ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবিপ্রবিতে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন Logo গুচ্ছ খ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা উপকরণ ও সুপেয় পানি দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের সহযোগিতা Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক




করোনা বাস্তবতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০ ২২৯ বার পড়া হয়েছে
বৈশ্বিক ভাইরাস মহামারীতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্টস শিল্প। বর্তমান বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন দেশের তরুণ উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান….

এমন অস্বস্তিকর, থমথমে আর ভীতিকর পরিবেশের মধ্যেও আগামীকাল হতে পারে গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিকদের জন্য একটা বিশেষ দিন, আরো স্পষ্ট করে দিনটা সুখকর হতে পারে শুধুমাত্র BGMEA অন্তর্ভুক্ত ফ্যাক্টরিগুলোর জন্য। BGMEA সভাপতির প্রেসে বিভিন্ন সময়ের কথা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, আগামীকাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে অন্যান্য সেক্টরের সাথে গার্মেন্টস এর জন্য বিশেষ কিছু আসছে, হতে পারে নগদ অর্থ সহায়তা, ব্যাংক ঋণের সুদ কমানো বা মওকুফ সাথে ঋণের মেয়াদকাল বাড়ানো, রপ্তানির বিপরীতে প্রনোদনা বাড়ানো, বিদুৎ ও গ্যাস বিলে সহায়তা, LC ও ডলারের বিপরীতে বিশেষ সুবিধা সহ অনেককিছুই।এসব ঘোষণায় আবার হয়তো শিল্প ফিরে পাবে হারানো যৌবন, BGMEA এর অন্তর্ভুক্ত ফ্যাক্টরিগুলি কাটিয়ে উঠবে ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিলের মত বড়সড় ধাক্কা।
আমার প্রশ্ন হলো কি হবে আমাদের মত ছোটো ও মাঝারি গার্মেন্টসে?
আমাদের মত যাদের ব্যাক টু ব্যাক LC সুবিধা নাই, ধরেই নিতে হবে এসব শিল্প প্রায় শূন্য থেকে অথবা ২-৪ মেশিন থেকে শুরু করে কয়েকবছর অমানুষিক মেধা ও শ্রম খরচ করে এককথায় গায়ে খেয়ে এখন ১০০-২০০ বা ৩০০ মেশিনে পৌঁছাতে পেরেছি। বিগত কয়েক বছরের ছোটো ছোটো ইনকামের ফসল এই ভাড়া বিল্ডিংয়ের টাইলস, গ্লাসে মোড়া জানালা, ইমার্জেন্সি সিড়ি কিংবা ইলেকট্রিক স্টিম বয়লার, আর কাটিং টেবিল আর অব্যশই ১-২ টা করে কেনা মেশিনগুলো। FDR বা জমিজমার অভাবে LC বা CC সুবিধা কোনোটাই আর নেয়া হয়ে উঠেনি। ফ্যাক্টরি সাইজ ও ম্যান পাওয়ার বা অন্যান্য সুবিধা ও আকার বিবেচনা করে বিভিন্ন দেশের ছোটো ও খুব ছোটো ছোটো ব্রান্ড বা হোলসেলারই আমাদের ক্রেতা, আর তাদের দৌড় একটি অর্ডারের ৩০-৪০% এডভান্স TT। একটা অর্ডার শিপমেন্ট করে BLজমা করে ১০০% টাকা হাতে পেতে পেতে আরেকটি আর্ডারের অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যায়, যেখানে আগের কাজের ৮০- ১০০% এর সাথে নতুন কাজের ১০-২০% বা কোনো সময় শুধু ই মেইলের উপর ভিত্তি করে বাকি বকেয়া ও নিজের সক্ষমতা ব্যবহার করে নতুন কাজে লেগে পরি, নতুন কাজের TT এর অপেক্ষা করলে আবার ওদিকে ফ্যাক্টরি বসে যায়, এই বাস্তবতায় ক্রেতার চেয়ে অনেকগুন বেশী প্রোডাকশন তাড়া থাকে আমাদেরই। এটা ক্রেতা বুঝে এবং দিনের পর দিন তারা কোনো অগ্রীম টাকা ছাড়াই মাল শিপমেন্ট পর্যন্ত করে ফেলে। এই নির্মম বাস্তবতায় আমাদের মত শত শত ছোটো ফ্যাক্টরি কোনমতে চলে যাচ্ছিলো, উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতিতে গেল ১আসে বেশীরভাগ শিপমেন্ট পরে আছে বিভিন্ন দেশের সি পোর্ট, এয়ারপোর্ট বা ক্রেতার গোডাউনে। বিক্রি নেই, ফলে নেই নতুন অর্ডার বা পণ্য ছাড়ানোর তাড়াও নেই। পণ্য নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন যায়গায়, পচে যাচ্ছে আমাদের ইনভেস্ট সাথে আমাদের ভবিষ্যৎ।
আমরা যারা মাসে এক দেড় লাখ ডলার শিপমেন্ট করি, মাসে ১৫-২০ লাখ টাকা বেতন দেই, তারা আর কবে, কিভাবে সোজা হয়ে দাড়াবো একমাত্র ঐ বিশাল আকাশের মালিক ভালো জানেন। ক্রেতারা যে ভালো আছে তাও নয়, বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক যে অচলায়তন তৈরি হয়েছে এই অবস্থা কাটিয়ে আবার কবে প্রান্তিক ক্রেতা স্টোরে ফিরবে সেটাও ভাবনার বড় খোরাক।
এহেন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে একজন রবিনহুড দরকার যে কিনা গেল ৫-৭ বছরে গড়ে ওঠা এসব ফ্যাক্টরিগুলোর প্রতিনিধি হয়ে পৌছে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত, যেমনটা পেরেছেন BGMEA সভাপতি। তাদের প্রত্যেকের জন্য ১০০ টাকা করে সাহায্য বরাদ্দ দিলে ১০-২০ টাকা প্রাপ্য। হয়তো আমাদের কোনো সংগঠন নেই, নেই আমাদের সঠিক সংখ্যা কিন্তু বছর পর বছর যে সব শ্রমিক ও তাদের পরিবার আমাদের সাথে টিকে আছে তাদের রক্তের রং, চোখের ভাষা আর পেটের ক্ষুধার জ্বালা এক অভিন্ন, সেখানে আসলেই কোনো সংগঠনের দোহাই চলে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




করোনা বাস্তবতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে 

আপডেট সময় : ১০:৫৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০
বৈশ্বিক ভাইরাস মহামারীতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্টস শিল্প। বর্তমান বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন দেশের তরুণ উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান….

এমন অস্বস্তিকর, থমথমে আর ভীতিকর পরিবেশের মধ্যেও আগামীকাল হতে পারে গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিকদের জন্য একটা বিশেষ দিন, আরো স্পষ্ট করে দিনটা সুখকর হতে পারে শুধুমাত্র BGMEA অন্তর্ভুক্ত ফ্যাক্টরিগুলোর জন্য। BGMEA সভাপতির প্রেসে বিভিন্ন সময়ের কথা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, আগামীকাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে অন্যান্য সেক্টরের সাথে গার্মেন্টস এর জন্য বিশেষ কিছু আসছে, হতে পারে নগদ অর্থ সহায়তা, ব্যাংক ঋণের সুদ কমানো বা মওকুফ সাথে ঋণের মেয়াদকাল বাড়ানো, রপ্তানির বিপরীতে প্রনোদনা বাড়ানো, বিদুৎ ও গ্যাস বিলে সহায়তা, LC ও ডলারের বিপরীতে বিশেষ সুবিধা সহ অনেককিছুই।এসব ঘোষণায় আবার হয়তো শিল্প ফিরে পাবে হারানো যৌবন, BGMEA এর অন্তর্ভুক্ত ফ্যাক্টরিগুলি কাটিয়ে উঠবে ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিলের মত বড়সড় ধাক্কা।
আমার প্রশ্ন হলো কি হবে আমাদের মত ছোটো ও মাঝারি গার্মেন্টসে?
আমাদের মত যাদের ব্যাক টু ব্যাক LC সুবিধা নাই, ধরেই নিতে হবে এসব শিল্প প্রায় শূন্য থেকে অথবা ২-৪ মেশিন থেকে শুরু করে কয়েকবছর অমানুষিক মেধা ও শ্রম খরচ করে এককথায় গায়ে খেয়ে এখন ১০০-২০০ বা ৩০০ মেশিনে পৌঁছাতে পেরেছি। বিগত কয়েক বছরের ছোটো ছোটো ইনকামের ফসল এই ভাড়া বিল্ডিংয়ের টাইলস, গ্লাসে মোড়া জানালা, ইমার্জেন্সি সিড়ি কিংবা ইলেকট্রিক স্টিম বয়লার, আর কাটিং টেবিল আর অব্যশই ১-২ টা করে কেনা মেশিনগুলো। FDR বা জমিজমার অভাবে LC বা CC সুবিধা কোনোটাই আর নেয়া হয়ে উঠেনি। ফ্যাক্টরি সাইজ ও ম্যান পাওয়ার বা অন্যান্য সুবিধা ও আকার বিবেচনা করে বিভিন্ন দেশের ছোটো ও খুব ছোটো ছোটো ব্রান্ড বা হোলসেলারই আমাদের ক্রেতা, আর তাদের দৌড় একটি অর্ডারের ৩০-৪০% এডভান্স TT। একটা অর্ডার শিপমেন্ট করে BLজমা করে ১০০% টাকা হাতে পেতে পেতে আরেকটি আর্ডারের অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যায়, যেখানে আগের কাজের ৮০- ১০০% এর সাথে নতুন কাজের ১০-২০% বা কোনো সময় শুধু ই মেইলের উপর ভিত্তি করে বাকি বকেয়া ও নিজের সক্ষমতা ব্যবহার করে নতুন কাজে লেগে পরি, নতুন কাজের TT এর অপেক্ষা করলে আবার ওদিকে ফ্যাক্টরি বসে যায়, এই বাস্তবতায় ক্রেতার চেয়ে অনেকগুন বেশী প্রোডাকশন তাড়া থাকে আমাদেরই। এটা ক্রেতা বুঝে এবং দিনের পর দিন তারা কোনো অগ্রীম টাকা ছাড়াই মাল শিপমেন্ট পর্যন্ত করে ফেলে। এই নির্মম বাস্তবতায় আমাদের মত শত শত ছোটো ফ্যাক্টরি কোনমতে চলে যাচ্ছিলো, উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতিতে গেল ১আসে বেশীরভাগ শিপমেন্ট পরে আছে বিভিন্ন দেশের সি পোর্ট, এয়ারপোর্ট বা ক্রেতার গোডাউনে। বিক্রি নেই, ফলে নেই নতুন অর্ডার বা পণ্য ছাড়ানোর তাড়াও নেই। পণ্য নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন যায়গায়, পচে যাচ্ছে আমাদের ইনভেস্ট সাথে আমাদের ভবিষ্যৎ।
আমরা যারা মাসে এক দেড় লাখ ডলার শিপমেন্ট করি, মাসে ১৫-২০ লাখ টাকা বেতন দেই, তারা আর কবে, কিভাবে সোজা হয়ে দাড়াবো একমাত্র ঐ বিশাল আকাশের মালিক ভালো জানেন। ক্রেতারা যে ভালো আছে তাও নয়, বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক যে অচলায়তন তৈরি হয়েছে এই অবস্থা কাটিয়ে আবার কবে প্রান্তিক ক্রেতা স্টোরে ফিরবে সেটাও ভাবনার বড় খোরাক।
এহেন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে একজন রবিনহুড দরকার যে কিনা গেল ৫-৭ বছরে গড়ে ওঠা এসব ফ্যাক্টরিগুলোর প্রতিনিধি হয়ে পৌছে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত, যেমনটা পেরেছেন BGMEA সভাপতি। তাদের প্রত্যেকের জন্য ১০০ টাকা করে সাহায্য বরাদ্দ দিলে ১০-২০ টাকা প্রাপ্য। হয়তো আমাদের কোনো সংগঠন নেই, নেই আমাদের সঠিক সংখ্যা কিন্তু বছর পর বছর যে সব শ্রমিক ও তাদের পরিবার আমাদের সাথে টিকে আছে তাদের রক্তের রং, চোখের ভাষা আর পেটের ক্ষুধার জ্বালা এক অভিন্ন, সেখানে আসলেই কোনো সংগঠনের দোহাই চলে না।