ঢাকা ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




ওজন স্তর ধ্বংসে উন্নত রাষ্ট্রগুলো দায়ী: সবুজ আন্দোলন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক;

সমগ্র পৃথিবী জুড়ে পরিবেশের বিপর্যয় নিয়ে বিভিন্ন জনসভা, সেমিনার ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও উন্নত এবং দায়ী রাষ্ট্রগুলো প্রতিনিয়ত অবিবেচকের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেই চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর কাছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল দেওয়ার দাবি জানান পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য উন্নত রাষ্ট্রগুলো দায়ী বলেও গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটা দাবি করেন।

বাপ্পি সরদার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলেন,১৯৮৭ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে চলার জন্য পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র একমত হলেও উন্নত রাষ্ট্রগুলো তা বাস্তবায়ন করছে না। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এবারের প্রতিপাদ্য”মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে ওজোন স্তর রক্ষা করি, নিরাপদ খাদ্য ও প্রতিষেধকের শীতল বিশ্ব গড়ি”। ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য মূলত কারণ হলো দুইটি।
প্রাকৃতিক এবং মনুষ্য দ্বারা সৃষ্টি।

প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত বজ্রপাত, অগ্ন্যুদগম, আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়া, অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব প্রভৃতি। যদিও প্রাকৃতিক কারণ স্তর ধ্বংস ক্ষতির জন্য দায়ী,তবে এটি প্রাকৃতিক ভাবে পুনরায় গড়ে ওঠে।

মনুষ্য দ্বারা সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম রয়েছে:
১/ CFC গ্যাস অর্থাৎ ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। উৎস হলো রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ফোম, রং, প্লাস্টিক, সুগন্ধি শিল্প, ট্যানারির বর্জ্য, বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, কম্পিউটার পণ্য প্রভৃতি।

২/ নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) এর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, যানবাহনে কালো ধোঁয়া, নাইলন শিল্পের ব্যবহার বৃদ্ধি।

৩/ নাইট্রোজেন অক্সাইড(NO) এর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো জেট বিমান।

৪/ ব্রোমিন পরমাণুর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার ।

৫/ সালফারের কনার ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো কলকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের কালো ধোঁযা।

৬/ মিথেন গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি সব থেকে বেশি দায়ী। উৎস হলো গবাদি পশু ও খাদ্য, কেমিক্যাল স্যার ও অতিরিক্ত কীটনাশক উৎপাদন।এছাড়াও ওজন স্তর ধ্বংসের জন্য মিথাইল, ব্রোমাইড, মিথাইল ক্লোরাইডের ব্যবহারও দায়ী।

মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর উপর যে যে প্রভাব পড়ে তার মধ্যে অন্যতম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, চোখে ছানি পড়া, ত্বকের ক্যান্সার বিশেষ করে সাদা চামড়ার ব্যক্তিদের উপরে, প্রাণী জগতের বিভিন্ন প্রজাতির দ্রুত বিলুপ্তি, কোষের উপর প্রভাব, নখ ও চুলের উপর প্রভাব, গড় আয়ু কমে যাওয়া, উদ্ভিদ জাতীয় গাছের উপর প্রভাব, খাদ্যশস্যের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হওয়া, কৃষি খাতে বিরূপ প্রভাব যেমন ফসলের আগাছা, রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি, সমুদ্রের শৈবাল প্রাণী বিলুপ্তি, ধোঁয়াশা ও অ্যাসিড বৃষ্টি বৃদ্ধি।

ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

১/ মিথেন গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং কৃষিপণ্য উৎপাদনে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
২/ CFC গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৩/ মন্ট্রিয়ন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য উন্নত রাষ্ট্রগুলো সহ সবাইকে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করতে হবে।
৪/ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রকে অর্থ সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৫/ বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ বিশেষ করে তালগাছ লাগাতে হবে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকার, সামাজিক সংগঠন ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ওজন স্তর ধ্বংসে উন্নত রাষ্ট্রগুলো দায়ী: সবুজ আন্দোলন

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

অনলাইন ডেস্ক;

সমগ্র পৃথিবী জুড়ে পরিবেশের বিপর্যয় নিয়ে বিভিন্ন জনসভা, সেমিনার ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও উন্নত এবং দায়ী রাষ্ট্রগুলো প্রতিনিয়ত অবিবেচকের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেই চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর কাছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল দেওয়ার দাবি জানান পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য উন্নত রাষ্ট্রগুলো দায়ী বলেও গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটা দাবি করেন।

বাপ্পি সরদার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলেন,১৯৮৭ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে চলার জন্য পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র একমত হলেও উন্নত রাষ্ট্রগুলো তা বাস্তবায়ন করছে না। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এবারের প্রতিপাদ্য”মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে ওজোন স্তর রক্ষা করি, নিরাপদ খাদ্য ও প্রতিষেধকের শীতল বিশ্ব গড়ি”। ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য মূলত কারণ হলো দুইটি।
প্রাকৃতিক এবং মনুষ্য দ্বারা সৃষ্টি।

প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত বজ্রপাত, অগ্ন্যুদগম, আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়া, অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব প্রভৃতি। যদিও প্রাকৃতিক কারণ স্তর ধ্বংস ক্ষতির জন্য দায়ী,তবে এটি প্রাকৃতিক ভাবে পুনরায় গড়ে ওঠে।

মনুষ্য দ্বারা সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম রয়েছে:
১/ CFC গ্যাস অর্থাৎ ক্লোরোফ্লোরো কার্বনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। উৎস হলো রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ফোম, রং, প্লাস্টিক, সুগন্ধি শিল্প, ট্যানারির বর্জ্য, বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, কম্পিউটার পণ্য প্রভৃতি।

২/ নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) এর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, যানবাহনে কালো ধোঁয়া, নাইলন শিল্পের ব্যবহার বৃদ্ধি।

৩/ নাইট্রোজেন অক্সাইড(NO) এর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো জেট বিমান।

৪/ ব্রোমিন পরমাণুর ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার ।

৫/ সালফারের কনার ব্যবহার বৃদ্ধি। উৎস হলো কলকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের কালো ধোঁযা।

৬/ মিথেন গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি সব থেকে বেশি দায়ী। উৎস হলো গবাদি পশু ও খাদ্য, কেমিক্যাল স্যার ও অতিরিক্ত কীটনাশক উৎপাদন।এছাড়াও ওজন স্তর ধ্বংসের জন্য মিথাইল, ব্রোমাইড, মিথাইল ক্লোরাইডের ব্যবহারও দায়ী।

মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর উপর যে যে প্রভাব পড়ে তার মধ্যে অন্যতম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, চোখে ছানি পড়া, ত্বকের ক্যান্সার বিশেষ করে সাদা চামড়ার ব্যক্তিদের উপরে, প্রাণী জগতের বিভিন্ন প্রজাতির দ্রুত বিলুপ্তি, কোষের উপর প্রভাব, নখ ও চুলের উপর প্রভাব, গড় আয়ু কমে যাওয়া, উদ্ভিদ জাতীয় গাছের উপর প্রভাব, খাদ্যশস্যের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হওয়া, কৃষি খাতে বিরূপ প্রভাব যেমন ফসলের আগাছা, রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি, সমুদ্রের শৈবাল প্রাণী বিলুপ্তি, ধোঁয়াশা ও অ্যাসিড বৃষ্টি বৃদ্ধি।

ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

১/ মিথেন গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং কৃষিপণ্য উৎপাদনে জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
২/ CFC গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৩/ মন্ট্রিয়ন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য উন্নত রাষ্ট্রগুলো সহ সবাইকে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করতে হবে।
৪/ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রকে অর্থ সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৫/ বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ বিশেষ করে তালগাছ লাগাতে হবে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকার, সামাজিক সংগঠন ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।