ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo রূপালী ব্যাংকের এমডি ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের প্রভাবশালী নেতা! Logo “আওয়ামী সুবিধাভোগী ৪ কারা কর্মকর্তার কাছে জিম্মি কারা অধিদপ্তর!” Logo পাইকগাছা-কয়রার মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে মাঠে আমিরুল ইসলাম কাগজী Logo এয়ারপোর্ট এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন পিয়ারী ইয়াসিন ধরাছোঁয়ার বাইরে! Logo পিরোজপুর-২ আসনে জনগণের জন্য কাজ করতে চান ফকরুল আলম: নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে Logo পাওনা টাকা চাওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা: নেপথ্যে কসাই পারভেজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ৩৬ জুলাই: যেভাবে প্রতীকী ক্যালেন্ডার হয়ে উঠল জাতীয় প্রতিরোধের হাতিয়ার Logo বাকেরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলা Logo গণপূর্ত প্রকৌশলী জহির রায়হানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান Logo “শতকোটি টাকার দুর্নীতির সাম্রাজ্য: তাপসের ঘনিষ্ট ডিএসসিসির শাহজাহান আলীর ফাঁদে ঢাকা দক্ষিণ সিটি”

অভিমানে দল ছাড়তে চান রাজশাহী আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০১৯ ২০৬ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী ব্যুরো; এমপিদের অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও বিভিন্ন কারণে প্রতিবাদে নিজে পদ ও পুরোপুরি রাজনীতি ছাড়তে চান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর এলাকায় সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং এমপিদের অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিজের ফেসবুক আইডিতে এমনই ইঙ্গিত দিয়ে বৃহস্পতিবার একটি পোস্ট দিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এ নিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আসাদের পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিন শতাধিক নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী। তারা দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর হস্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দমনের কথা বলেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর একটি পোস্টে আসাদুজ্জামান আসাদ লেখেন ‘রাজনীতি ছেড়ে দেবো কিনা ভাবছি’। দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না।’

বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানকারী আসাদের এই পোস্টের পর রাজশাহীতে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। অনেকেই আসাদকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান। অনেকেই খোঁজখবর নেন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তিনি দলের রাজনীতিতে সবসময় তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ছায়া দিয়ে এসেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীসহ জেলার কতিপয় নেতা ও এমপির দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন উপজেলায় এমপিদের লোকেরা দলের ভেতরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় দলের পদ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।

উদাহরণ তুলে ধরে আসাদ আরও বলেন, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলী ও উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, পৌর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মজনু, ঝালুকা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মোট ১২ নেতাকর্মীকে উপজেলা ভোটের আগে কোমরে দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদের কোনো অপরাধ ছিল না। তারা উপজেলা নির্বাচনে একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিল-এই তাদের অপরাধ।

তিনি আরও বলেন, জেলা কমিটিকে কিছু না জানিয়ে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও গোদাগাড়ীর সভাপতি বদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়নি, হয়েছে এলাকার এমপির নির্দেশে। তানোরে এমপির লোকেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে কিন্তু জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের রক্ষার জন্য আমি কিছুই করতে পারছি না।

জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে আসাদ আরও বলেন, ১৫ মাস আগে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয়েছিল। এরপর থেকে সভাপতি আর দলীয় কার্যালয়ে একদিনের জন্যও পা রাখেননি। তাকে ডেকে ডেকেও আর পাওয়া যায়নি। জরুরি হলেও জেলা কমিটির সভা করা যায়নি। দলের পদে থেকেও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে নেতাকর্মীরা কী করবেন? এসব বিষয় বারবার কেন্দ্রকে জানানোর পরও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, জেলার শীর্ষ পদে থেকেও নেতাকর্মীদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে পারছি না অথচ আমরা ক্ষমতায় আছি। নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ছুটে এসে প্রতিকার চাইছেন কিন্তু তাদের কোনো উপকারই আমি করতে পারছি না। ফলে রাজনীতি ছাড়ার কথাই আমাকে বাধ্য হয়ে ভাবতে হয়েছে।

এদিকে জেলার সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অভিমানে দল ছাড়তে চান রাজশাহী আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক!

আপডেট সময় : ১১:১৪:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০১৯

রাজশাহী ব্যুরো; এমপিদের অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও বিভিন্ন কারণে প্রতিবাদে নিজে পদ ও পুরোপুরি রাজনীতি ছাড়তে চান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।

জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর এলাকায় সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এবং এমপিদের অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিজের ফেসবুক আইডিতে এমনই ইঙ্গিত দিয়ে বৃহস্পতিবার একটি পোস্ট দিয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এ নিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আসাদের পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিন শতাধিক নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী। তারা দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর হস্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দমনের কথা বলেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর একটি পোস্টে আসাদুজ্জামান আসাদ লেখেন ‘রাজনীতি ছেড়ে দেবো কিনা ভাবছি’। দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে পারছি না।’

বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানকারী আসাদের এই পোস্টের পর রাজশাহীতে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। অনেকেই আসাদকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান। অনেকেই খোঁজখবর নেন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, তিনি দলের রাজনীতিতে সবসময় তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ছায়া দিয়ে এসেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীসহ জেলার কতিপয় নেতা ও এমপির দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন উপজেলায় এমপিদের লোকেরা দলের ভেতরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় দলের পদ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।

উদাহরণ তুলে ধরে আসাদ আরও বলেন, সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাহার আলী ও উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, পৌর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মজনু, ঝালুকা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী মোট ১২ নেতাকর্মীকে উপজেলা ভোটের আগে কোমরে দড়ি বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদের কোনো অপরাধ ছিল না। তারা উপজেলা নির্বাচনে একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিল-এই তাদের অপরাধ।

তিনি আরও বলেন, জেলা কমিটিকে কিছু না জানিয়ে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও গোদাগাড়ীর সভাপতি বদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়নি, হয়েছে এলাকার এমপির নির্দেশে। তানোরে এমপির লোকেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে কিন্তু জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের রক্ষার জন্য আমি কিছুই করতে পারছি না।

জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে আসাদ আরও বলেন, ১৫ মাস আগে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয়েছিল। এরপর থেকে সভাপতি আর দলীয় কার্যালয়ে একদিনের জন্যও পা রাখেননি। তাকে ডেকে ডেকেও আর পাওয়া যায়নি। জরুরি হলেও জেলা কমিটির সভা করা যায়নি। দলের পদে থেকেও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে নেতাকর্মীরা কী করবেন? এসব বিষয় বারবার কেন্দ্রকে জানানোর পরও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, জেলার শীর্ষ পদে থেকেও নেতাকর্মীদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে পারছি না অথচ আমরা ক্ষমতায় আছি। নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ছুটে এসে প্রতিকার চাইছেন কিন্তু তাদের কোনো উপকারই আমি করতে পারছি না। ফলে রাজনীতি ছাড়ার কথাই আমাকে বাধ্য হয়ে ভাবতে হয়েছে।

এদিকে জেলার সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।