ঢাকা ০৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




মাত্র ১ টাকা ভিজিটেই রাজশাহীতে রোগী দেখবেন ডাক্তার সুমাইয়া

প্রতিনিধি, রাজশাহী
  • আপডেট সময় : ০২:১৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে

সারাদেশে সেবার নামে চলছে ডাক্তারদের চিকিৎসা বাণিজ্য। যেখানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এমবিবিএস ডাক্তারের রোগী দেখার ফি ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা বা তার বেশি নিচ্ছেন। সেখানে এমন একজন এমবিবিএস ডাক্তারের খোঁজ মিলেছে যিনি কিনা মাত্র এক টাকা ভিজিটে প্রতিদিন রোগীদের দেখা শোনা করছেন। শুনতে অবাক লাগলেও রাজশাহীতে এক টাকার ভিজিটেই মিলছে চিকিৎসা। অনেকে অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছেন না তাদের সেবায় ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল।

এক টাকার এই ডাক্তার বাবার ইচ্ছা পূরণে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন। রাজশাহী জেলার কলেজ শিক্ষক মীর মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে তিনি।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজারে একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানেই তিনি প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন। সময় নিয়ে রোগীর সমস্যা ও অসুবিধার বিবরণ জেনে প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি পরামর্শও দিচ্ছেন এই নারী চিকিৎসক।

সুমাইয়া ২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।

কথা হয় ডাক্তার সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেলের সাথে। তিনি বলেন, মূলত আমার বাবার ইচ্ছে ছিল যে আমি যেন জনসেবামূলক কিছু একটা কাজ করি। ফ্রিতে মানুষের ট্রিটমেন্ট দেওয়া বা এরকম কিছু করাতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এই জনসেবামূলক কাজটি আমি শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে, যতদিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি চালিয়ে যাওয়ার। পাঁচ দিন হচ্ছে রোগী দেখা শুরু করেছি। লিফলেট বানানো হয়েছে এখনও বিলি করাই হয়নি। কেউ জানেই না, এক প্রকার এক্সাইটমেন্ট থেকে ফেসবুকে লিফলেটসহ একটা পোস্ট করেছিলাম। এতেই অনেকের নজরে পড়েছে।

ডাক্তার সুমাইয়া বলেন, এই পোস্ট করার পর থেকে অনেকেরই কল পেয়েছি, অনেকে মেসেজও করেছে। অনেকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, এগিয়ে যাওয়ার জন্য বলছে। এমনকি একজন শিক্ষক ফোন করে আমার বিস্তারিত শুনে জানতে চাইলেন আমার লক্ষ্য কি? বিসিএস প্রস্তুতির কথা বলতেই জানালেন, ‘তোমার যদি ইংলিশে প্রিপারেশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তুমি নির্দিধায় আমাকে বলতে পারো। এসব শুনেও ভালো লাগছে।

রোগীর ভিজিট এক টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, ‘দি ফাইভ ফাউন্ডেশন’ নামে আমার একটা ছোট্ট অর্গানাইজেশন আছে। করোনার সময় থেকেই সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। আমরা মূলত সেখানে মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) নিয়ে কাজ করে থাকি। এছাড়াও শীতে শীতার্তদের শীতবস্ত্র প্রদান, কোরবানির ঈদে গরু কোরবানি করে গোশত বিলি করা, অসহায়দের অর্থ সহায়তা দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, কিছু দুস্থ পরিবারে নিয়মিত খাবার সহায়তা দেওয়া, একটি এতিম বাচ্চার ভরণপোষণ দেওয়ার মতো অনেক কাজই ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হয়। সেজন্য ওই সংগঠনের আয় হিসেবে এই এক টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ভবিষৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আল্লাহ দিলে যদি চান্স হয় আর দূরে কোথাও পোস্টিং হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে হলেও এখানে রোগী দেখবো। আর পোস্টিং যদি আশেপাশে কোথাও হয় তাহলে অন্তত সন্ধ্যার পর রেগুলার রোগী দেখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসবে কি না সেটা নিয়ে এখনও ভাবা হয়নি। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসলে তখন ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি করা যায়।

স্বামীর সহযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিয়ের বয়স প্রায় আট বছর হয়ে আসছে। পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটো বাচ্চাও আছে। আমার হাজবেন্ডও পেশায় চিকিৎসক। আমার এই উদ্যোগে তিনিও খুশী, সব রকমের সাপোর্ট দিচ্ছেন।

কথা হয় সুমাইয়ার বাবা মীর মোজাম্মেল আলীর সাথে। তিনি রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল আমার চার ছেলে-মেয়েই ডাক্তার হবে। তিন মেয়ে ডাক্তার হয়েছে, আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল, তারা মানুষের সেবা করবে। আমরা ডাক্তার হতে পারিনি, সেই একটা দুঃখ ছিল আমাদের সময়। যেহেতু আমরা হতে পারিনি, তাই ছেলে-মেয়েদের মধ্য দিয়েই স্বপ্নটা পূরণ করার চেষ্টা করছি।

রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী পলি রাণী। তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে দেখে এসেছেন চিকিৎসা নিতে। তিনি বলেন, জনসেবা করতে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কতজন এমবিবিএস পাস করে ব্যবসার মতো টাকা ইনকামে নেমে যায়, সে হিসেবে ওনার উদ্যোগটা খুবই ভাল। আমি নিজেও ফেসবুকে জানতে পেরে দেখা করলাম। কিছু সমস্যা ছিল আমার, উনি শুনে প্রেসক্রিপশন দিলেন। মাত্র এক টাকার ভিজিটেই ডাক্তারি পরামর্শ পেলাম। আশা করছি এলাকার হত দরিদ্ররা তার কাছে সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ডা. সানাউল হক মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। চমৎকার কাজ শুরু করেছে সুমাইয়া। ইয়াং জেনারেশনের কাছে এটাই তো আশা করি। খুবই প্রশংসা করার মতো একটা ভালো কাজ এটি। সে যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে সবারই উচিত হবে উৎসাহ দেওয়া। এতে সে অনুপ্রাণিত হবে বলে জানান তিনি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মাত্র ১ টাকা ভিজিটেই রাজশাহীতে রোগী দেখবেন ডাক্তার সুমাইয়া

আপডেট সময় : ০২:১৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

সারাদেশে সেবার নামে চলছে ডাক্তারদের চিকিৎসা বাণিজ্য। যেখানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এমবিবিএস ডাক্তারের রোগী দেখার ফি ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা বা তার বেশি নিচ্ছেন। সেখানে এমন একজন এমবিবিএস ডাক্তারের খোঁজ মিলেছে যিনি কিনা মাত্র এক টাকা ভিজিটে প্রতিদিন রোগীদের দেখা শোনা করছেন। শুনতে অবাক লাগলেও রাজশাহীতে এক টাকার ভিজিটেই মিলছে চিকিৎসা। অনেকে অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছেন না তাদের সেবায় ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল।

এক টাকার এই ডাক্তার বাবার ইচ্ছা পূরণে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন। রাজশাহী জেলার কলেজ শিক্ষক মীর মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে তিনি।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজারে একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানেই তিনি প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন। সময় নিয়ে রোগীর সমস্যা ও অসুবিধার বিবরণ জেনে প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি পরামর্শও দিচ্ছেন এই নারী চিকিৎসক।

সুমাইয়া ২০১৫ সালে রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন সুমাইয়া। বড় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মেডিকেল ভর্তির। ভাগ্যের নির্মমতায় সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলেও বুনতে থাকেন স্বপ্নের জাল। এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন শেষ করেছেন তিনি। প্রাইভেট একটি ক্লিনিকে চাকরির পাশাপাশি বিসিএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আর এর পাশাপাশি করছেন জনসেবা।

কথা হয় ডাক্তার সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেলের সাথে। তিনি বলেন, মূলত আমার বাবার ইচ্ছে ছিল যে আমি যেন জনসেবামূলক কিছু একটা কাজ করি। ফ্রিতে মানুষের ট্রিটমেন্ট দেওয়া বা এরকম কিছু করাতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এই জনসেবামূলক কাজটি আমি শুরু করেছি। ইচ্ছে আছে, যতদিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকি চালিয়ে যাওয়ার। পাঁচ দিন হচ্ছে রোগী দেখা শুরু করেছি। লিফলেট বানানো হয়েছে এখনও বিলি করাই হয়নি। কেউ জানেই না, এক প্রকার এক্সাইটমেন্ট থেকে ফেসবুকে লিফলেটসহ একটা পোস্ট করেছিলাম। এতেই অনেকের নজরে পড়েছে।

ডাক্তার সুমাইয়া বলেন, এই পোস্ট করার পর থেকে অনেকেরই কল পেয়েছি, অনেকে মেসেজও করেছে। অনেকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, এগিয়ে যাওয়ার জন্য বলছে। এমনকি একজন শিক্ষক ফোন করে আমার বিস্তারিত শুনে জানতে চাইলেন আমার লক্ষ্য কি? বিসিএস প্রস্তুতির কথা বলতেই জানালেন, ‘তোমার যদি ইংলিশে প্রিপারেশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তুমি নির্দিধায় আমাকে বলতে পারো। এসব শুনেও ভালো লাগছে।

রোগীর ভিজিট এক টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, ‘দি ফাইভ ফাউন্ডেশন’ নামে আমার একটা ছোট্ট অর্গানাইজেশন আছে। করোনার সময় থেকেই সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। আমরা মূলত সেখানে মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) নিয়ে কাজ করে থাকি। এছাড়াও শীতে শীতার্তদের শীতবস্ত্র প্রদান, কোরবানির ঈদে গরু কোরবানি করে গোশত বিলি করা, অসহায়দের অর্থ সহায়তা দিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, কিছু দুস্থ পরিবারে নিয়মিত খাবার সহায়তা দেওয়া, একটি এতিম বাচ্চার ভরণপোষণ দেওয়ার মতো অনেক কাজই ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হয়। সেজন্য ওই সংগঠনের আয় হিসেবে এই এক টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ভবিষৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আল্লাহ দিলে যদি চান্স হয় আর দূরে কোথাও পোস্টিং হয় তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে হলেও এখানে রোগী দেখবো। আর পোস্টিং যদি আশেপাশে কোথাও হয় তাহলে অন্তত সন্ধ্যার পর রেগুলার রোগী দেখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসবে কি না সেটা নিয়ে এখনও ভাবা হয়নি। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা আসলে তখন ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি করা যায়।

স্বামীর সহযোগিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিয়ের বয়স প্রায় আট বছর হয়ে আসছে। পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটো বাচ্চাও আছে। আমার হাজবেন্ডও পেশায় চিকিৎসক। আমার এই উদ্যোগে তিনিও খুশী, সব রকমের সাপোর্ট দিচ্ছেন।

কথা হয় সুমাইয়ার বাবা মীর মোজাম্মেল আলীর সাথে। তিনি রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক। তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল আমার চার ছেলে-মেয়েই ডাক্তার হবে। তিন মেয়ে ডাক্তার হয়েছে, আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল, তারা মানুষের সেবা করবে। আমরা ডাক্তার হতে পারিনি, সেই একটা দুঃখ ছিল আমাদের সময়। যেহেতু আমরা হতে পারিনি, তাই ছেলে-মেয়েদের মধ্য দিয়েই স্বপ্নটা পূরণ করার চেষ্টা করছি।

রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী পলি রাণী। তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে দেখে এসেছেন চিকিৎসা নিতে। তিনি বলেন, জনসেবা করতে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কতজন এমবিবিএস পাস করে ব্যবসার মতো টাকা ইনকামে নেমে যায়, সে হিসেবে ওনার উদ্যোগটা খুবই ভাল। আমি নিজেও ফেসবুকে জানতে পেরে দেখা করলাম। কিছু সমস্যা ছিল আমার, উনি শুনে প্রেসক্রিপশন দিলেন। মাত্র এক টাকার ভিজিটেই ডাক্তারি পরামর্শ পেলাম। আশা করছি এলাকার হত দরিদ্ররা তার কাছে সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ডা. সানাউল হক মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। চমৎকার কাজ শুরু করেছে সুমাইয়া। ইয়াং জেনারেশনের কাছে এটাই তো আশা করি। খুবই প্রশংসা করার মতো একটা ভালো কাজ এটি। সে যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে সবারই উচিত হবে উৎসাহ দেওয়া। এতে সে অনুপ্রাণিত হবে বলে জানান তিনি।