ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চাকুরীচ্যুত প্রকৌশলী নাসির বহাল তবিয়তে পায়রা বন্দরে: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের ব্যর্থতা ছিল’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯ ৫০ বার পড়া হয়েছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক;
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের পদ্ধতিগত ব্যর্থতা ছিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ‘সুরক্ষার দায়-দায়িত্ব (আরটুপি) এবং গণহত্যা প্রতিরোধ, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ : মহাসচিবের রিপোর্ট’ বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আয়োজিত প্লেনারি আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে গুয়েতেমালার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গার্ট রোজেনথাল প্রণীত ‘মিয়নামারে ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত জাতিসংঘের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত’ শীর্ষক সাম্প্রতিক রিপোর্টের উদ্ধৃতি দেন রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর যে বিভৎস সহিংসতা হয়েছে তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তথ্যপ্রযুক্তিগত সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও পূর্ব সতর্কতা নিরূপণের মতো বিষয়ে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠান পূর্ব সতর্কতা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটি ছিল ব্যাপক ও গভীর, এটি হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এখানে পূর্ব সতর্কতা চিহ্ন প্রাপ্তির কোনো ঘাটতি থাকার কথা নয়, কিন্তু সময়োপযোগী পদক্ষেপের ঘাটতি ছিল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে তা রোজেনথালের সাম্প্রতিক রিপোর্টে স্পস্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত মাসুদ রোজেনথালের রিপোর্টের অংশ বিশেষ উদ্ধৃতি করে বলেন, ‘এটি অবশ্যই বলা যেতে পারে যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ সদরদফতরের যখন বিশেষ সমর্থন ও ধারাবাহিক সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল তখন নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘের সমন্বিত ব্যবস্থা যথেষ্ট সমর্থন যোগাতে ব্যর্থ হয়েছে, আর তাই এ দায়ের অংশবিশেষ এ সকল প্রতিষ্ঠানের ওপর অনেকাংশ বর্তায়।’

রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় ও সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদারতার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘ভয়াবহ নির্যাতন ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার দৃশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন অসহায়ের মতো চেয়ে চেয়ে দেখছে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গাদের প্রতি এই উদারতা প্রদর্শনের জন্য মাদার অব হিউম্যানিটি নামে খ্যাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে যদি ভাগ্য বিড়ম্বিত অসহায় এই জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় না দিতেন তাহলে তাদের যাওয়ার আর কোনো যায়গা ছিল না।’

এ জাতীয় বর্বরোচিত ঘটনার দায়-দায়িত্ব নিরূপণ বিষয়ক আরটুপি’র স্তম্ভ-২ ও স্তম্ভ-৩ এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

তিনি আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গা বিষয়ে ব্যর্থ হতে পারি না। এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমারে এবং এর সমাধান মিয়ানমারেই নিহিত। মর্যাদা ও নিরাপত্তার সাথে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মিয়ানমারকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

‘সুরক্ষার দায়-দায়িত্ব (আরটুপি) এবং গণহত্যা প্রতিরোধ, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ ৭৩তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিজ্ মারিয়া ফার্নান্দে এস্পিনোসা গার্সেজ ও জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট (জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে) এ সভার উদ্বোধনীতে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ৭০টিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্র এই প্লেনারি আলোচনায় বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের ব্যর্থতা ছিল’

আপডেট সময় : ১২:০০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯

কূটনৈতিক প্রতিবেদক;
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের পদ্ধতিগত ব্যর্থতা ছিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ‘সুরক্ষার দায়-দায়িত্ব (আরটুপি) এবং গণহত্যা প্রতিরোধ, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ : মহাসচিবের রিপোর্ট’ বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আয়োজিত প্লেনারি আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে গুয়েতেমালার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী গার্ট রোজেনথাল প্রণীত ‘মিয়নামারে ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত জাতিসংঘের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত’ শীর্ষক সাম্প্রতিক রিপোর্টের উদ্ধৃতি দেন রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর যে বিভৎস সহিংসতা হয়েছে তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তথ্যপ্রযুক্তিগত সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও পূর্ব সতর্কতা নিরূপণের মতো বিষয়ে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠান পূর্ব সতর্কতা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটি ছিল ব্যাপক ও গভীর, এটি হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এখানে পূর্ব সতর্কতা চিহ্ন প্রাপ্তির কোনো ঘাটতি থাকার কথা নয়, কিন্তু সময়োপযোগী পদক্ষেপের ঘাটতি ছিল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে জাতিসংঘ ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে তা রোজেনথালের সাম্প্রতিক রিপোর্টে স্পস্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত মাসুদ রোজেনথালের রিপোর্টের অংশ বিশেষ উদ্ধৃতি করে বলেন, ‘এটি অবশ্যই বলা যেতে পারে যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ সদরদফতরের যখন বিশেষ সমর্থন ও ধারাবাহিক সহযোগিতা প্রয়োজন ছিল তখন নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘের সমন্বিত ব্যবস্থা যথেষ্ট সমর্থন যোগাতে ব্যর্থ হয়েছে, আর তাই এ দায়ের অংশবিশেষ এ সকল প্রতিষ্ঠানের ওপর অনেকাংশ বর্তায়।’

রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় ও সহযোগিতা প্রদানে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদারতার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘ভয়াবহ নির্যাতন ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার দৃশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন অসহায়ের মতো চেয়ে চেয়ে দেখছে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গাদের প্রতি এই উদারতা প্রদর্শনের জন্য মাদার অব হিউম্যানিটি নামে খ্যাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে যদি ভাগ্য বিড়ম্বিত অসহায় এই জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় না দিতেন তাহলে তাদের যাওয়ার আর কোনো যায়গা ছিল না।’

এ জাতীয় বর্বরোচিত ঘটনার দায়-দায়িত্ব নিরূপণ বিষয়ক আরটুপি’র স্তম্ভ-২ ও স্তম্ভ-৩ এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

তিনি আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গা বিষয়ে ব্যর্থ হতে পারি না। এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমারে এবং এর সমাধান মিয়ানমারেই নিহিত। মর্যাদা ও নিরাপত্তার সাথে রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মিয়ানমারকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

‘সুরক্ষার দায়-দায়িত্ব (আরটুপি) এবং গণহত্যা প্রতিরোধ, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নির্মূল ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ ৭৩তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিজ্ মারিয়া ফার্নান্দে এস্পিনোসা গার্সেজ ও জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট (জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে) এ সভার উদ্বোধনীতে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ৭০টিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্র এই প্লেনারি আলোচনায় বক্তব্য রাখেন।