তাই সোমবার দুপুরে ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হানের কাছে খাবারের জন্য যান। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বরের কাছে যেতে বলেন। পরে নাছোড়বান্দা ওই নারী খাবারের জন্য আকুতি জানালে ইউএনও তার হাতে ৫০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন।এ সময় সেখানে উপস্থিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম শামীম এহসান ওই নারীকে ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।কান্নাজড়িত কণ্ঠে আঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতিনি! কিন্তু উপার্জন বন্ধ হওয়ায় খাবার চাইতে এসেছিলাম। ইউএনও স্যার ধমকের সুরে ৫০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলেন। পরে আপনার সঙ্গে কথা বলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে আমাকে এক প্যাকেট খাবার দিয়েছে এবং ভুল স্বীকার করেছে।

ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, তখন আমি ব্যস্ত ছিলাম। দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলে তো আমি ৫০ টাকা দিতাম না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও দিল আবার আমিও দিলাম। এতে ডাবলিং হতে পারে। তাই যাচাই করে পরে ওই মহিলাকে (আঞ্জুয়ারা) খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।