ঢাকা ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo Регистрация 1win Войдите В Систему 1win И Откройте Счет В Этой мировой Букмекерской Контор Logo Эффективные Стратегии%2C Тактики И Схемы а Aviato Logo বার কাউন্সিলের ভুয়া সনদ বিক্রির মাস্টারমাইন্ড সহকারী পরিচালক জলিল! Logo চবি’ প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্র সমিতি কুয়েসা’র সভাপতি আব্দুল্লাহ সম্পাদক আগা আজিজ  Logo স্বৈরাচার সরকারের দোসর বিসিক কর্মকর্তা সরোয়ার: দুর্নীতিতে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড় Logo শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা মোজাম্মেলকে ফায়ার সার্ভিসে বহাল রাখতে মরিয়া সিন্ডিকেট Logo Logo স্বৈরাচার সরকারের দোসর সিন্ডিকেট ফায়ার সার্ভিসে বহাল তবিয়তে Logo উত্তরার আতংক ছোটন পুলিশের খাঁচায় Logo বিশ্ব কন্যা শিশু দিবসে নেলসন ম্যান্ডেলা পিস এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক এম শিমুল খান




যশোরে পুলিশের কাণ্ড-জেলের ঘানি টানছেন নিরপরাধ সবুজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

যশোর প্রতিনিধি;
যশোর সদরের চাঁচড়া বেড়বাড়ি গ্রামের মিঠু শেখ হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে চার্জশিটভুক্ত আসামি জনি ওরফে কালো জনির বিরুদ্ধে। জনি পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গা-ধর্মতলা রেলগেট এলাকার খায়রুল ইসলামের ছেলে। কিন্তু ওই মামলায় তিন মাস ধরে কারাবাস করছেন প্রতিবেশী ট্রাকচালক সবুজ বিশ্বাস। পলাতক জনির বাবার নামের সঙ্গে সবুজের বাবার নামের মিল থাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সবুজকে আটক করে জনি বলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

নিরপরাধ ছেলের মুক্তির জন্য তিন মাস ধরে পুলিশের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো ফল না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন সবুজের বাবা খায়রুল ইসলাম বিশ্বাস। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সবুজের বাবার অভিযোগ আমলে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২২ মে সবুজ ও মামলার বাদী নিহত মিঠুর ভাই ইস্রাফিল শেখসহ তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

২০০৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পুলেরহাট বাজার থেকে মিঠু শেখকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায় তফসিডাঙ্গার ইসমাইল ও খোলাডাঙ্গা-ধর্মতলার জনি। পরদিন আরিচপুর বিলের হলুদ ক্ষেতের মধ্যে মিঠুর লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই ইস্রাফিল বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটভুক্ত ৫ নম্বর আসামি হলো জনি (২৬)। মামলাটি বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন আছে। জনি পলাতক থাকায় এ আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

সবুজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, পুলিশ সবুজকে জনি নামে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। সবুজ যে জনি নয়, তার প্রমাণ হিসেবে আদালতে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র জমা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

সবুজের বাবা খাইরুল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, তার ছেলে সবুজ পেশায় ট্রাকচালক। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানা পুলিশ তার নামে ওয়ারেন্ট আছে বলে আটক করে নিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তাকে মিঠু শেখ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি জনি হিসেবে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে বারবার বলেও সবুজ যে জনি নয়- সেটা বিশ্বাস করাতে পারিনি।

তবে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানায় সবুজকে আটককারী যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই সোহেল রানা দাবি করেন, আটকের সময় সে নিজের নাম জনি বলে জানায়। স্থানীয়রাও তাকে এ নামে চেনে বলেও তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তাই বিধি অনুযায়ী গ্রেফতারি পরোয়ানায় তাকে আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে সবুজের প্রতিবেশীরা জানায়, পুলিশের হাতে আটক হওয়া সবুজ হত্যা মামলার আসামি নয়। প্রকৃত আসামি কালোজনিকে আটক না করে পুলিশ তার পরিবর্তে সবুজকে কারাগারে পাঠিয়েছে। সবুজের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে জানান স্থানীয় আরবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামও।

মামলার বাদী ইস্রাফিল শেখ কলেন, তার ভাইয়ের খুনের আসামি জনি। তবে আটক যুবক জনি না সবুজ সেটা তিনি জানেন না।

এর আগেও এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। যশোরে শিরিন বেগম নামে এক নারীকে মাদক মামলায় আদালত সাজা দেওয়ার পর তার পরিবর্তে রেখা খাতুন নামে অপর এক নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছিল। গত ৪ এপ্রিল আদালতের নির্দেশে মুক্তি পায় রেখা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




যশোরে পুলিশের কাণ্ড-জেলের ঘানি টানছেন নিরপরাধ সবুজ

আপডেট সময় : ১০:৪৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯

যশোর প্রতিনিধি;
যশোর সদরের চাঁচড়া বেড়বাড়ি গ্রামের মিঠু শেখ হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে চার্জশিটভুক্ত আসামি জনি ওরফে কালো জনির বিরুদ্ধে। জনি পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গা-ধর্মতলা রেলগেট এলাকার খায়রুল ইসলামের ছেলে। কিন্তু ওই মামলায় তিন মাস ধরে কারাবাস করছেন প্রতিবেশী ট্রাকচালক সবুজ বিশ্বাস। পলাতক জনির বাবার নামের সঙ্গে সবুজের বাবার নামের মিল থাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সবুজকে আটক করে জনি বলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

নিরপরাধ ছেলের মুক্তির জন্য তিন মাস ধরে পুলিশের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো ফল না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন সবুজের বাবা খায়রুল ইসলাম বিশ্বাস। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সবুজের বাবার অভিযোগ আমলে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২২ মে সবুজ ও মামলার বাদী নিহত মিঠুর ভাই ইস্রাফিল শেখসহ তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

২০০৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পুলেরহাট বাজার থেকে মিঠু শেখকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায় তফসিডাঙ্গার ইসমাইল ও খোলাডাঙ্গা-ধর্মতলার জনি। পরদিন আরিচপুর বিলের হলুদ ক্ষেতের মধ্যে মিঠুর লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই ইস্রাফিল বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটভুক্ত ৫ নম্বর আসামি হলো জনি (২৬)। মামলাটি বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন আছে। জনি পলাতক থাকায় এ আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

সবুজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, পুলিশ সবুজকে জনি নামে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। সবুজ যে জনি নয়, তার প্রমাণ হিসেবে আদালতে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র জমা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

সবুজের বাবা খাইরুল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, তার ছেলে সবুজ পেশায় ট্রাকচালক। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানা পুলিশ তার নামে ওয়ারেন্ট আছে বলে আটক করে নিয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তাকে মিঠু শেখ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি জনি হিসেবে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে বারবার বলেও সবুজ যে জনি নয়- সেটা বিশ্বাস করাতে পারিনি।

তবে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানায় সবুজকে আটককারী যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই সোহেল রানা দাবি করেন, আটকের সময় সে নিজের নাম জনি বলে জানায়। স্থানীয়রাও তাকে এ নামে চেনে বলেও তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তাই বিধি অনুযায়ী গ্রেফতারি পরোয়ানায় তাকে আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে সবুজের প্রতিবেশীরা জানায়, পুলিশের হাতে আটক হওয়া সবুজ হত্যা মামলার আসামি নয়। প্রকৃত আসামি কালোজনিকে আটক না করে পুলিশ তার পরিবর্তে সবুজকে কারাগারে পাঠিয়েছে। সবুজের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে জানান স্থানীয় আরবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামও।

মামলার বাদী ইস্রাফিল শেখ কলেন, তার ভাইয়ের খুনের আসামি জনি। তবে আটক যুবক জনি না সবুজ সেটা তিনি জানেন না।

এর আগেও এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। যশোরে শিরিন বেগম নামে এক নারীকে মাদক মামলায় আদালত সাজা দেওয়ার পর তার পরিবর্তে রেখা খাতুন নামে অপর এক নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছিল। গত ৪ এপ্রিল আদালতের নির্দেশে মুক্তি পায় রেখা।