ঢাকা ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo গোপালগঞ্জে ‘নৌকার দুর্গ’ ভাঙার চ্যালেঞ্জে বিএনপি Logo ফরিদপুরে কৃষকদল নেতা খন্দকার নাসিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ Logo ডিপিডিসির রুহুল আমিন ফকির দুর্নীতির মাধ্যমে গড়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদ Logo উত্তরখানে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নেত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা Logo খুলনা-৬ আসনে বিএনপির সাক্ষাতের ডাক পেলেন সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী Logo গুলশানে ‘Bliss Art Lounge’-এ অভিযান: প্রচুর বিদেশি মদসহ ৯ জন গ্রেফতার Logo টঙ্গীতে ১১ বছরের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ নিখোঁজ Logo “স্টার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫” পেলেন দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ Logo খুলনায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ, এলাকায় চাপা উত্তেজনা Logo স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী ‘যশোর বিআরটিএ অফিসের তারিক ধরাছোঁয়ার বাইরে|(পর্ব – ০১)

বেবি পাউডারে ক্যান্সারের ঝুঁকি, জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি জনসন!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ 
‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর ট্যালকম পাউডারে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক পণ্য থেকে হতে পারে ক্যান্সার। এমন বহু প্রমাণ পাওয়া গেলেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি সংস্থাটি। ফলে এবার জনসনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর জনসনের পণ্য ব্যবহারের কারণে ওভারিয়ান ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া ২২ নারীকে ৪৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন দেশটির একটি আদালত।

জনসনের ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে ওভারিয়ান ক্যান্সার শরীরে বাসা বেঁধেছে; এমন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই ২২ নারীকে প্রাথমিকভাবে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের আদালত। এছাড়াও জনসনকে আরো ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

ক্যান্সারে আক্রান্ত ওই নারীদের আইনজীবীরা বলেছেন, জনসনের ট্যালকম পণ্য যে ১৯৭০ সাল থেকেই দূষিত সেটি কোম্পানি অবগত আছে; কিন্তু এরপরও তারা পণ্য ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাদের সাবধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ট্যালকম পাউডার তৈরির প্রধান উপাদান ট্যালক, যার রাসায়নিক নাম ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট; এটি প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সবচেয়ে নরম খনিজ পদার্থ। উইকিপিডিয়া বলছে, এতে রয়েছে অ্যাসবেস্টস; অ্যাসবেস্টস হল প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ছয় সিলিকেট খনিজের একটি সেট। যা তার সুবিধাজনক প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যর কারণে বাণিজিকভাবে ব্যবহৃত হয়। রেশম ও পশমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এই খনিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনেক মিল দেখা যায়।

অ্যাসবেস্টস আঁশের দীর্ঘায়িত শ্বসন ফুসফুসের ক্যান্সার, মেসোথেলিয়মা, এবং অ্যাসবেস্টস এর মতো গুরুতর অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যাসবেস্টসের সকল প্রকার নিষ্কাশন, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডার, শ্যাম্পুতে যে দুটি রাসায়নিকের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি সে দুটি হল ফরম্যালডিহাইড ও অ্যাসবেস্টাস। এর মধ্যে প্লাইউড, ফাইবার বোর্ড, নানা রকম আঠা তৈরিতে ব্যবহৃত ফরম্যালডিহাইড হল এক রকম বর্ণহীন, ঝাঁঝালো রাসায়নিক।

অ্যাসবেস্টাস এমন এক ধরনের খনিজ পদার্থ যার উচ্চ তাপ শোষণের ক্ষমতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুটি উপাদানই ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ তাদের পণ্য থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকির আশঙ্কা উড়িয়ে এগুলোকে নিরাপদ বলেই দাবি করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়াতে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সংস্থার বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বার গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডারসহ একাধিক পণ্য। বার বার জনসনের বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টাসের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :
error: Content is protected !!

বেবি পাউডারে ক্যান্সারের ঝুঁকি, জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি জনসন!

আপডেট সময় : ০৩:০০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ 
‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর ট্যালকম পাউডারে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক পণ্য থেকে হতে পারে ক্যান্সার। এমন বহু প্রমাণ পাওয়া গেলেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি সংস্থাটি। ফলে এবার জনসনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর জনসনের পণ্য ব্যবহারের কারণে ওভারিয়ান ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া ২২ নারীকে ৪৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন দেশটির একটি আদালত।

জনসনের ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে ওভারিয়ান ক্যান্সার শরীরে বাসা বেঁধেছে; এমন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই ২২ নারীকে প্রাথমিকভাবে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের আদালত। এছাড়াও জনসনকে আরো ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

ক্যান্সারে আক্রান্ত ওই নারীদের আইনজীবীরা বলেছেন, জনসনের ট্যালকম পণ্য যে ১৯৭০ সাল থেকেই দূষিত সেটি কোম্পানি অবগত আছে; কিন্তু এরপরও তারা পণ্য ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাদের সাবধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ট্যালকম পাউডার তৈরির প্রধান উপাদান ট্যালক, যার রাসায়নিক নাম ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট; এটি প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সবচেয়ে নরম খনিজ পদার্থ। উইকিপিডিয়া বলছে, এতে রয়েছে অ্যাসবেস্টস; অ্যাসবেস্টস হল প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ছয় সিলিকেট খনিজের একটি সেট। যা তার সুবিধাজনক প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যর কারণে বাণিজিকভাবে ব্যবহৃত হয়। রেশম ও পশমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এই খনিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনেক মিল দেখা যায়।

অ্যাসবেস্টস আঁশের দীর্ঘায়িত শ্বসন ফুসফুসের ক্যান্সার, মেসোথেলিয়মা, এবং অ্যাসবেস্টস এর মতো গুরুতর অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যাসবেস্টসের সকল প্রকার নিষ্কাশন, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডার, শ্যাম্পুতে যে দুটি রাসায়নিকের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি সে দুটি হল ফরম্যালডিহাইড ও অ্যাসবেস্টাস। এর মধ্যে প্লাইউড, ফাইবার বোর্ড, নানা রকম আঠা তৈরিতে ব্যবহৃত ফরম্যালডিহাইড হল এক রকম বর্ণহীন, ঝাঁঝালো রাসায়নিক।

অ্যাসবেস্টাস এমন এক ধরনের খনিজ পদার্থ যার উচ্চ তাপ শোষণের ক্ষমতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুটি উপাদানই ক্যান্সারের মতো মরণ ব্যাধির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ তাদের পণ্য থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকির আশঙ্কা উড়িয়ে এগুলোকে নিরাপদ বলেই দাবি করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়াতে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সংস্থার বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বার গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডারসহ একাধিক পণ্য। বার বার জনসনের বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টাসের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।