ঢাকা ১২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে জামায়াতের আশাবাদ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৯ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ভারত সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আশবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানি বন্টন, তিনবিঘা করিডোরের মালিকানা আদায়সহ বিভিন্ন অমীমাংসিত সমস্যা বিরাজমান রয়েছে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী এবার ভারত সফরে গিয়ে তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানিবন্টনসহ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় করেই দেশে ফিরবেন।

তিনি বলেন, গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পানিবন্টন সমস্যা বহু পুরোনো। কিন্তু এ সব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ভারত সরকার বরাবরই অনীহা প্রকাশ করে আসছে। ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট ও বাংলাদেশের করিডোর ব্যবহারের ব্যাপারে বাংলাদেশের নিকট থেকে তাদের স্বার্থ আদায় করে নিলেও তার বিনিময় তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। ট্রানজিট, করিডোর, বেরুবাড়ীর বিনিময়ে তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। ফারাক্কা বাঁধের কারণে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশ বন্যার পানিতে ভাসছে। গংগা ও তিস্তা নদীর পানির ন্যায হিস্যা না পাওয়ার কারণে শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বাংলাদেশ পানির অভাবে, খড়ায় শুকিয়ে মরছে। মাঝে মধ্যেই ভারতের বিএসএফ বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করছে ও আহত করছে এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নাগরিকত্ব তালিকা করে আসাম ও পশ্চিম বঙ্গ থেকে সে দেশের মুসলমানদেরকে নাগরিকত্ববিহীন করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য ভারত সরকারের মন্ত্রী ও বিজেপির নেতারা মাঝে মধ্যেই হুমকি দিচ্ছে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ভারত মৌখিক সমর্থন দিলেও তাদের কার্যকর কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

জামায়াত মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার ভারত সফরে গেলেও ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ের ব্যাপারে কোন ইতিবাচক ফলাফল বহন করে আনতে পারেননি। ভারতের সাথে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হলেও তা থেকে বাংলাদেশ প্রকৃত পক্ষে লাভবান হয়নি। ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে তার ভারত সফর সম্পর্কে বক্তব্য দিলেও তার সফর থেকে বাংলাদেশ কি পেল, ভারতকে কি দিল? সে সম্পর্কে খোলাসা করে কোনো কথা না বলার কারণে বাংলাদেশের জনগণ অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে বাংলাদেশের সাথে ভারতের কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হবে। আমরা আশা করি গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, তিন বিঘা করিডোরের মালিকানা আদায়, বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা বন্ধসহ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় করেই দেশে ফিরবেন। দেশে ফিরে তিনি ভারতকে কি দিলেন ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ কি পেলো সে বিষয়ে জাতিকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করবেন।

জামায়াত নেতা আরো বলেন, দেশবাসী বিস্ময় ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, বর্তমান সরকার অতীতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থ হানিকর অনেক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করেছে। এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সে বিষয় চরম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে যদি দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয় তাহলে দেশবাসী তা কখনো মেনে নেবে না। আর তার দায়-দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই বহন করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে জামায়াতের আশাবাদ!

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৯

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ভারত সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আশবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানি বন্টন, তিনবিঘা করিডোরের মালিকানা আদায়সহ বিভিন্ন অমীমাংসিত সমস্যা বিরাজমান রয়েছে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী এবার ভারত সফরে গিয়ে তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানিবন্টনসহ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় করেই দেশে ফিরবেন।

তিনি বলেন, গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পানিবন্টন সমস্যা বহু পুরোনো। কিন্তু এ সব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ভারত সরকার বরাবরই অনীহা প্রকাশ করে আসছে। ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট ও বাংলাদেশের করিডোর ব্যবহারের ব্যাপারে বাংলাদেশের নিকট থেকে তাদের স্বার্থ আদায় করে নিলেও তার বিনিময় তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। ট্রানজিট, করিডোর, বেরুবাড়ীর বিনিময়ে তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। ফারাক্কা বাঁধের কারণে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশ বন্যার পানিতে ভাসছে। গংগা ও তিস্তা নদীর পানির ন্যায হিস্যা না পাওয়ার কারণে শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বাংলাদেশ পানির অভাবে, খড়ায় শুকিয়ে মরছে। মাঝে মধ্যেই ভারতের বিএসএফ বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করছে ও আহত করছে এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নাগরিকত্ব তালিকা করে আসাম ও পশ্চিম বঙ্গ থেকে সে দেশের মুসলমানদেরকে নাগরিকত্ববিহীন করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য ভারত সরকারের মন্ত্রী ও বিজেপির নেতারা মাঝে মধ্যেই হুমকি দিচ্ছে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ভারত মৌখিক সমর্থন দিলেও তাদের কার্যকর কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

জামায়াত মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার ভারত সফরে গেলেও ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ের ব্যাপারে কোন ইতিবাচক ফলাফল বহন করে আনতে পারেননি। ভারতের সাথে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হলেও তা থেকে বাংলাদেশ প্রকৃত পক্ষে লাভবান হয়নি। ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে তার ভারত সফর সম্পর্কে বক্তব্য দিলেও তার সফর থেকে বাংলাদেশ কি পেল, ভারতকে কি দিল? সে সম্পর্কে খোলাসা করে কোনো কথা না বলার কারণে বাংলাদেশের জনগণ অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে বাংলাদেশের সাথে ভারতের কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হবে। আমরা আশা করি গঙ্গা ও তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, তিন বিঘা করিডোরের মালিকানা আদায়, বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা বন্ধসহ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় করেই দেশে ফিরবেন। দেশে ফিরে তিনি ভারতকে কি দিলেন ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ কি পেলো সে বিষয়ে জাতিকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করবেন।

জামায়াত নেতা আরো বলেন, দেশবাসী বিস্ময় ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, বর্তমান সরকার অতীতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থ হানিকর অনেক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করেছে। এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সে বিষয় চরম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে যদি দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয় তাহলে দেশবাসী তা কখনো মেনে নেবে না। আর তার দায়-দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই বহন করতে হবে।