দালালের দৌরাত্ম্য: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসহায়!

- আপডেট সময় : ০২:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২৫ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল- শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে রোগী, রোগীর স্বজন, এমনকি খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল- শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে রোগী, রোগীর স্বজন, এমনকি খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
কর্মচারী না হয়েও নিজেদের অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেয়া দেড় শতাধিক বহিরাগতের কারণে রোগীর ভোগান্তির পাশাপাশি নিয়মিত কর্মচারী ও প্রশাসন অনেকটা জিম্মি। শুধু তাই নয়, নিয়মিত কর্মী না হওয়ায় এদের কারণে হাসপাতালের জরুরি জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে তটস্থ থাকেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইনচার্জরা।
এ ছাড়া রোগীদের জিম্মি করে টাকা আদায়, দালালির মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি করানোসহ নানা হয়রানি ও জটিলতা তৈরি করছে এরা। সুষ্ঠু চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালটিকে বহিরাগতমুক্ত করার বিকল্প নেই।
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় শেবাচিমে রোগীর চাপ হওয়া স্বাভাবিক। এ কারণে প্রতিদিনই বেড সংখ্যার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হওয়ার বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে এক সময় বেসরকারি একটি জনবল সরবরাহ কোম্পানি থেকে শেবাচিমে কাজ করতে যাওয়া এসব বহিরাগত কোম্পানির চুক্তি শেষ হওয়ার পরও সেখানে রয়ে গেছে।
নিজেদের অস্থায়ী কর্মচারী পরিচয় দিয়ে এরা নিয়মিত কর্মচারীদের চেয়ে বেশি দাপট দেখিয়ে সবাইকে জিম্মি করে রাখে।
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও কেন সেখানে নিজস্ব লোকবলের অভাব থাকবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, চিকিৎসার মতো জরুরি সেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শেবাচিমসহ সব সরকারি হাসপাতাল থেকে বহিরাগত-দালালদের দৌরাত্ম্য অবিলম্বে দূর করা দরকার।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, শুধু শেবাচিমেই নয়, দেশের প্রায় সব সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বড় হাসপাতালে বহিরাগত এবং দালালদের দৌরাত্ম্য কম-বেশি রয়েছে। খোদ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে দালাল, কমিশন এজেন্ট ও ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের অযাচিত বেপরোয়া উপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার জন্য আসা রোগীদের হয়রানির কারণ।
শুধু তাই নয়, এরা ডাক্তারদের কাছেও নিজেদের কোম্পানির ওষুধ না লেখার কৈফিয়ত চাওয়া, নিজেদেরটা লিখতে চাপ প্রয়োগের মতো অনৈতিক কাজ করে থাকে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত হাসপাতালগুলোতে বহিরাগত ও অপ্রয়োজনীয় মানুষের উপস্থিতি রোধের চেষ্টা করা।
এ ছাড়া যেসব হাসপাতালে জনবল সংকট রয়েছে, যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত তা পূরণ করে স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে চিকিৎসাসেবায় ইতিবাচক পরিবেশ নিশ্চিত করা অসম্ভব হবে না।