ঢাকা ১০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও বহাল পায়রা বন্দর প্রকৌশলী নাছির: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




বেসিক বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা ধরাছোঁয়ার বাইরে নব্য আওয়ামীলীগ আমিন আহমেদ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১০৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক:

অর্থ পাচার ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে রাজস্ব থাকি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে তার সকল অপরাধের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আমিন আহমেদ। যিনি এক সময় তুখোড় বিএনপি সমার্থক ছিলেন পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজের রাজনৈতিক খোলস পাল্টে ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে শেয়ার বাজার লুটপাট আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন।

বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয়কালে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর দুর্নীতি দমন কমিশন ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা করেছে।

দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাচ্চু ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ৬ নং প্লটে ৩০.২৫ কাঠার জমি ১ শত ১০ কোটি টাকায় ক্রয়ের জন্য আমিন আহমেদের সাথে ৮ আগস্ট ২০১২ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি করেছিলেন। এই আমিন আহমেদ তার সকল অপরাধের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে পরিচিত। চুক্তিপত্র সম্পাদনের সময় নগদ ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। সেই মোতাবেক দুইটি সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু সাফ কবলা করার সময় চুক্তিপত্র অনুযায়ী দাম উল্লেখ করা হয়নি। গত ১৬ অক্টোবর ১২ সালে গুলশান সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ৮০৮৫ নং দলিলে ১৮ কাঠা জমি উল্লেখ করে মূল্য নয় কোটি টাকা নির্ধারণ করে কবলা করা হয়। গ্রহীতা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না এবং বাচ্চু স্ত্রী শিরিন আক্তার। একই দিনে ৮০৮৬ নং দলিলের মাধ্যমে ১২.২৫ কাঠা জমি ৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা উল্লেখ করে আরেকটি দলিল সম্পাদন করা হয়। যার গ্রহীতা বাচ্চু ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও কন্যা শেখ রাফা হাই। জমি ক্রয় বাবদ ১ শত ১০ কোটি টাকা আব্দুল হাই বাচ্চু অন্য আরেক আসামি আমিন আহমেদ এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধ করেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আমিন আহমেদ তা স্বীকার করেন। উল্লেখ যে, ১৩৪ টি পে অর্ডারের মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এবং নগদে ৩১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়।

চুক্তিপত্র ও মূল দলিলের মধ্যে ৯৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার হিসেব গায়েব করে ৮ কোটি ৫২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন আব্দুল হাই বাচ্চু।

অপরদিকে বাচ্চু গং তাদের আয়কর নথিতে জমির ক্রয়মূল্য প্রর্দশনী করেছে ২৪ কোটি ৬৪ লক্ষ আটত্রিশ হাজার চারশত চুয়ান্ন টাকা। এরফলে তার আয়ব্যয় এবং প্রকৃত সম্পদের মধ্যে কোন সামঞ্জস্যতা পাওয়া যায় না।

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নাম সর্বস্ব ও অস্তিত্বহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নামে বিধি বহির্ভূতভাবে ভুয়া ঋণ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তীতে সেই অর্থ বিভিন্নভাবে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে গোপন করেছেন। আমিন আহমেদ বাচ্চুর অবৈধ অর্থের সরাসরি বৈধতা প্রদানের সহায়তা করার কারণে তাকে আসামি করা হয়। উল্লেখ আসামিদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ ও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

দেশের চাঞ্চল্যকর এই দুই অর্থ কেলেঙ্কারি মাফিয়ার বিরুদ্ধে গভীর অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর সকল দুর্নীতি অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আমিন আহমেদ জড়িত ছিলেন কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তার বিষয়টি তেমন ফলাও করে প্রচারিত না হওয়ায় লোক চক্ষুর আড়ালেই থেকে গেছেন তিনি। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে আমিন আহমেদ কঠোর বিএনপি থাকলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিজের খোলস পাল্টে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে শেয়ার বাজার ও ব্যাংক খাতে লুটপাট সহ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেল ‘লা মেরিডিয়ান’ সহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ধনীদের কাতারে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে দুদুকে একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও মোটা অংকের লভিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন খোলস পাল্টানো নব্য আওয়ামী লীগ আমিন আহমেদ।

এ বষয়ে আমিন আহমেদের সাথে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। আব্দুর হাই বাচ্চুর ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

চলবে…….

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বেসিক বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা ধরাছোঁয়ার বাইরে নব্য আওয়ামীলীগ আমিন আহমেদ

আপডেট সময় : ১২:৩০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

বিশেষ প্রতিবেদক:

অর্থ পাচার ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে রাজস্ব থাকি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে তার সকল অপরাধের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আমিন আহমেদ। যিনি এক সময় তুখোড় বিএনপি সমার্থক ছিলেন পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজের রাজনৈতিক খোলস পাল্টে ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে শেয়ার বাজার লুটপাট আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন।

বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয়কালে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর দুর্নীতি দমন কমিশন ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা করেছে।

দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাচ্চু ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ৬ নং প্লটে ৩০.২৫ কাঠার জমি ১ শত ১০ কোটি টাকায় ক্রয়ের জন্য আমিন আহমেদের সাথে ৮ আগস্ট ২০১২ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি করেছিলেন। এই আমিন আহমেদ তার সকল অপরাধের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে পরিচিত। চুক্তিপত্র সম্পাদনের সময় নগদ ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। সেই মোতাবেক দুইটি সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু সাফ কবলা করার সময় চুক্তিপত্র অনুযায়ী দাম উল্লেখ করা হয়নি। গত ১৬ অক্টোবর ১২ সালে গুলশান সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ৮০৮৫ নং দলিলে ১৮ কাঠা জমি উল্লেখ করে মূল্য নয় কোটি টাকা নির্ধারণ করে কবলা করা হয়। গ্রহীতা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না এবং বাচ্চু স্ত্রী শিরিন আক্তার। একই দিনে ৮০৮৬ নং দলিলের মাধ্যমে ১২.২৫ কাঠা জমি ৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা উল্লেখ করে আরেকটি দলিল সম্পাদন করা হয়। যার গ্রহীতা বাচ্চু ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও কন্যা শেখ রাফা হাই। জমি ক্রয় বাবদ ১ শত ১০ কোটি টাকা আব্দুল হাই বাচ্চু অন্য আরেক আসামি আমিন আহমেদ এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধ করেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আমিন আহমেদ তা স্বীকার করেন। উল্লেখ যে, ১৩৪ টি পে অর্ডারের মাধ্যমে ৭৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এবং নগদে ৩১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়।

চুক্তিপত্র ও মূল দলিলের মধ্যে ৯৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার হিসেব গায়েব করে ৮ কোটি ৫২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন আব্দুল হাই বাচ্চু।

অপরদিকে বাচ্চু গং তাদের আয়কর নথিতে জমির ক্রয়মূল্য প্রর্দশনী করেছে ২৪ কোটি ৬৪ লক্ষ আটত্রিশ হাজার চারশত চুয়ান্ন টাকা। এরফলে তার আয়ব্যয় এবং প্রকৃত সম্পদের মধ্যে কোন সামঞ্জস্যতা পাওয়া যায় না।

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নাম সর্বস্ব ও অস্তিত্বহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নামে বিধি বহির্ভূতভাবে ভুয়া ঋণ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তীতে সেই অর্থ বিভিন্নভাবে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে গোপন করেছেন। আমিন আহমেদ বাচ্চুর অবৈধ অর্থের সরাসরি বৈধতা প্রদানের সহায়তা করার কারণে তাকে আসামি করা হয়। উল্লেখ আসামিদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ ও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

দেশের চাঞ্চল্যকর এই দুই অর্থ কেলেঙ্কারি মাফিয়ার বিরুদ্ধে গভীর অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর সকল দুর্নীতি অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আমিন আহমেদ জড়িত ছিলেন কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তার বিষয়টি তেমন ফলাও করে প্রচারিত না হওয়ায় লোক চক্ষুর আড়ালেই থেকে গেছেন তিনি। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে আমিন আহমেদ কঠোর বিএনপি থাকলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিজের খোলস পাল্টে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে শেয়ার বাজার ও ব্যাংক খাতে লুটপাট সহ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেল ‘লা মেরিডিয়ান’ সহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ধনীদের কাতারে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে দুদুকে একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও মোটা অংকের লভিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন খোলস পাল্টানো নব্য আওয়ামী লীগ আমিন আহমেদ।

এ বষয়ে আমিন আহমেদের সাথে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। আব্দুর হাই বাচ্চুর ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

চলবে…….

Loading