ভারপ্রাপ্ত ভারে নুয়ে চলছে গণপূর্ত:
গণপূর্তে পীরের কেরামতি: পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রধান প্রকৌশলী চেয়ারে বহাল!

- আপডেট সময় : ০৫:৪৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক: গণপূর্ত অধিদপ্তরে চলছে পীর সাহেবের কেরামতি। এজন্য আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের থেকেও আশ্চর্য। প্রেসিডেন্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হয়ে বসেছিলেন প্রধান পুরকৌশলীর চেয়ারে। সরকারের নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে ভাগাভাগিতে বিরোধ হওয়ার পর শেখ হাসিনা সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাকে। সেসময় খোদ প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে ভন্ড পীর হিসেবে আখ্যায়িত করে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পীরের কেরামতিতে বাদ সেধেছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার কারণেই বেঁচে যান গণপূর্তির প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার। সেই থেকে গণপূর্ত পীর সাহেবের কেরামতি চলমান। একাধিক মেয়াদে একই চেয়ারে বসা চলতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী। শেখ হাসিনা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার সবখানেই তার শক্তিশালী লবিং। তিনিই যেন দেশের একমাত্র প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসার যোগ্য ব্যক্তি, ফ্যাসিস্ট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার পরেও চলতি দায়িত্বে রয়েছেন বহালতবিয়াতে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রায় চার বছর ধরে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার নিজেকে পীর এবং পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিলেও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের তদন্তে তার বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রমান পেয়েছে। মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মনিটরিং) মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুলকে আহবায়ক করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রায় এক বছর আগে তদন্ত প্রতিবেদন সচিবের কাছে জমা দিলেও প্রধান প্রকৌশলী নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সরকারের ঘনিস্ট হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে তদন্ত প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। একারনে মন্ত্রনালয়ের তদন্তে দূর্নীতি প্রমান হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হওয়ায় মন্ত্রীদের সঙ্গে তার সুম্পর্কের কারনে প্রভাব বিস্তার করে মেধা তালিকায় ৭ নম্বরে থাকার পরও ৬ জনকে ডিঙ্গিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর চলতি দায়িত্ব পান শামীম আখতার। অথচ বিসিএস (পাবলিক ওয়ার্কস) ক্যাডারের মেধা তালিকার প্রথম স্থানে থাকা আশরাফুল আলম এর বাড়ি বগুড়া হওয়ার কারনে প্রধান প্রকৌশলী পদে দায়িত্ব পাওয়ার কয়েক মাস পরেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ৬ জনকে ডিঙ্গিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শামীম আখতারকে। প্রায় চার বছর ধরে তিনি গুরুত্বপূর্ন (গ্রেড-১) এই পদে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারকে ঘিরে অতিরিক্ত প্রধাক প্রকৌশলী শহৗদুল আলম ও কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট টেন্ডার ও পোস্টিং বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। মোহাম্মদ শামীম আখতার হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনষ্টিটিউটের মহাপরিচালক থাকাকালিন সময়ে তার পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংডম বিল্ডার্সসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ ভাবে কার্যাদেশ দেওয়াসহ কোটি কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় অতিরিক্ত সচিব (মনিটরিং) মো. আশফাকুল ইসলাম বাবুলকে আহবায়ক করে দুইজন যুগ্ম সচিবকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি তদন্ত করে অভিযোগগুলোর মধ্যে তিনটি অভিযোগের প্রমান পায়। প্রায় এক বছর আগে তদন্ত প্রতিবেদন সচিবের কাছে জমা দিলেও প্রধান প্রকৌশলী প্রভাব বিস্তার করে তদন্ত প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এইচবিআরআইয়ের গবেষণা খাতে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। গবেষণা খাতের এ টাকা থেকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকায় ‘অটোমেটিক ব্লক মেকিং প্লান্ট’ স্থাপন করা হয়। এ কাজও পায় কিংডম বিল্ডার্স। ঠিকাদারকে সব বিল প্রদান করা হলেও প্ল্যান্টটির কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এ ধরনের কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংস্থার অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রকৌশলীদের নিয়ে কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও সে ধরনের কোন কমিটিই হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে শামীম আখতারের বক্তব্য, তাঁর দাখিলকৃত কাগজপত্র এবং সংশ্লিষ্ট অফিসে রক্ষিত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদার কর্তৃক সকল যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং কাঠামো নির্মাণ করা হলেও কার্যত: এটি পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। সকল মেশিনারিজ স্থাপন করার পর প্লান্টটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য প্রাথমিকভাবে প্লান্টটি চালু করা হলে কিছু ত্রুটি দেখা দেয় এবং মানসম্পন্ন প্রোডাক্ট পাওয়া যাচ্ছিল না। চীন থেকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ প্রকৌশলী এনে বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেয়া হলে চীনে সে সময়ে চলমান গুরুতর কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে তাঁদেরকে আনা সম্ভব হয়নি।
নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলেও প্লান্টটি সম্পূর্ণরূপে চালু অবস্থায় বুঝে না পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বরাবরে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে কোন কারিগরী কমিটি কর্তৃক বাস্তবায়ন প্রতিবেদন নেয়া হয়নি। প্রাপ্ত তথ্যমতে একই সময়ে প্লান্টটির মান উন্নয়নের জন্য ৭০ (সত্তর) লক্ষ টাকার অপর একটি প্রকল্প চলমান থাকায় এবং একই প্রতিষ্ঠান তা বাস্তবায়নে কাজ করতে থাকায় আগের প্রকল্পটির সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় প্লান্টটির যন্ত্রপাতিগুলো সম্পূর্ণ অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে এবং এর বিভিন্ন অংশে মরিচা ধরে মূল্যবান এ সব যন্ত্রপাতি বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত যন্ত্রপাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সার্বিক পর্যালোচনায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে ফাংশনাল অবস্থায় বুঝিয়ে না দেয়া স্বত্ত্বেও উক্ত প্রকল্পটির সম্পূর্ণ বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি মর্মে দেখা যায়। অর্থাৎ প্রকল্পটির টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম না হলেও বিল পরিশোধে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। তাছাড়া জনাব শামীম আখতারের বদলির পর পরবর্তীতে বর্ণিত প্লান্টটির বিষয়ে কোন কার্যক্রমই গ্রহণ করা না হওয়ায় প্লান্টটির মেশিনারিজ অযতেœ অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় প্লান্টটির ক্ষতি হচ্ছে মর্মে তদন্ত কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
উপরোল্লিখিত প্ল্যান্টের শেড নির্মাণের জন্য ৭০ লাখ টাকার কাজে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই কিংডম বির্ধাসকে নিযুক্ত করা হয়। অর্ধকোটি টাকার কাজ আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর্থি এন্টারপ্রাইজকে দেয়া হয় যার মালিক আল আমীন ও শামীম আখতারের (পীর সাহেবের) মুরিদ। সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ই-জিপি এর উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৭০ লক্ষ টাকার প্রকল্পটির টেন্ডার করা হয়। তবে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের হলেও নথিতে রক্ষিত চুক্তিপত্রটি ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয়েছে মর্মে দেখা যায়। এতে প্রতীয়মান হয় যে চুক্তিপত্রটি যথাসময়ে স্বাক্ষর না করে পরবর্তীতে করা হয়েছে। অর্থাৎ উক্ত প্রকল্পটি চুক্তি স্বাক্ষর না করেই বা¯তবায়ন শুরু করা হয়েছে। তাছাড়া অভিযোগে বর্ণিত অর্ধকোটি টাকার আরেকটি কাজের তথ্য বিশ্লেষণে মনে হয় ঈড়হংঃৎঁপঃরড়হ ড়ভ ঝঃববষ ঝযবফ ড়ভ অঁঃড়সধঃরপ ধহফ ঝবসর অঁঃড়সধঃরপ ইষড়পশ গধশরহম চষধহঃ ড়ভ ঐইজও এর কথা বলা হয়েছে; এটি একটি পৃথক কাজ। সুতরাং অভিযোগে উল্লিখিত ৭০ লক্ষ টাকার প্রকল্পটির চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মের ব্যত্যয় করা হয়েছে বলে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
চতুর্থ অভিযোগের বিবরণে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দৈনিক ২০ ঘনমিটার ব্লক উৎপাদন শুর করার লক্ষ্যে ‘এএসি প্ল্যান্ট’ উন্নয়নকাজে ২০১৯ সালে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। কাজটি করে কিংডম বিল্ডার্স, অর্থি এন্টারপ্রাইজ ও জামান বিল্ডার্স। ঠিকাদারদের সিংহভাগ বিল দেয়া হলেও এখোনে চালু হয়নি প্ল্যান্টটি, উল্টো কাজ শেষ করতে আরো সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা।
অভিযোগের বিষয়ে মোঃ শামীম আখতারের বক্তব্য, তাঁর দাখিলকৃত কাগজপত্র এবং সংরক্ষিত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় উক্ত প্রকল্পটি তিন ধাপে পৃথক পৃথক টেন্ডারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সর্বমোট ১,৭৬,৯৬,২৮১/- (এক কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ ছিয়ানব্বই হাজার দুইশত একাশি) টাকা ড্্র করা হয়েছে, যা টেন্ডার মূল্যের প্রায় ৯০%। সরেজমিনে দেখা যায় এ প্রকল্পটির কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে। প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথা অনুযায়ী এম.বি. (মেজারম্যান্ট বুক) যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় কাজের বাং সাথে বিল পরিশোধের সামঞ্জস্য রক্ষা করা হয়নি। প্রকল্পটির কাজ ৯০% সম্পন্ন হয়েছে মর্মে দৃশ্যত: উচ্চ কারিগরি যন্ত্রপাতি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির গুণগত মান নিশ্চিত না হয়েই প্রায় ৯০ শতাংশ বিল প্রদান। নিয়মের ব্যত্যয় করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। একই মাসে প্রায় ১ কোটি টাকার এইচবিআরআইয়ে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ পায় তার মুরিদ এর প্রতিষ্ঠান কিংডম বিল্ডাস। চুক্তির চেয়ে ঠিকাদারদের ৮ লাখ টাকা বেশি বিল দেয়া হলেও কাজটি থেকে যে অন্যদিকে দরপত্রের আগেই অফিস সংস্কারের কাজ শুরু করে দেয় অর্থি এন্টারপ্রাইজ।
এদিকে এইচবিআরআই এর তদন্ত প্রতিবেদনেও শামীম আখাতারের অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রমান মিলেছে। পর্যবেক্ষনে দেখা যায় যে, বিল নং ০১/পৃ: ১৭৪/২০১৮-১৯ (৪৪/২০১৮-১৯) এর মাধ্যমে ঠিকাদারকে ১২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। যা চুক্তির তুলনায় ৮,১৮,৩৮১ (আট লক্ষ আঠারো হাজার তিনশত একাশি) টাকা বেশি। এই অতিরিক্ত টাকা প্রদানের স্বপক্ষে কোন অনুমোদন বা নথি/কাজের প্রমাণপত্র পাওয়া যায়নি। প্রদেয় বিলের বিপরীতে কাজ বুঝে নিয়ে কোন কর্মকর্তা বিল সার্টিফাই করেননি। এ ছাড়া বিল প্রদানের জন্য মেজারিং বুকে কাজের পরিমাণ যাচাই করে সংশ্লিষ্ট তদারককারী কর্মকর্তা ও প্রকিউরমেন্ট এনটিটির স্বাক্ষর থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে মেজারমেন্ট বুক (এমবি) করা হয়নি। যা ঠিকাদারকে তার বিল অনুযায়ী বিনা পরিমাপে বিল প্রদানের বিষয়টি সুস্পষ্ট।
০২-০৯-২০২১ তারিখে কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখতে পায় যে, উক্ত সাব স্টেশনের জন্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে তবে তা এখন পর্যন্ত চালু হয়নি। টেন্ডারের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি ও বিশেষায়িত কোন বস্তু ঠিকাদার হতে গ্রহণের জন্য বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রকৌশলী দ্বারা একটি রিসিভিং কমিটি গঠন করতে হয় এবং তাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিল প্রদান করতে হয়। এক্ষেত্রে এ ধরনের কমিটি গঠন না করেই বিপুল পরিমাণ টাকার মালামাল গ্রহণ করে তার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ঠিকাদার কর্তৃক সরবারাহকৃত মেশিনের মান যথাযথভাবে যাচাই করা হয়নি।১৫০ কেভিএ জেনারেটর, সাব-স্টেশন বুঝে না নিয়ে এবং অতিরিক্ত বিল প্রদানের মাধ্যমে অপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সকল বিলে মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আকতার হোসেন সরকার, প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ শামীম আখতার, প্রাক্তন মহাপরিচালক, হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর স্বাক্ষর রয়েছে। সার্বিক পর্যবেক্ষনে আর্থিক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় এবং ক্রয় প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত প্রকিউরিং এনটিটি হিসেবে প্রকল্প পরিচালক, তৎকালীন মহাপরিচালক, হেড অব প্রকিউরিং এনটিটি হিসেবে এ জন্য প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর ও ব্যাপক হওয়ায় এ বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের অভ্যস্তরীন নিরীক্ষা পরিদপ্তর, অডিটর জেনারেল-এর দপ্তর এবং দূর্নীতি বিষয়ে উচ্চতর কোন তদন্ত সংস্থা দ্বারা অধিকতর তদস্ত করা যেতে পারে।
বার্ষিক ৩ কোটি টাকা গবেষণা খাতের বরাদ্দ থাকলেও তা গবেষণা কাজে ব্যয় না করে অন্যন্য কাজে দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছেন। এ বিষয়ে ব্যয় ভাউচারের মাধ্যমে করা হয়েছে। এইচ বি আর আই এর সকল কেনাকাটা শামীম আখতার তার আমলে তিনি একক ভাবে করতেন। এ জিনিস তিনি ভিন্ন ভিন্ন খাত দেখিয়ে ক্রয় করেছেন যাতে করে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে কেনা যায়। বিধি অনুযায়ী তা ২৫ হাজার টাকার বেশি হলে তা কোটেশন পদ্ধতিতে কেনার কথা। অর্থাৎ কোন মাল না দিয়ে ভাউচার জমা দিয়ে টাকা পকেটে ভরেছেন। সরকারি অর্থ লুটে ও আত্মসাতের জন্য উন্নয়নের নামে নতুন করা টাইলস টয়লেট ভেঙ্গে পুনরায় কাজ করিয়েছিলেন। এই কাজ টেন্ডারের আগেই শুরু করে এবং বিনা টেন্ডারে কাজ তার কিছু নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে করিয়েছে যাত্রা হালাল করার উদ্দেশ্যে ইজিপি ৩৬৭৭২১ ও ৩৬৭৫৬৯ এর মাধ্যমে দেয়া হয়েছিল। অন্যান্য ডিপার টেভার অর্থ দেয়ায় তখন বিপত্তি বাধে অন্য কিছু ঠিকাদার এর বিরুদ্ধে সিপিইউ আবেদন করেন।
প্রাক্তন মহাপরিচালক শামীম আখতার অফিসের সুইব প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক থাকায় তিনি নানা উন্নয়নমৃলক কাজের নামে যেমন ইন্টেরিয়র, দামি কমোড লাগানো, মাত্র ২ বা ৩ বছর পূর্বে লাগানো টাইলস নতুন টাইলস লাগানোর নামে উচ্চমুল্যের নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে দেখানো হয়।
অভিযোগের বিষয়ে এইচবিআরআই এর সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।