ঢাকা ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও বহাল পায়রা বন্দর প্রকৌশলী নাছির: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




বাকশাল বিতর্ক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০১৯ ৯২ বার পড়া হয়েছে

শেখ মুজিবুর রহমান: লন্ডনের ক্ল্যারিজে’স হোটেলে ১৯৭২ সালের ৮ই জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন।
বাংলাদেশের সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ২৪শে জানুয়ারি।

তখন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর বাকশালকে দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে ঘোষণা করে তা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সমালোচকদের মতে, কয়েকটি কারণে বাকশাল এত বিতর্কিত ছিল:

১. এক দলীয় শাসনব্যবস্থা, বিরোধিতার কোন অবকাশ নেই।

২. গণমাধ্যম সম্পূর্ণ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে।

৩. রাষ্ট্র, সরকার এবং দল একত্রিত।

৪. সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বিচারক, আমলা দলের সদস্য।

সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী

শেখ মুজিব হত্যার পর জেনারেল জিয়া যে মন্তব্য করেছিলেন

যেভাবে পিতার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনেছিলেন হাসিনা

শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড: রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কী ছিল?

আওয়ামী লীগ কী বলছে?

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলছেন বাকশাল কোনো একদল বা একনায়কতন্ত্র ছিলোনা।

“সকল দলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা প্লাটফরম করেছিলেন। সেটা হচ্ছে বাকশাল।,” তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন।

”একটা সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ওপর ভিত্তি করে এটা করা হয়েছিল।জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে উন্নয়ন এগিয়ে যেতে পারে, সেই ধারণা নিয়ে এই কনসেপ্ট তৈরি করা হয়েছিল।কিন্তু তা নিয়ে এমনভাবে একটা প্রচারণা ছিল যে বাকশাল মনে হয় একটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।এমন প্রচারণা চালানো হয়েছিল,” মি. আলম বলেন।

সমালোচকরা কী বলছেন?
লেখক গবেষক বদরুদ্দিন উমর বিবিসি বাংলাকে বলছেন বাকশাল ছিলো একেবারেই একনায়কতন্ত্রের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

“সেনা পুলিশ বিচারক সব পার্টির মেম্বার-এটা তো আগে কখনো দেখা যায়নি। সবাইকে এক দল করতে হবে। কিংবা আর কোনো দল থাকবেনা। এটিও তো এদেশের মানুষ আগে দেখেনি”।

তিনি বলেন তখন সবাইকে বাধ্য করা হচ্ছিলো বাকশালে যোগ দিতে এবং অনেকেই বাধ্য হয়েছেন।

“ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই এ ধরণের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো”।

স্বৈরাচার নাকিবৈপ্লবিক পরিবর্তন?

কিন্তু ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন বাকশাল নিয়ে সবসময় অপপ্রচারই হয়েছে।

“বাকশালকে বোঝানো হয়েছে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসন কিন্তু এটা একদল নয় বরং তৎকালীন পরিস্থিতিতে অভিন্ন জাতীয় মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এটা সাময়িক ব্যবস্থা – কিন্তু পরে দীর্ঘকাল ধরে নেতিবাচক প্রচারণাই হয়েছে”।

তিনি বলেন তখন কাউকে বাকশালে যোগ দিতে চাপ দেয়া হয়নি বরং অনেকেই স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছে।

“আমলা সেনাবাহিনী সবাইকে এক মঞ্চে আসতে বলা হয়েছিলো, দলে নয়। কিন্তু এগুলো নিয়ে অপপ্রচার আর ভুল ব্যাখ্যার কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে”।

তার মতে বাকশালই প্রথম বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার সুযোগ তৈরি করেছিলো কিন্তু বাকশাল ব্যবস্থা টিকে ছিলো মাত্র ২৩২ দিন।

সে বছর ১৫ই অগাস্ট একদল সেনা অফিসার শেখ মুজিব এবং তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যা করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বাকশাল বিতর্ক

আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০১৯

শেখ মুজিবুর রহমান: লন্ডনের ক্ল্যারিজে’স হোটেলে ১৯৭২ সালের ৮ই জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন।
বাংলাদেশের সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ২৪শে জানুয়ারি।

তখন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর বাকশালকে দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে ঘোষণা করে তা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সমালোচকদের মতে, কয়েকটি কারণে বাকশাল এত বিতর্কিত ছিল:

১. এক দলীয় শাসনব্যবস্থা, বিরোধিতার কোন অবকাশ নেই।

২. গণমাধ্যম সম্পূর্ণ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে।

৩. রাষ্ট্র, সরকার এবং দল একত্রিত।

৪. সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বিচারক, আমলা দলের সদস্য।

সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী

শেখ মুজিব হত্যার পর জেনারেল জিয়া যে মন্তব্য করেছিলেন

যেভাবে পিতার হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনেছিলেন হাসিনা

শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড: রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কী ছিল?

আওয়ামী লীগ কী বলছে?

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলছেন বাকশাল কোনো একদল বা একনায়কতন্ত্র ছিলোনা।

“সকল দলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা প্লাটফরম করেছিলেন। সেটা হচ্ছে বাকশাল।,” তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন।

”একটা সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ওপর ভিত্তি করে এটা করা হয়েছিল।জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে উন্নয়ন এগিয়ে যেতে পারে, সেই ধারণা নিয়ে এই কনসেপ্ট তৈরি করা হয়েছিল।কিন্তু তা নিয়ে এমনভাবে একটা প্রচারণা ছিল যে বাকশাল মনে হয় একটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।এমন প্রচারণা চালানো হয়েছিল,” মি. আলম বলেন।

সমালোচকরা কী বলছেন?
লেখক গবেষক বদরুদ্দিন উমর বিবিসি বাংলাকে বলছেন বাকশাল ছিলো একেবারেই একনায়কতন্ত্রের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

“সেনা পুলিশ বিচারক সব পার্টির মেম্বার-এটা তো আগে কখনো দেখা যায়নি। সবাইকে এক দল করতে হবে। কিংবা আর কোনো দল থাকবেনা। এটিও তো এদেশের মানুষ আগে দেখেনি”।

তিনি বলেন তখন সবাইকে বাধ্য করা হচ্ছিলো বাকশালে যোগ দিতে এবং অনেকেই বাধ্য হয়েছেন।

“ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই এ ধরণের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো”।

স্বৈরাচার নাকিবৈপ্লবিক পরিবর্তন?

কিন্তু ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন বাকশাল নিয়ে সবসময় অপপ্রচারই হয়েছে।

“বাকশালকে বোঝানো হয়েছে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসন কিন্তু এটা একদল নয় বরং তৎকালীন পরিস্থিতিতে অভিন্ন জাতীয় মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এটা সাময়িক ব্যবস্থা – কিন্তু পরে দীর্ঘকাল ধরে নেতিবাচক প্রচারণাই হয়েছে”।

তিনি বলেন তখন কাউকে বাকশালে যোগ দিতে চাপ দেয়া হয়নি বরং অনেকেই স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছে।

“আমলা সেনাবাহিনী সবাইকে এক মঞ্চে আসতে বলা হয়েছিলো, দলে নয়। কিন্তু এগুলো নিয়ে অপপ্রচার আর ভুল ব্যাখ্যার কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে”।

তার মতে বাকশালই প্রথম বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার সুযোগ তৈরি করেছিলো কিন্তু বাকশাল ব্যবস্থা টিকে ছিলো মাত্র ২৩২ দিন।

সে বছর ১৫ই অগাস্ট একদল সেনা অফিসার শেখ মুজিব এবং তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যা করে।