ঢাকা ০৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




ঢামেকের দুই নার্স করোনা আক্রান্ত, নার্সিং হোস্টেলের একটি ব্লক লকডাউন; করোনাতঙ্কে নার্সরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

তারেক আহমেদঃ  ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কর্মরত দুই সিনিয়র স্টাফ নার্সের করোনা ভাইরাস পজিটিভ এসেছে। ১৫ এপ্রিল বিকেলে আইইডিসিআর থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরপরই তাদের কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তারা চিকিৎসার আওতায় চলে গেলেও ঢামেক হাসপাতালের নার্সদের দুশ্চিন্তা যেন এখানেই শেষ নয়, বরং শুরু। কেননা, আক্রান্তরা সম্প্রতি করোনা পজিটিভ রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছিলেন। এরপর পার হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন। এ ক’দিনে তারা তাদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে গিয়ে আরো রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং সহকর্মী নার্সদের সঙ্গে একত্রে কাজ করেছেন। এখন তাদের সংস্পর্শে যাওয়া ব্যক্তিরাও পড়েছেন করোনা আক্রান্তের ভয়ের মধ্যে। তবে বেশি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ঢাকা নার্সিং কলেজের নারী হোস্টেলে।

নাম না প্রকাশের শর্তে ওই হোস্টেলে থাকা কয়েকজন নার্স জানান, আক্রান্ত দুই সিনিয়র স্টাফ নার্সের একজন হোস্টেল ভবনের তৃতীয় তলার ৪২ নম্বর কক্ষে বাস করেন এবং অপরজন বাইরে বাসা নিয়ে থাকেন। হোস্টেলের ওই আক্রান্ত নারী ছাড়াও আরো দুই নার্স সেখানে বাস করেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আশপাশের কক্ষের নার্সরা ১৫ এপ্রিল রাত থেকেই তাদের দু’জনের ঘরের বাইরে বের না হওয়া নিশ্চিত করেছে। অন্যরা রান্না করে তাদের কক্ষে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।

তারা বললেন, ‘তাদের (আক্রান্তদের) করোনা ধরা পড়ার খবর জানতে পারি ১৫ এপ্রিল বিকেলে। কিন্তু ওই দিন সকালেও হোস্টেলের কমন (উন্মুক্ত) রান্নাঘরে অন্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রান্না করেছেন এদের একজন।’

ওই নার্সরা আরো বলেন, ‘যেদিন রিপোর্ট এসেছে, নিশ্চই তার কয়েক দিন আগেই আক্রান্ত হয়েছে তারা। কিন্তু এ ক’দিনে তো ওই নার্স হোস্টেলের রুম পার্টনারসহ অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আগের মতই ওঠাবসা-মেলামেশা করেছেন। তাহলে তার মাধ্যমে হোস্টেলের আরো কতজন যে আক্রান্ত হয়েছে, ঠিক নেই তার।’

একজন নার্স জানালেন, হোস্টেলের যে নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার রুম পার্টনারের কাছে তিনিসহ কয়েকজন নার্স আরবী পড়েন প্রতিদিন বিকেলে। তার সন্দেহ, কুর্মিটোলায় ভর্তি হওয়া নার্সের মাধ্যমে আরবী পড়ানো নারীর শরীরে এবং তার শরীর থেকে আরবী পড়তে যাওয়া সব মেয়েদের শরীরে করোনা সংক্রমণ হতে পারে। ওই নার্স নিজেকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন এবং সবাই মিলে আপাতত আরবী পড়া স্থগিতেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে, ওই দুই নার্সের কর্মস্থল ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্য নার্সরাও দুর্ভাবনায় পড়েছেন। কেননা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার আগের দিন ১৪ এপ্রিলও তারা সেখানে অন্য নার্সদের সঙ্গে রোগীর সেবা করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানালেন, করোনা পজিটিভ নার্সের বাস করা হোস্টেলের ওই তিন তলার স্টাফ ব্লক লকডাউন করা হয়েছে ৭ দিনের জন্য। এর মধ্যে কারো শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ পাওয়া গেলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের যে কক্ষে আক্রান্ত নার্সরা রোগীর সেবা দিতেন ওই কক্ষও বন্ধ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন খায়রুন নাহার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ঢামেকের দুই নার্স করোনা আক্রান্ত, নার্সিং হোস্টেলের একটি ব্লক লকডাউন; করোনাতঙ্কে নার্সরা

আপডেট সময় : ০২:৪২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০

তারেক আহমেদঃ  ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কর্মরত দুই সিনিয়র স্টাফ নার্সের করোনা ভাইরাস পজিটিভ এসেছে। ১৫ এপ্রিল বিকেলে আইইডিসিআর থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরপরই তাদের কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তারা চিকিৎসার আওতায় চলে গেলেও ঢামেক হাসপাতালের নার্সদের দুশ্চিন্তা যেন এখানেই শেষ নয়, বরং শুরু। কেননা, আক্রান্তরা সম্প্রতি করোনা পজিটিভ রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছিলেন। এরপর পার হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন। এ ক’দিনে তারা তাদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে গিয়ে আরো রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং সহকর্মী নার্সদের সঙ্গে একত্রে কাজ করেছেন। এখন তাদের সংস্পর্শে যাওয়া ব্যক্তিরাও পড়েছেন করোনা আক্রান্তের ভয়ের মধ্যে। তবে বেশি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ঢাকা নার্সিং কলেজের নারী হোস্টেলে।

নাম না প্রকাশের শর্তে ওই হোস্টেলে থাকা কয়েকজন নার্স জানান, আক্রান্ত দুই সিনিয়র স্টাফ নার্সের একজন হোস্টেল ভবনের তৃতীয় তলার ৪২ নম্বর কক্ষে বাস করেন এবং অপরজন বাইরে বাসা নিয়ে থাকেন। হোস্টেলের ওই আক্রান্ত নারী ছাড়াও আরো দুই নার্স সেখানে বাস করেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আশপাশের কক্ষের নার্সরা ১৫ এপ্রিল রাত থেকেই তাদের দু’জনের ঘরের বাইরে বের না হওয়া নিশ্চিত করেছে। অন্যরা রান্না করে তাদের কক্ষে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।

তারা বললেন, ‘তাদের (আক্রান্তদের) করোনা ধরা পড়ার খবর জানতে পারি ১৫ এপ্রিল বিকেলে। কিন্তু ওই দিন সকালেও হোস্টেলের কমন (উন্মুক্ত) রান্নাঘরে অন্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রান্না করেছেন এদের একজন।’

ওই নার্সরা আরো বলেন, ‘যেদিন রিপোর্ট এসেছে, নিশ্চই তার কয়েক দিন আগেই আক্রান্ত হয়েছে তারা। কিন্তু এ ক’দিনে তো ওই নার্স হোস্টেলের রুম পার্টনারসহ অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আগের মতই ওঠাবসা-মেলামেশা করেছেন। তাহলে তার মাধ্যমে হোস্টেলের আরো কতজন যে আক্রান্ত হয়েছে, ঠিক নেই তার।’

একজন নার্স জানালেন, হোস্টেলের যে নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার রুম পার্টনারের কাছে তিনিসহ কয়েকজন নার্স আরবী পড়েন প্রতিদিন বিকেলে। তার সন্দেহ, কুর্মিটোলায় ভর্তি হওয়া নার্সের মাধ্যমে আরবী পড়ানো নারীর শরীরে এবং তার শরীর থেকে আরবী পড়তে যাওয়া সব মেয়েদের শরীরে করোনা সংক্রমণ হতে পারে। ওই নার্স নিজেকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন এবং সবাই মিলে আপাতত আরবী পড়া স্থগিতেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে, ওই দুই নার্সের কর্মস্থল ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্য নার্সরাও দুর্ভাবনায় পড়েছেন। কেননা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার আগের দিন ১৪ এপ্রিলও তারা সেখানে অন্য নার্সদের সঙ্গে রোগীর সেবা করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং দপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানালেন, করোনা পজিটিভ নার্সের বাস করা হোস্টেলের ওই তিন তলার স্টাফ ব্লক লকডাউন করা হয়েছে ৭ দিনের জন্য। এর মধ্যে কারো শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ পাওয়া গেলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডের যে কক্ষে আক্রান্ত নার্সরা রোগীর সেবা দিতেন ওই কক্ষও বন্ধ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন খায়রুন নাহার।