৩৮ বছর ঘুরেও পাননি জমির অধিকার, আদালত চত্বরেই মৃত্যু

- আপডেট সময় : ০৮:১৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মার্চ ২০২০ ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনী;
দীর্ঘ ৩৮ বছর মামলায় লড়েও ভাগ্যে জোটেনি জমির অধিকার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই। মামলার হাজিরা দিতে সেই আদালতে এসেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধ করিমুল্লাহ ওরফে কালা মিয়া। রোববার এ ঘটনা ঘটেছে ফেনী জেলা জজ আদালত চত্বরে। আদালতের বিশ্রামাগারে বসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। করিমুল্লাহর বাড়ি ফেনীর পরশুরাম থানার বাউরখুমা গ্রামের তাকিয়া বাড়ি এলাকায়।
ফেনী আদালতের আইনজীবী খুরশীদ আলম জানান, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বাড়িতে না থাকায় করিমুল্লাহর পৈতৃক সম্পত্তি ও বসতবাড়ির অংশ বাড়ির অন্যান্য অংশীদার দখল করে নেয়। ১৯৮২ সালে জমি ও বাড়ির মালিকানা দাবি করে ফেনী জেলা জজ আদালতে মামলা করেন তিনি। বাড়ির জমি অন্যদের দখলে থাকায় পরিবার নিয়ে একটি ঘর ভাড়া করে বসবাস করতেন। অ্যাজমা রোগী করিমুল্লাহকে চলতে হতো ভিক্ষা করেই। কয়েক বছর ধরে তিনি করিমুল্লাহর পক্ষে মামলা চালিয়ে আসছিলেন প্রায় বিনা খরচেই।
আইনজীবী আরও জানান, দীর্ঘ দিনেও মামলার মীমাংসা না হওয়ায় গত বছর স্থানীয়ভাবে তাকে তার হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে একটি কৌশলী মীমাংসা করেন স্থানীয় সালিশদাররা। তাদের বাড়ির একটি অংশ বিলোনীয়া স্থলবন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা হলে পুনরায় তাকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। অধিগ্রহণকৃত জমির প্রায় ২০ শতক জায়গা পড়ে বৃদ্ধ করিমুল্লাহর। তবে গোপনে অন্য অংশীদাররা অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের জন্য করিমুল্লাহকে বাদ দিয়ে এলএ অফিসে কাগজপত্র জমা দেন। খবর জেনে পুনরায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অধিগ্রহণের টাকার হিস্যার জন্য মামলা করেন করিমুল্লাহ। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।
করিমুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে অধিগ্রহণের মামলার তদবির করার জন্য আদালতে আসেন তার বাবা। আইনজীবী খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করে আদালতের বিশ্রামাগারে গিয়ে বসেন। সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্রামাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ঢলে পড়ে যান ফ্লোরে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। পরে ফেনী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
ফেনী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, বয়োবৃদ্ধ করিমুল্লাহ অ্যাজমা রোগী ছিলেন। আদালতের বিশ্রামাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার পরিবার চাইলে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হবে।