ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির অভিযোগ: প্রশাসন নীরব Logo সাংবাদিক সন্তানদের চেক প্রদান নিয়ে ডিসির অশোভন কান্ড Logo প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্স বাণিজ্য করে পরিবেশ অধিদপ্তরের জহিরুল কোটিপতি Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্সের নামে পরিবেশ অধিদপ্তরের আবুল কালামের কোটি টাকার বাণিজ্য Logo বেসরকারি টিভি চ্যানেল এস’ সুজিত চক্রবর্তী গং কর্তৃক সাংবাদিকদের হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo ফ্যাসিস্টের দোসর বিটিভির প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি! পর্ব ১ Logo সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশনের কক্সবাজার ভ্রমন Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে!




মাদারীপুরের আবাসিক হোটেল মালিককে ওসির মারধর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯ ১১৯ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুর প্রতিনিধি;

মাদারীপুর সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম একটি আবাসিক হোটেল মালিককে থানায় নিজ কক্ষে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার হোটেল মালিক সিরাজ মুন্সী বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার দাবি, মাসিক পনের হাজার টাকা চাঁদা দিতে না চাওয়ায় নির্যাতনের পাশাপাশি একটি সাজানো মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।

সিরাজ মুন্সী মাদারীপুর শহরের অবস্থিত সুমন আবাসিক হোটেলের মালিক। তিনি জানান, গত সোমবার রাতে মাদারীপুর পৌর শহরে অবস্থিত তার হোটেলে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে থাকতে আসেন শরিয়তপুর সদর উপজেলার এক শালি-দুলাভাই। ঘটনাটি জেনে রাতেই ওই হোটেল তল্লাশি করতে যান মাদারীপুর পুলিশের ডিএসবি শাখার সদস্য শহিদুল ইসলাম। এসময় তিনি দু’জনের কথায় অমিল খুঁজে পান। এক পর্যায় তারা নিজেদের সম্পর্কের কথা শিকার করেন। পরে পুলিশ সদস্য শহিদুল ইসলাম বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য ওই ব্যক্তিকে ৩০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বলেন। এ সময় হোটেলের মালিক সিরাজ মুন্সীকে টাকার বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেন এবং তাকে দাবিকৃত চাঁদার টাকা বিকাশের দোকান থেকে আনতে পাঠান ওই পুলিশ সদস্য। সিরাজ মুন্সী বিকাশের দোকান থেকে টাকা নিয়ে ফেরার সময় সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে।

সিরাজ মুন্সী বলেন, পরের দিন সকালে সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম আমাকে তার নিজ কক্ষে ডেকে নেন। এ সময় তিনি মাসিক ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে না চাইলে ওসি আমাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পর দিতে থাকেন। ওসির মারধরে আমার চোখে রক্ত জমাট বেধে যায়। এরপর ওসি হোটেলে ওঠা সেই ব্যক্তিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠান। এরপর আদালত আমাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জামিন দেন। পরে চোখের আঘাত গুরুতর হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হই।

তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ জুলাই ওসি মাদারীপুর সদর থানায় যোগ দেন। এরপর দুইবার আমাকে তার রুমে ডেকে মাসিক পনের হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি তাকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করেছি। তিনি তখন থেকেই আমার ওপরে ক্ষেপে আছেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার চাই।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবির হোসেন জানান, চোখের আঘাত বেশি হওয়ায় রোগীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তিনি এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে অধিকতর চিকিৎসার জন্যে অন্যত্র যেতে পারেন। তার চোখ ও মুখে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।

সিরাজ মুন্সী বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে হোটেলে ওঠা সেই ব্যক্তি বলেন, আমি কিছুই জানি না। থানার একজন অভিযোগ লিখেছে আমি টিপ সই দিয়েছি। আমি মামলা করতে রাজি না। এর আগে হোটেলে একজন পুলিশ পরিচয় আমাদের কাছে টাকা দাবি করেছে।

নির্যাতনের বিষয়ে সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম বলেন, আমার সঙ্গে তার (সিরাজ মুন্সী) দেখাই হয়নি। তাকে শারীরিক নির্যাতনের প্রশ্নই উঠে না। আমার বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি থানায় মামলা করেছেন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ওসি নির্যাতন করে থাকেন, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মাদারীপুরের আবাসিক হোটেল মালিককে ওসির মারধর

আপডেট সময় : ০৩:২৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯

মাদারীপুর প্রতিনিধি;

মাদারীপুর সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম একটি আবাসিক হোটেল মালিককে থানায় নিজ কক্ষে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার হোটেল মালিক সিরাজ মুন্সী বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার দাবি, মাসিক পনের হাজার টাকা চাঁদা দিতে না চাওয়ায় নির্যাতনের পাশাপাশি একটি সাজানো মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।

সিরাজ মুন্সী মাদারীপুর শহরের অবস্থিত সুমন আবাসিক হোটেলের মালিক। তিনি জানান, গত সোমবার রাতে মাদারীপুর পৌর শহরে অবস্থিত তার হোটেলে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে থাকতে আসেন শরিয়তপুর সদর উপজেলার এক শালি-দুলাভাই। ঘটনাটি জেনে রাতেই ওই হোটেল তল্লাশি করতে যান মাদারীপুর পুলিশের ডিএসবি শাখার সদস্য শহিদুল ইসলাম। এসময় তিনি দু’জনের কথায় অমিল খুঁজে পান। এক পর্যায় তারা নিজেদের সম্পর্কের কথা শিকার করেন। পরে পুলিশ সদস্য শহিদুল ইসলাম বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য ওই ব্যক্তিকে ৩০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বলেন। এ সময় হোটেলের মালিক সিরাজ মুন্সীকে টাকার বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেন এবং তাকে দাবিকৃত চাঁদার টাকা বিকাশের দোকান থেকে আনতে পাঠান ওই পুলিশ সদস্য। সিরাজ মুন্সী বিকাশের দোকান থেকে টাকা নিয়ে ফেরার সময় সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে।

সিরাজ মুন্সী বলেন, পরের দিন সকালে সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম আমাকে তার নিজ কক্ষে ডেকে নেন। এ সময় তিনি মাসিক ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে না চাইলে ওসি আমাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পর দিতে থাকেন। ওসির মারধরে আমার চোখে রক্ত জমাট বেধে যায়। এরপর ওসি হোটেলে ওঠা সেই ব্যক্তিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠান। এরপর আদালত আমাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জামিন দেন। পরে চোখের আঘাত গুরুতর হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হই।

তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ জুলাই ওসি মাদারীপুর সদর থানায় যোগ দেন। এরপর দুইবার আমাকে তার রুমে ডেকে মাসিক পনের হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি তাকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করেছি। তিনি তখন থেকেই আমার ওপরে ক্ষেপে আছেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার চাই।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবির হোসেন জানান, চোখের আঘাত বেশি হওয়ায় রোগীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। তিনি এখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে অধিকতর চিকিৎসার জন্যে অন্যত্র যেতে পারেন। তার চোখ ও মুখে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।

সিরাজ মুন্সী বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে হোটেলে ওঠা সেই ব্যক্তি বলেন, আমি কিছুই জানি না। থানার একজন অভিযোগ লিখেছে আমি টিপ সই দিয়েছি। আমি মামলা করতে রাজি না। এর আগে হোটেলে একজন পুলিশ পরিচয় আমাদের কাছে টাকা দাবি করেছে।

নির্যাতনের বিষয়ে সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম বলেন, আমার সঙ্গে তার (সিরাজ মুন্সী) দেখাই হয়নি। তাকে শারীরিক নির্যাতনের প্রশ্নই উঠে না। আমার বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি থানায় মামলা করেছেন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ওসি নির্যাতন করে থাকেন, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।