ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবিপ্রবির শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের সভাপতি রনি, সম্পাদক দীপ্ত   Logo শাবিপ্রবির শাহপরান ও মুজতবা আলী হলে ৬ সহকারী প্রভোস্ট নিয়োগ Logo কুবির শেখ হাসিনা হলের নতুন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মেহের নিগার Logo শাবিপ্রবিতে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন Logo গুচ্ছ খ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা উপকরণ ও সুপেয় পানি দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের সহযোগিতা Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ




রামেক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেল গৃহবধূর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভুল চিকিৎসায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বীণা রাণী (২৮) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে হাসপাতালের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

প্রতিকার পেতে শনিবার (২৭ এপ্রিল) হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মৃত বীণা রাণীর স্বজনরা।

বীণা রাণী জেলার তানোর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর বিষু চন্দ্রের স্ত্রী। তিন সন্তানের জননী বিণার ছোট সন্তানের বয়স এক মাস।

বীণা রাণীর স্বামী বিষু চন্দ্র জানান, মলদ্বারে অনবরত রক্তপাত হওয়ায় ২২ এপ্রিল দুপুরে স্ত্রীকে রামেক হাসপাতালে নেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে তাকে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু ট্রলিম্যান রোগীকে রেখে যান ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে। টানা দুই দিন ওই ওয়ার্ডেই ভুল চিকিৎসা চলে বীণা রাণীর। ২৪ এপ্রিল রাউন্ড দিতে এসে ওয়ার্ডের একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক রোগীকে ভুল ওয়ার্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানান। ওই চিকিৎসকের নির্দেশে সেদিনই ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেয়া হয় বীণা রাণীকে।

বিষু চন্দ্র আরও জানান, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেয়ার পর নতুন করে চিকিৎসা শুরু হয় রোগীর। চিকিৎসক ক্লোনস্কপিসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে এসব পরীক্ষা না হওয়ায় নগরীর লক্ষ্মীপুরে পপুলরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয় রোগীকে। একদিন পর ২৫ এপ্রিল সকালে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বীণা রাণীর পরিবর্তে রাজেশ নামের আরেক রোগীর কোলনস্কপি রিপোর্ট দেয়া হয়। ওই পরীক্ষা রিপোর্ট দেখেই দ্বিতীয় দফা ভুল চিকিৎসা শুরু হয় গৃহবধূর। পরদিন ওই ওয়ার্ডের আরেকজন চিকিৎসক এসে ভুল রিপোর্ট শনাক্ত করেন। ওইদিনই আবারও নতুন করে কোলনস্কপি রিপোর্ট আনতে পপুলারে যান বিষু। ওই রিপোর্ট পারার আগেই ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে মারা যান বীণা রাণী।

রোগীর স্বজন ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি রাজ কুমার জানান, রামেক হাসপাতাল ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং অবহেলায় ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন ওই নারী। আর নিরক্ষর হওয়ায় ওই নারীর স্বামী বিষয়টি টের পাননি। খবর পেয়ে তিনি নিজে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। পরে পরিচালকের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে ভুল রিপোর্ট দেয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক ফরিদ শামীম। তিনি বলেন, ‘কেউ আমাকে এ নিয়ে অভিযোগ করেননি। তারপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’

তবে রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহবুবুর রহমান বাদশা পপুলার থেকে অন্য রোগীর রিপোর্ট পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার পরে শুক্রবার রাতেই সেটি ফেরৎ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। একই সঙ্গে বীণা রাণীর পরীক্ষার রিপোর্ট চাওয়া হয়। কিন্তু তারা সেদিন ওই রিপোর্ট দিতে পারেনি। ওই রাতে রোগীটি মারা যান।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, ‘এ নিয়ে মৌখিক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রামেক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ গেল গৃহবধূর

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভুল চিকিৎসায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বীণা রাণী (২৮) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে হাসপাতালের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

প্রতিকার পেতে শনিবার (২৭ এপ্রিল) হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মৃত বীণা রাণীর স্বজনরা।

বীণা রাণী জেলার তানোর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর বিষু চন্দ্রের স্ত্রী। তিন সন্তানের জননী বিণার ছোট সন্তানের বয়স এক মাস।

বীণা রাণীর স্বামী বিষু চন্দ্র জানান, মলদ্বারে অনবরত রক্তপাত হওয়ায় ২২ এপ্রিল দুপুরে স্ত্রীকে রামেক হাসপাতালে নেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে তাকে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু ট্রলিম্যান রোগীকে রেখে যান ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে। টানা দুই দিন ওই ওয়ার্ডেই ভুল চিকিৎসা চলে বীণা রাণীর। ২৪ এপ্রিল রাউন্ড দিতে এসে ওয়ার্ডের একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক রোগীকে ভুল ওয়ার্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানান। ওই চিকিৎসকের নির্দেশে সেদিনই ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেয়া হয় বীণা রাণীকে।

বিষু চন্দ্র আরও জানান, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেয়ার পর নতুন করে চিকিৎসা শুরু হয় রোগীর। চিকিৎসক ক্লোনস্কপিসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে এসব পরীক্ষা না হওয়ায় নগরীর লক্ষ্মীপুরে পপুলরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয় রোগীকে। একদিন পর ২৫ এপ্রিল সকালে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বীণা রাণীর পরিবর্তে রাজেশ নামের আরেক রোগীর কোলনস্কপি রিপোর্ট দেয়া হয়। ওই পরীক্ষা রিপোর্ট দেখেই দ্বিতীয় দফা ভুল চিকিৎসা শুরু হয় গৃহবধূর। পরদিন ওই ওয়ার্ডের আরেকজন চিকিৎসক এসে ভুল রিপোর্ট শনাক্ত করেন। ওইদিনই আবারও নতুন করে কোলনস্কপি রিপোর্ট আনতে পপুলারে যান বিষু। ওই রিপোর্ট পারার আগেই ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে মারা যান বীণা রাণী।

রোগীর স্বজন ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি রাজ কুমার জানান, রামেক হাসপাতাল ও পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং অবহেলায় ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন ওই নারী। আর নিরক্ষর হওয়ায় ওই নারীর স্বামী বিষয়টি টের পাননি। খবর পেয়ে তিনি নিজে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। পরে পরিচালকের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে ভুল রিপোর্ট দেয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক ফরিদ শামীম। তিনি বলেন, ‘কেউ আমাকে এ নিয়ে অভিযোগ করেননি। তারপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’

তবে রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহবুবুর রহমান বাদশা পপুলার থেকে অন্য রোগীর রিপোর্ট পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার পরে শুক্রবার রাতেই সেটি ফেরৎ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। একই সঙ্গে বীণা রাণীর পরীক্ষার রিপোর্ট চাওয়া হয়। কিন্তু তারা সেদিন ওই রিপোর্ট দিতে পারেনি। ওই রাতে রোগীটি মারা যান।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, ‘এ নিয়ে মৌখিক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’