ঢাকা ১০:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




বন্যা কবলিত এলাকায় খাবার পানির তিব্র সংকট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ; 
ছয় দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে পড়েছেন হাওর তথা নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি লোকজন। খাবার পানির অভাবে ঝুঁকি নিয়েই পান করছেন হাওরের দূষিত পানি। এতে করে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সদর উপজেলা, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপু, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানিতে প্রায় ১৩ হাজার ১০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ, চাল, শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে পানিবন্দি লোকজন বন্যার দূষিত পানি পান করছেন।

শহরের হাজিপাড়া এলাকার শিল্পী বেগম বলেন, পানিতে বাড়ির টিউবওয়েল (নলকূপ) তলিয়ে গেছে, পানি কিনে খাওয়ার মত সামর্থও নেই আমাদের। বাধ্য হয়েই বন্যার পানি খাইতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের মানিক মিয়া বলেন, ঘরে কোমর পানি, টিউবওয়েল পানির নিচে। আমাদের খাওয়ার পানির খুব অভাব। আমাদের যদি সরকার থেকে ফিটকিরি দেয়া হয় তাহলে পানি খাওয়ার সমস্যা থাকতো না।

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফুল মিয়া বলেন, আমার এলাকার ৮০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি। সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। তবে ত্রাণের তালিকায় বিশুদ্ধ পানি নেই। এজন্য সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণের ট্যাবলেট দিলে মানুষ কিছুটা উপকৃত হত। কারণ চুলা জ্বালিয়ে পানি ফুটানোর মত অবস্থা নেই এখন।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস বলেন, পানিবন্দি মানুষজন যাতে বন্যার পানি পান না করে সেজন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যদি পানি পান করতে হয় তাহলে ফিটকিরি দিয়ে অথবা পানি ফুটিয়ে পান করতে বলা হয়েছে। না হলে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি উপজেলায় ৩০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে। এগুলো উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। বন্যায় প্রায় ১০ হাজার নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা শেষ হলে এগুলো পরিষ্কার করে দেয়া হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা বন্যার্তদের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করছি। তাছাড়া জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্বাস্থ্যসম্মত উপকরণ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বন্যা কবলিত এলাকায় খাবার পানির তিব্র সংকট

আপডেট সময় : ০৮:১২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ; 
ছয় দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে পড়েছেন হাওর তথা নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি লোকজন। খাবার পানির অভাবে ঝুঁকি নিয়েই পান করছেন হাওরের দূষিত পানি। এতে করে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সদর উপজেলা, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপু, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানিতে প্রায় ১৩ হাজার ১০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ, চাল, শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে পানিবন্দি লোকজন বন্যার দূষিত পানি পান করছেন।

শহরের হাজিপাড়া এলাকার শিল্পী বেগম বলেন, পানিতে বাড়ির টিউবওয়েল (নলকূপ) তলিয়ে গেছে, পানি কিনে খাওয়ার মত সামর্থও নেই আমাদের। বাধ্য হয়েই বন্যার পানি খাইতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের মানিক মিয়া বলেন, ঘরে কোমর পানি, টিউবওয়েল পানির নিচে। আমাদের খাওয়ার পানির খুব অভাব। আমাদের যদি সরকার থেকে ফিটকিরি দেয়া হয় তাহলে পানি খাওয়ার সমস্যা থাকতো না।

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফুল মিয়া বলেন, আমার এলাকার ৮০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি। সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। তবে ত্রাণের তালিকায় বিশুদ্ধ পানি নেই। এজন্য সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণের ট্যাবলেট দিলে মানুষ কিছুটা উপকৃত হত। কারণ চুলা জ্বালিয়ে পানি ফুটানোর মত অবস্থা নেই এখন।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস বলেন, পানিবন্দি মানুষজন যাতে বন্যার পানি পান না করে সেজন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যদি পানি পান করতে হয় তাহলে ফিটকিরি দিয়ে অথবা পানি ফুটিয়ে পান করতে বলা হয়েছে। না হলে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি উপজেলায় ৩০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেয়া হয়েছে। এগুলো উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। বন্যায় প্রায় ১০ হাজার নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা শেষ হলে এগুলো পরিষ্কার করে দেয়া হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা বন্যার্তদের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করছি। তাছাড়া জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্বাস্থ্যসম্মত উপকরণ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।