হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে

- আপডেট সময় : ০৮:৪৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জন্ডিসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বাড়ছে। এ ঝুঁকি এড়াতে পানি পানে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে হেপাটোলজি সোসাইটি আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এই অভিমত জানানো হয়েছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মবিন খান। এতে প্রবন্ধ পাঠ করেন বারডেম হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও সোসাইটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডা. গোলাম আজম ও বিএসএমএম ইউর লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফুল ইসলাম এলিন ও ডা. মো. শাহিনুল আলম।
অধ্যাপক মবিন খানের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে হেপাটাইটিস ই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে, যা বাংলাদেশে জন্ডিস হিসেবে পরিচিত। গত বছর এই সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরীতেও হেপাটাইটিস ই ভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এবং কয়েকজনের প্রাণহানীও ঘটেছে।
বছরের এ সময় বৃষ্টির কারণে শহর এলাকায় পানি সরবরাহ দূষিত হওয়া শঙ্কা বেড়ে যায়। আবার গরমের কারণে মানুষের যত্রতত্র অনিরাপদ পানি, শরবত গ্রহণের প্রবণতা বেড়ে যায়। আর এ বছর গরমের মাঝে রমজানে এ শঙ্কা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। আর জন্ডিসের প্রকোপ গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বেশি। বাংলাদেশে জন্ডিসের মূল কারণ হেপাটাইটিস ই ভাইরাস। হেপাটাইটিস ই ভাইরাস পানিবাহিত জীবানু। বৃষ্টির সময়ে শহরে সুয়ারেজ লাইন থেকে পানির লাইন দূষিত হয়।
২০০৪ সালে বন্যার পর ঢাকা শহরে ব্যাপক আকারে একিউট ই ভাইরাল হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক ছাত্র আক্রান্ত হয়। এমনকি এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে একিউট ভাইরাল হেপাটাইটিসের (জন্ডিসের) কারণ শতকরা ৫০-৭০ ভাগ ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস ই ভাইরাস। আক্রান্তদের তিন চতুর্থাংশই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠি (২০-৫৫ বছর)। একবার আক্রান্ত হলে ১৫ থেকে ৪৫ দিন বিশ্রাম নিতে হয়। সাধারণভাবে মৃত্যুর হার শতকরা ১ ভাগের কম। কিন্তু গর্ভবর্তী মায়েররা আক্রান্ত হলে মৃত্যুর হার ৮০ শতাংশ।
হেপাটোলজি সোসাইটি চলতি মৌসুমে আতঙ্কিত না হয়ে হেপাটাইটিস ই ভাইরাস প্রতিরোধে নগরবাসীকে ৬টি পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে-
১. বিশুদ্ধ পানি পান ও ব্যবহার নিশ্চিত করা। পানি ৩০ মিনিট ফুটিয়ে অথবা বিশুদ্ধ করে পান করা।
২. হোটেলে, ঘরে বাসি খাবার বর্জন।
৩. রাস্তার খোলা জায়গার শরবত, খাবার বর্জন।
৪. খাওয়ার আগে ও মল ত্যাগের পরে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়া।
৫. বাসার পানির ট্যাংক ৪ মাস পর পর ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি দিয়ে পরিষ্কার করা।
৬. চোখ হলুদ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।