মামলা তুলে না নেওয়ায় গণধর্ষিতার স্বামীর দুই পা ভাঙল আসামিরা

- আপডেট সময় : ১০:০৮:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০২ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালী ও কলাপাড়া প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আলোচিত গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার বাদী ধর্ষিতার স্বামীর দুই পা ভেঙে দিয়েছে আসামিরা। ওই মামলায় জেল থেকে বের হয়ে মঙ্গলবার রাতে ধুলাশ্বর ইউনিয়নের ইউপি ভবনের সামনে চাপলি বাজারে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা শাকিল মৃধার নেতৃত্বে আসামিরা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাকে রক্তাক্ত করে। মামলা তুলে না নেওয়ার প্রতিশোধ নিতে আসামিরা এ হামলা চালায়। এর আগে একাধিকবার বাদীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল তারা। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বুধবার আবুল খায়ের নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে মহিপুর থানা পুলিশ।
আহত ব্যক্তি জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি চায়ের দোকানে দাঁড়ান তিনি। এ সময় তার স্ত্রীকে গণধর্ষণের মামলার আসামি মহিপুর থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল মৃধার নেতৃত্বে অন্য আসামি শাহ আলম, মামুন, রবিউলসহ কয়েকজন তাকে লোহার রড দিয়ে পেটাতে শুরু করে। মাটিতে ফেলে আসামিরা তার পায়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের দূরে সরিয়ে দেয় তারা। এ সময় আসামিরা বাদীর শরীর থেকে ঝরা রক্ত নিয়ে চাপলি বাজারে উল্লাস করতে থাকে। চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘তোরে মামলা উঠাইতে কইছিলাম, আমাগো কথা শোনস নাই। আইজ তোর রক্ত দিয়ে গোসল করব আমরা।’ পরে এক দোকানি মোটরসাইকেল ভাড়া করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
আহতের চাচাতো ভাই জানান, চাপলি বাজারে চিকিৎসা না পেয়ে ভাইকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেও সন্ত্রাসীরা বাধা দেয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমতলী গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত দুই পা ব্যান্ডেজ করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। পরে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন তারা।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ওসি সোহেল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
গত ১৫ এপ্রিল রাতে ধুলাশ্বর ইউনিয়নে স্বামীকে বেঁধে তার সামনেই স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে একই এলাকার শাহ আলম, শাহিন, রবিউল, আল-আমিন, আব্দুর রশিদ, শাকিলসহ ১০ থেকে ১২ জন। এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযাগে দায়ের করেন। ক্ষুব্ধ আসামিরা বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করে ও ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখায়।