ঢাকা ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




৩৮ বছর ঘুরেও পাননি জমির অধিকার, আদালত চত্বরেই মৃত্যু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মার্চ ২০২০ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনী; 

দীর্ঘ ৩৮ বছর মামলায় লড়েও ভাগ্যে জোটেনি জমির অধিকার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই। মামলার হাজিরা দিতে সেই আদালতে এসেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধ করিমুল্লাহ ওরফে কালা মিয়া। রোববার এ ঘটনা ঘটেছে ফেনী জেলা জজ আদালত চত্বরে। আদালতের বিশ্রামাগারে বসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। করিমুল্লাহর বাড়ি ফেনীর পরশুরাম থানার বাউরখুমা গ্রামের তাকিয়া বাড়ি এলাকায়।

ফেনী আদালতের আইনজীবী খুরশীদ আলম জানান, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বাড়িতে না থাকায় করিমুল্লাহর পৈতৃক সম্পত্তি ও বসতবাড়ির অংশ বাড়ির অন্যান্য অংশীদার দখল করে নেয়। ১৯৮২ সালে জমি ও বাড়ির মালিকানা দাবি করে ফেনী জেলা জজ আদালতে মামলা করেন তিনি। বাড়ির জমি অন্যদের দখলে থাকায় পরিবার নিয়ে একটি ঘর ভাড়া করে বসবাস করতেন। অ্যাজমা রোগী করিমুল্লাহকে চলতে হতো ভিক্ষা করেই। কয়েক বছর ধরে তিনি করিমুল্লাহর পক্ষে মামলা চালিয়ে আসছিলেন প্রায় বিনা খরচেই।

আইনজীবী আরও জানান, দীর্ঘ দিনেও মামলার মীমাংসা না হওয়ায় গত বছর স্থানীয়ভাবে তাকে তার হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে একটি কৌশলী মীমাংসা করেন স্থানীয় সালিশদাররা। তাদের বাড়ির একটি অংশ বিলোনীয়া স্থলবন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা হলে পুনরায় তাকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। অধিগ্রহণকৃত জমির প্রায় ২০ শতক জায়গা পড়ে বৃদ্ধ করিমুল্লাহর। তবে গোপনে অন্য অংশীদাররা অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের জন্য করিমুল্লাহকে বাদ দিয়ে এলএ অফিসে কাগজপত্র জমা দেন। খবর জেনে পুনরায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অধিগ্রহণের টাকার হিস্যার জন্য মামলা করেন করিমুল্লাহ। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।

করিমুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে অধিগ্রহণের মামলার তদবির করার জন্য আদালতে আসেন তার বাবা। আইনজীবী খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করে আদালতের বিশ্রামাগারে গিয়ে বসেন। সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্রামাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ঢলে পড়ে যান ফ্লোরে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। পরে ফেনী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

ফেনী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, বয়োবৃদ্ধ করিমুল্লাহ অ্যাজমা রোগী ছিলেন। আদালতের বিশ্রামাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার পরিবার চাইলে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




৩৮ বছর ঘুরেও পাননি জমির অধিকার, আদালত চত্বরেই মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৮:১৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ মার্চ ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনী; 

দীর্ঘ ৩৮ বছর মামলায় লড়েও ভাগ্যে জোটেনি জমির অধিকার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই। মামলার হাজিরা দিতে সেই আদালতে এসেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধ করিমুল্লাহ ওরফে কালা মিয়া। রোববার এ ঘটনা ঘটেছে ফেনী জেলা জজ আদালত চত্বরে। আদালতের বিশ্রামাগারে বসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। করিমুল্লাহর বাড়ি ফেনীর পরশুরাম থানার বাউরখুমা গ্রামের তাকিয়া বাড়ি এলাকায়।

ফেনী আদালতের আইনজীবী খুরশীদ আলম জানান, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বাড়িতে না থাকায় করিমুল্লাহর পৈতৃক সম্পত্তি ও বসতবাড়ির অংশ বাড়ির অন্যান্য অংশীদার দখল করে নেয়। ১৯৮২ সালে জমি ও বাড়ির মালিকানা দাবি করে ফেনী জেলা জজ আদালতে মামলা করেন তিনি। বাড়ির জমি অন্যদের দখলে থাকায় পরিবার নিয়ে একটি ঘর ভাড়া করে বসবাস করতেন। অ্যাজমা রোগী করিমুল্লাহকে চলতে হতো ভিক্ষা করেই। কয়েক বছর ধরে তিনি করিমুল্লাহর পক্ষে মামলা চালিয়ে আসছিলেন প্রায় বিনা খরচেই।

আইনজীবী আরও জানান, দীর্ঘ দিনেও মামলার মীমাংসা না হওয়ায় গত বছর স্থানীয়ভাবে তাকে তার হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে একটি কৌশলী মীমাংসা করেন স্থানীয় সালিশদাররা। তাদের বাড়ির একটি অংশ বিলোনীয়া স্থলবন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা হলে পুনরায় তাকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। অধিগ্রহণকৃত জমির প্রায় ২০ শতক জায়গা পড়ে বৃদ্ধ করিমুল্লাহর। তবে গোপনে অন্য অংশীদাররা অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের জন্য করিমুল্লাহকে বাদ দিয়ে এলএ অফিসে কাগজপত্র জমা দেন। খবর জেনে পুনরায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অধিগ্রহণের টাকার হিস্যার জন্য মামলা করেন করিমুল্লাহ। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।

করিমুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে অধিগ্রহণের মামলার তদবির করার জন্য আদালতে আসেন তার বাবা। আইনজীবী খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করে আদালতের বিশ্রামাগারে গিয়ে বসেন। সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্রামাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ঢলে পড়ে যান ফ্লোরে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। পরে ফেনী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

ফেনী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, বয়োবৃদ্ধ করিমুল্লাহ অ্যাজমা রোগী ছিলেন। আদালতের বিশ্রামাগারে তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার পরিবার চাইলে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হবে।