ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নিজেই মাদকাসক্ত মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা; মাসে মাসোহারা আদায় ৭লাখ! Logo দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রকারী মাস্টারমাইন্ড সেচ্ছাসেবকলীগ নেত্রী ফাতেমা আক্তার শাপলা Logo ‘শেখ হাসিনা ও জিয়াউলের বিরুদ্ধে ২০০ গুমের প্রমাণ মিলেছে’ Logo দুর্নীতির ছায়ায় রাজউক ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান! Logo নিয়মিত চুমু খেলে মিলবে যে শারীরিক উপকার Logo প্রধান উপদেষ্টা কাতার যাচ্ছেন আজ, সফরসঙ্গী যারা Logo জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হলেন মুহাম্মদ আবু আবিদ Logo প্রধান উপদেষ্টার দেয়া নির্বাচনী সময়ে সন্তুষ্ট নয় বিএনপি Logo ডেসটিনি প্রতারক রফিকুল আমিনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন Logo একচেটিয়া লিফট সরবরাহ চুক্তি: ওয়ালটনের টাকায় শেখর সহ গণপূর্ত’ চার প্রকৌশলীর বিদেশ ভ্রমণ!




সম্পর্কের অবনতি ঘটলেই ধর্ষণের অভিযোগ, হয়রানির শিকার পুরুষরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ১৯১ বার পড়া হয়েছে

 

একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সূত্রে পরিচয় পবন গুপ্ত এবং রিয়া সেনের। প্রথমদিকে একসঙ্গে কফি খেতে যেতেন তারা। একপর্যায়ে নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় করে দেয়া শুরু হয় তাদের। পরে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।

ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা, একপর্যায়ে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন তারা। তবে শুরু থেকেই পবন গুপ্ত রিয়া সেনকে বলে আসছিলেন, তার বাবা-মায়ের আর কোনো সন্তান নেই। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি রিয়াকে পছন্দ করেন, কেবল সে ক্ষেত্রেই তাদের বিয়ে হবে, অন্যথায় সম্পর্কের ইতি টেনে নিতে হবে তাদের।

এভাবেই একবছর পার হয়ে গেছে তাদের। একবার বাড়ি ফেরার পর পবন জানান, তার পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই বিয়ে। অন্যদিকে রিয়া সোজা দিল্লি পুলিশের কাছে গিয়ে পবনের নামে অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পবন তাকে গত এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছেন। পবন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েছিল বলেই তিনি পবনের সঙ্গে বিছানায় গেছেন, অন্যথায় যেতেন না।

তবে পবনের দাবি, আমি এ ধরনের প্রতিশ্রুতি কখনোই দেয়নি। আর সম্মতির ভিত্তিতে ধর্ষণ হয় কীভাবে? সেটাও আবার এক বছর ধরে!

এদিকে গত মাসে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রুল জারি করে যে, কোনো নারী সম্মতির ভিত্তিতে এক সঙ্গে বসবাসের পর ওই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করতে পারবেন না। এমনকি ওই পুরুষ যদি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের অভিযোগ করার সুযোগ নেই।

অথচ পবন গুপ্তের ইতোমধ্যেই ক্ষতি হয়ে গেছে অপূরণীয়। ছেলে ধর্ষণে অভিযুক্ত হওয়ার খবর শুনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন পবনের মা। চাকরিটাও চলে গেছে পবনের। তার বাগদত্তাও বিয়েতে না করে দিয়েছেন। পরিচিতজনরাও তার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়।

ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ৯ শত ৪৭টি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের।

আইনজীবী বিনয় শর্মা বলেন, কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেই নারীরা ধর্ষণের অভিযোগ করছেন। কেউ কেউ আবার টাকার লোভে অভিযোগ করছেন। কিছুদিন আগেই পাঁচ লাখ রুপির বিনিময়ে এক নারী এ ধরনের অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।

ভুয়া অভিযোগের কারণে, পারিবারিকভাবে সম্মানহানি যেমন হয়, বিপুল পরিমাণ অর্থও ধসে যায় অভিযুক্তের। একজন গবেষক ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ২০১৩ সালে গবেষণা করেছেন, তিনি দেখেছেন, এক তৃতীয়াংশ নারী সম্পর্কের অবণতি ঘটে যাওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।

পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুরুষরা যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও থাকেন , দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে বসবাসের পর তারা কি সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না?

দ্য গার্ডিয়ান

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সম্পর্কের অবনতি ঘটলেই ধর্ষণের অভিযোগ, হয়রানির শিকার পুরুষরা

আপডেট সময় : ০৭:২১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

 

একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সূত্রে পরিচয় পবন গুপ্ত এবং রিয়া সেনের। প্রথমদিকে একসঙ্গে কফি খেতে যেতেন তারা। একপর্যায়ে নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় করে দেয়া শুরু হয় তাদের। পরে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।

ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা, একপর্যায়ে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন তারা। তবে শুরু থেকেই পবন গুপ্ত রিয়া সেনকে বলে আসছিলেন, তার বাবা-মায়ের আর কোনো সন্তান নেই। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি রিয়াকে পছন্দ করেন, কেবল সে ক্ষেত্রেই তাদের বিয়ে হবে, অন্যথায় সম্পর্কের ইতি টেনে নিতে হবে তাদের।

এভাবেই একবছর পার হয়ে গেছে তাদের। একবার বাড়ি ফেরার পর পবন জানান, তার পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই বিয়ে। অন্যদিকে রিয়া সোজা দিল্লি পুলিশের কাছে গিয়ে পবনের নামে অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পবন তাকে গত এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছেন। পবন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েছিল বলেই তিনি পবনের সঙ্গে বিছানায় গেছেন, অন্যথায় যেতেন না।

তবে পবনের দাবি, আমি এ ধরনের প্রতিশ্রুতি কখনোই দেয়নি। আর সম্মতির ভিত্তিতে ধর্ষণ হয় কীভাবে? সেটাও আবার এক বছর ধরে!

এদিকে গত মাসে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রুল জারি করে যে, কোনো নারী সম্মতির ভিত্তিতে এক সঙ্গে বসবাসের পর ওই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করতে পারবেন না। এমনকি ওই পুরুষ যদি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের অভিযোগ করার সুযোগ নেই।

অথচ পবন গুপ্তের ইতোমধ্যেই ক্ষতি হয়ে গেছে অপূরণীয়। ছেলে ধর্ষণে অভিযুক্ত হওয়ার খবর শুনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন পবনের মা। চাকরিটাও চলে গেছে পবনের। তার বাগদত্তাও বিয়েতে না করে দিয়েছেন। পরিচিতজনরাও তার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়।

ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ৯ শত ৪৭টি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণের।

আইনজীবী বিনয় শর্মা বলেন, কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেই নারীরা ধর্ষণের অভিযোগ করছেন। কেউ কেউ আবার টাকার লোভে অভিযোগ করছেন। কিছুদিন আগেই পাঁচ লাখ রুপির বিনিময়ে এক নারী এ ধরনের অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।

ভুয়া অভিযোগের কারণে, পারিবারিকভাবে সম্মানহানি যেমন হয়, বিপুল পরিমাণ অর্থও ধসে যায় অভিযুক্তের। একজন গবেষক ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ২০১৩ সালে গবেষণা করেছেন, তিনি দেখেছেন, এক তৃতীয়াংশ নারী সম্পর্কের অবণতি ঘটে যাওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।

পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুরুষরা যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও থাকেন , দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে বসবাসের পর তারা কি সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না?

দ্য গার্ডিয়ান