‘গাঁজা খেয়ে খেয়ে আমি ফকির হয়ে গেছি’

- আপডেট সময় : ১০:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি;
‘টানা ২০ বছর ধরে গাঁজা খেয়ে আসছি। গাঁজার নেশার কারণে ভিটে-মাটি, আত্মীয়-স্বজন সব হারিয়েছি। কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। শুনেছি গাঁজা খেলে নাকি রাজা হয়, কিন্তু আমি তো ফকির হয়ে গেছি।’
গাঁজা সেবনের দায়ে আটক ও ৩ মাসের কারাদণ্ড পাওয়া গৈজদ্দিন সরদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তি এসব কথাগুলো বলেন।
তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ময়ছের মাতব্বর পাড়ার মৃত আলাউদ্দিন সরদারের ছেলে।
রোববার বিকাল ৫টার দিকে তাকে পৌরসভার কাজীপাড়া থেকে গাঁজা সেবনকালে আটক করা হয়। এ সময় তার দীর্ঘদিনের সেবন সঙ্গী শহিদুল ইসলাম (৫২) নামে অপর একজনকেও আটক করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আমার ভালোভাবে কাজকর্ম করে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু গাঁজার নেশার কারণে তা হয়নি। এখন ঠিক মতো কোনো কাজকর্মও করতে পারি না। স্ত্রী মারা গেছে কয়েক বছর হলো। ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ওরা ওদের মতো আছে।
তিনি বলেন, নিজের ভিটের ৫ শতাংশ জমি আরও কয়েক বছর আগে ছোট ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। বর্তমানে যেখানে রাত, সেখানেই কাত। জমি বিক্রির টাকার বেশিরভাগই গাঁজার পেছনে গেছে।
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অতি সাধারণ গাঁজাসেবী। যারা ভিআইপি গাঁজাসেবী ওনারা গোয়ালন্দ রেল স্টেশনের পেছনে গাঁজা সেবনের বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। ওখানে আমার মতো সাধারণরা যেতে পারে না।
গৈজদ্দিন ও সহিদুল ইসলাম ছাড়াও ওই দিন দৌলতদিয়া পোড়াভিটার করিমের বাড়ি থেকে গাঁজা সেবনকালে আরও ৪ জনকে আটক করা হয়। এরা হলেন- কুদ্দুস ফকির (৪০), হালিম মোল্লা (৩৫), রিয়াদ সিকদার (৩৩) ও শফিকুল ইসলাম (৪০)।
আটক ৬ জনকেই ৩ মাস করে কারাদণ্ড দিয়ে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাজবাড়ীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দলকে নিয়ে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে আটক ৬ গাঁজাসেবীকে ৩ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আটককালে গৈজদ্দিন ও সহিদুলের কাছ থেকে ১২ পুড়িয়া গাঁজা ও গাঁজা সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।