ভোট কেন্দ্রের ভেতর বাইরে দুই রূপ, ভোটার দেখাতে কৃত্রিম লাইন!
- আপডেট সময় : ০৭:১৬:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ১৯৫ বার পড়া হয়েছে
হাফিজুর রহমান শফিকঃ ঢাকা সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ ও উত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলামের সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে কৃত্রিম লাইন তৈরি করা, ভোট কেন্দ্রের ভেতর বাইরে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের একক আধিপত্য অন্য দলের সমার্থক ও এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার দুই সিটির বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে কেন্দ্রের ভেতর বাইরে ভিন্ন দৃশ্য। বাইরে নিজস্ব নেতাকর্মীদের ভোটার সেজে লম্বা লাইন, ভোটকেন্দ্র জুরে খাবারের আয়োজন মনে হচ্ছিল এটা কোন দলীয় পিকনিকের আয়োজন। এছাড়াও উত্তর সিটি করপোরেশনের বারিধারায় দুইটি কেন্দ্র মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম ঢালীর সমার্থকদের একক আধিপত্যে খোদ প্রিজেটিং অফিসার ও ইভিএমের দ্বায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যদেরও হতবিহ্বল চোখে বসে থাকতে দেখা যায়।
ভাটারা ইউআইটিএস ইউনিভার্সিটি ভোট কেন্দ্রের প্রিজেটিং অফিসার আল মুজাহিদ একপর্যায়ে ভয়ে নিজেকে বক্ষবন্দী করে বসে থাকেন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলে বের হন।
কালাচাঁদ পুর, বারিধারা, বাড্ডা ভাটারার সবকটি কেন্দ্র ঘুরে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী বা সমার্থক চোখে পড়েনি গণমাধ্যম কর্মীদের। প্রায় সকল এলাকাজুড়ে নৌকা প্রতীকের সমার্থকদের উগ্র মহড়া দেখা যায়।
দক্ষিণ সিটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল ভোটকেন্দ্রেও একই অবস্থা, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সমর্থকরা কৃত্রিম লাইন তৈরি করে রাখেন।
এছাড়া মিরপুর-১০ এর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আতিকুল ইসলামের সমর্থকরাও ভোট কেন্দ্রের গেট বন্ধ করে কৃত্রিম লাইন তৈরি করেছেন। ভোটাররা ঢুকতে না পারলেও দীর্ঘ লাইন তৈরি করে রাখা হয়েছে, যাতে মনে হয় সেখানে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি রয়েছে।
কাফরুলের ইব্রাহিমপুরের চেরি গ্রামার স্কুল ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে হতাশ হয়ে পড়েন ভোটাররা। ভোটারদের দাবি, ভোটকেন্দ্র খালি থাকলেও তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। প্রতি ১০ মিনিট বা তারও বেশি সময় পরপর এক থেকেদুজনকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছিল।
এদিকে রাজধানীর কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেভোটার কক্ষের পর্দাঘেরা গোপন স্থানে ইভিএমে ভোট দিচ্ছিলেন এক নারী। তখন সেখানে ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে তেড়ে আসেন কাউন্সিলপ্রার্থী জাকির হোসেন ওরফে বাবুল। প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বললেন, আপনাদের এখানে কী কাজ? এগুলো বোঝেন না? নাকি বুঝায়ে দিতে হবে?
কেন্দ্রটিতে ভোটার উপস্থিতি বোঝাতে লোকজনকে দাঁড় করিয়ে রাখারও অভিযোগ করেন ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
ভোরের মাঠে প্রশাসনের কঠোর টহল ছিলো, ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ছিলো তার চেয়ে বেশি ছিলো সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের উগ্র উচ্ছাস সেখানে সাধারণ মানুষ এতটাই অসহায় ছিলো যে একটা সেলফি তুলতে গেলেও মোবাইল কেঁড়ে নিয়ে যান আওয়ামী লীগের কর্মীরা। তাই কঠোর পাহারায় বাইরের একরূপ আর ভোটকেন্দ্রের কক্ষে ভোটের পরিবেশ ছিলো একেবারেই অপ্রকাশিত অন্য রূপ।