ঢাকা ০৩:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




থেমে নেই বিমানের লিজ বাণিজ্য!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯ ১২১ বার পড়া হয়েছে

হাফিজুর রহমান শফিক; 
বিমানের এয়ারক্রাফট লিজ মানেই কিছু লোকের পকেট ভারী হওয়া। প্রতিষ্ঠালগ্নে হাতেগোনা কয়েকটি এয়ারক্রাফট সংগ্রহ করা হলেও পরবর্তীতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজনে লিজের দ্বারস্থ হতে হয়েছে বিমানকে। অন্তরালে শত শত কোটি টাকা লোপাট হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার।

লিজের নামে প্রভাবশালীদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি বিমানের অনেকেরই জানা। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে টু শব্দ করার সাহস পান না। কথিত আছে, বিমানের সবচেয়ে বড় লিজ বাণিজ্য হয় সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জামাল উদ্দিন আহমেদের সময়ে। তার সময়ে আশীর্বাদপুষ্ট এক পাইলট জড়িত ছিলেন লিজ বাণিজ্যে। সম্প্রতি তিনি ইয়াঙ্গুনে একটি ড্যাশ- ৮ ক্র্যাস করে গ্রাউন্ডেড হন। বর্তমানে তিনি বসে বসে বেতন নিচ্ছেন।

ড্যাশ- ৮ এর লিজ ছাড়াও মিশর থেকে আনা দুটি বিকল বোয়িং- ৭৭৭ দীর্ঘ মেয়াদের লিজে আনা হয় ওই বিতর্কিত পাইলটের মাধ্যমে। জামাল উদ্দিনের আমলে আনা ওই এয়ারক্রাফট দুটি বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। মাসে ১০ কোটি টাকা ভাড়া দেয়া হলেও বছরের পর বছর এয়ারক্রাফট দুটি বিকল অবস্থায় পড়ে থাকে ভিয়েতনামে। পরবর্তীতে এয়ারক্রাফট দুটি সচল করে লিজিং কোম্পানিকে ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক অতিরিক্ত সচিব ও বিমানের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার লিজিং কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতার জন্য মিশর ঘুরে আসেন।

মিশর ঘুরে এসে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সফর সফল হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চলতি মাসেই ভালো সংবাদ দিতে পারব। বিমানকে মাসে মাসে আর কোটি টাকার লোকসানের বোঝা বইতে হবে না।

অভিযোগ রয়েছে, সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে আগামী পাঁচ বছরে নিজস্ব এয়ারক্রাফট যুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যে কারণে লুটপাটের লিজ বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, সময়ে সময়ে নিজস্ব এয়ারক্রাফট ইচ্ছা করে নষ্ট করে ভাড়ায় আনা উড়োজাহাজ চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। এতে বিমানের আয় কমে দিন দিন ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিন সিডিউলের বিপর্যয় ঘটছে। এজন্য সংসদীয় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

তবে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন দিক ও বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার রেকর্ড গড়ে। হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্ন করা সম্ভব হয়েছে। হজের সব টিকিট অগ্রিম বিক্রিও হয়ে গেছে। তবে লিজ বাণিজ্য বন্ধ করা যায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এবারও হজের জন্য কম দরের বোয়িং- ৭৭৭ না এনে চড়া মূল্য এয়ারবাস লিজ আনা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




থেমে নেই বিমানের লিজ বাণিজ্য!

আপডেট সময় : ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯

হাফিজুর রহমান শফিক; 
বিমানের এয়ারক্রাফট লিজ মানেই কিছু লোকের পকেট ভারী হওয়া। প্রতিষ্ঠালগ্নে হাতেগোনা কয়েকটি এয়ারক্রাফট সংগ্রহ করা হলেও পরবর্তীতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ প্রয়োজনে লিজের দ্বারস্থ হতে হয়েছে বিমানকে। অন্তরালে শত শত কোটি টাকা লোপাট হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার।

লিজের নামে প্রভাবশালীদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি বিমানের অনেকেরই জানা। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে টু শব্দ করার সাহস পান না। কথিত আছে, বিমানের সবচেয়ে বড় লিজ বাণিজ্য হয় সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জামাল উদ্দিন আহমেদের সময়ে। তার সময়ে আশীর্বাদপুষ্ট এক পাইলট জড়িত ছিলেন লিজ বাণিজ্যে। সম্প্রতি তিনি ইয়াঙ্গুনে একটি ড্যাশ- ৮ ক্র্যাস করে গ্রাউন্ডেড হন। বর্তমানে তিনি বসে বসে বেতন নিচ্ছেন।

ড্যাশ- ৮ এর লিজ ছাড়াও মিশর থেকে আনা দুটি বিকল বোয়িং- ৭৭৭ দীর্ঘ মেয়াদের লিজে আনা হয় ওই বিতর্কিত পাইলটের মাধ্যমে। জামাল উদ্দিনের আমলে আনা ওই এয়ারক্রাফট দুটি বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। মাসে ১০ কোটি টাকা ভাড়া দেয়া হলেও বছরের পর বছর এয়ারক্রাফট দুটি বিকল অবস্থায় পড়ে থাকে ভিয়েতনামে। পরবর্তীতে এয়ারক্রাফট দুটি সচল করে লিজিং কোম্পানিকে ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক অতিরিক্ত সচিব ও বিমানের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার লিজিং কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতার জন্য মিশর ঘুরে আসেন।

মিশর ঘুরে এসে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সফর সফল হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চলতি মাসেই ভালো সংবাদ দিতে পারব। বিমানকে মাসে মাসে আর কোটি টাকার লোকসানের বোঝা বইতে হবে না।

অভিযোগ রয়েছে, সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে আগামী পাঁচ বছরে নিজস্ব এয়ারক্রাফট যুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যে কারণে লুটপাটের লিজ বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, সময়ে সময়ে নিজস্ব এয়ারক্রাফট ইচ্ছা করে নষ্ট করে ভাড়ায় আনা উড়োজাহাজ চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। এতে বিমানের আয় কমে দিন দিন ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিন সিডিউলের বিপর্যয় ঘটছে। এজন্য সংসদীয় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

তবে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন দিক ও বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার রেকর্ড গড়ে। হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্ন করা সম্ভব হয়েছে। হজের সব টিকিট অগ্রিম বিক্রিও হয়ে গেছে। তবে লিজ বাণিজ্য বন্ধ করা যায়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এবারও হজের জন্য কম দরের বোয়িং- ৭৭৭ না এনে চড়া মূল্য এয়ারবাস লিজ আনা হয়েছে।