জনসম্মুখে তরুণীকে লাঞ্ছনা, বখাটেকে ধরলেন এডিসি তাপস
- আপডেট সময় : ১১:১৬:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ১৬৮ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট. ঢাকা: রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকা থেকে কর্মস্থলে যেতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক তরুণী। এর মধ্যেই এক বখাটে যুবক এসে ওই তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই যুবক বিভিন্নভাবে ওই তরুণীকে লাঞ্ছিত করে এবং মারধর শুরু করে।
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) ভোরের দিকে এই ঘটনার সময় আশপাশে অনেক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাচালক এমনকি পথচারী থাকলেও কেউই সেই তরুণীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসছিলেন না। সেসময় গুলশান এলাকায় ডিউটি শেষ করে ফিরছিলেন ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট জোনে দায়িত্বরত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তাপস কুমার দাস। নিজের গাড়িতে আমতলী এলাকায় পৌঁছাতেই ওই নারীর চিৎকার শুনে এগিয়ে যান তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে সেই তরুণীকে উদ্ধার করেন তাপস, লাঞ্ছনার সময় হাতেনাতে আটক করেন আলমগীরকে।
ওই তরুণী বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের নিরাপত্তাকর্মী। পরে এ ঘটনায় বনানী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-২১) দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সেই তরুণী প্রতিদিনের মতো বুধবারও ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। মহাখালীর আমতলী ক্রসিংয়ের রাস্তার পূর্ব পাশের চায়ের দোকানের সামনে তিনি বাসের অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ করে আলমগীর এসে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। তখন তার প্রস্তাবে রাজি না হলে ওই তরুণীর শরীরে হাত দিয়ে তার নাকে-মুখে সজোরে ঘুষি মারতে থাকে আলমগীর। এতে ওই তরুণীর শরীরে জখম হয় এবং একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান।
এরপর আলমগীর লাঠি নিয়ে ওই তরুণীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করতে থাকে। সেসময় এডিসি তাপস কুমার দাস তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান এবং আলমগীরকে বনানী থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এডিসি তাপস কুমার দাস বলেন, আমি গুলশান ডিভিশনের সেন্ট্রাল ছয়টা থানার নাইট রাউন্ডে ছিলাম। ভোরে বনানী ক্রস করে আমতলী দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন দূর থেকে এক নারীর চিৎকারের আওয়াজ শুনি এবং দেখি এক ছেলে ওই নারীকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। তখন আমি ড্রাইভারকে গাড়ি ঘোরাতে বলি। এরপর আমার বডিগার্ড, ড্রাইভারকে নিয়ে তিনজন ছুটে যাই। আমরা তিনজন ছেলেটাকে (আলমগীর) ধরে ফেলি। দেখলাম মারের আঘাতে সেই নারীর ঠোঁট দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল, আমরা তাকে দ্রুত কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠাই। আসামি আলমগীরকে বনানী থানায় পাঠিয়ে দেই।
পরে ওই নারীকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জানা যায়, তিনি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত। অফিসে সকাল ৬টার শিফট ধরতে আমতলীতে বাসে ওঠার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত এডিসি তাপস আরও বলেন, আসামি আলমগীর (২৪) কড়াইল বস্তিতে মাছের ব্যবসা করেন। বস্তির বৌবাজারে তার বাসা। গ্রামের বাড়ি শেরপুর। আলমগীরের বাবার নাম আশরাফ আলী।
বনানী থানা পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ওই টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-২১) দায়ের করেছে। এ মামলায় আলমগীরকে আদালতে পাঠানো হবে।
টেলিভিশন চ্যানেলটির এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, ওই তরুণীর ঠোঁটে ছয়টি সেলাই পড়েছে, কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে তাকে অফিসে নেওয়া হয়েছে। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন।