ঢাকা ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ছড়ানো গুজবে সয়লাব Logo সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে Logo জবিতে আজীবন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo শাবিতে হল প্রশাসনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নোটিসে জোর পূর্বক সাইন আদায় Logo এবার সামনে আসছে ছাত্রলীগ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের মারধরের আরো ঘটনা Logo আবাসিক হল ছাড়ছে শাবি শিক্ষার্থীরা Logo নিরাপত্তার স্বার্থে শাবি শিক্ষার্থীদের আইডিকার্ড সাথে রাখার আহবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের Logo জনস্বাস্থ্যের প্রধান সাধুর যত অসাধু কর্ম: দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ! Logo বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা যুগ্ম পরিচালক আলমগীরের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য  Logo রাজশাহীতে এটিএন বাংলার সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটনকে হয়রানিমূলক মামলায় বএিমইউজরে নিন্দা ও প্রতিবাদ




একাত্তরের এই দিনে কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১২ ডিসেম্বর। কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি একাত্তরের এই দিনে। যৌথ বাহিনীর টাঙ্গাইল আক্রমণ, সারা দিনরাত যুদ্ধ শেষে ভো‌রে হানাদার বাহিনী অস্ত্র সংবরণ করে। ঢাকায় সামরিক অবস্থানের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত থাকে। ঢাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চলে।

এদিন রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আল-বদর আল-শামস কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। ফরমান আলী তাদের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীদের বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের না‌মের তালিকা। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে সে রাতেই আল-বদর বাহিনী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অা ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে। তারা আর কখনো ফিরে আসেননি। পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট বাহিনীর হাতে তারা শহীদ হন।

পাকিস্তানের শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি সত্ত্বেও রণাঙ্গনে তাদের পশ্চাদপসরণের ধারা তখনও অপরিবর্তিত। ১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় নরসিংদীর ওপর পাকিস্তান দখলের অবসান ঘটে। বিকেলে ভারতের আরও একটি ইউনিট (৪ গার্ডস) ডেমরা ঘাট থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এসে হাজির হয়।

সূর্যাস্তের আগে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দিক থেকে জেনারেল নাগরার বাহিনী টাঙ্গাইলে প্যারাসুট ব্যাটালিয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও কা‌লিয়া‌কৈর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। তাদের সাহায্য এগিয়ে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।

দিনাজপুর অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী খানসামা থানা আক্রমণ করে। যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১৫ জন ও সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের হাতে এক মেজরসহ পাকবাহিনীর ১৯ জন ধরা পড়ে। তবে এদিন দিনাজপুরের বিরল থানার বহলা গ্রামে ঘটে গণহত্যার নৃশংস ঘটনা।

১২ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল প্রবেশ করে এই গ্রামে। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার এক পর্যায়ে কাঞ্চন ক্যাম্পের খান সেনারা গ্রামবাসীকে গ্রাম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দেয়।

খানসেনাদের নির্দেশমতো তল্পিতল্পা নিয়ে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছাড়ার উদ্যোগ নেয়। তারা মাইকযোগে আবার তাদের এক হবার নির্দেশ দেয়। তখন মাগরিবের আজানের সময়। অনেকে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে গেলে ব্রাশফায়ার করা হয় পেছন থেকে। এতে ঘটনাস্থলে শহীদ হন ৩৭ জন।

এদিন নীলফামারী, গাইবান্ধা, নরসিংধী, সরিষাবাড়ি, ভেড়ামারা ও শ্রীপুর হানাদার মুক্ত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




একাত্তরের এই দিনে কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি

আপডেট সময় : ১২:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১২ ডিসেম্বর। কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি একাত্তরের এই দিনে। যৌথ বাহিনীর টাঙ্গাইল আক্রমণ, সারা দিনরাত যুদ্ধ শেষে ভো‌রে হানাদার বাহিনী অস্ত্র সংবরণ করে। ঢাকায় সামরিক অবস্থানের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত থাকে। ঢাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চলে।

এদিন রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আল-বদর আল-শামস কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। ফরমান আলী তাদের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীদের বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের না‌মের তালিকা। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে সে রাতেই আল-বদর বাহিনী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অা ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে। তারা আর কখনো ফিরে আসেননি। পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট বাহিনীর হাতে তারা শহীদ হন।

পাকিস্তানের শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি সত্ত্বেও রণাঙ্গনে তাদের পশ্চাদপসরণের ধারা তখনও অপরিবর্তিত। ১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় নরসিংদীর ওপর পাকিস্তান দখলের অবসান ঘটে। বিকেলে ভারতের আরও একটি ইউনিট (৪ গার্ডস) ডেমরা ঘাট থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এসে হাজির হয়।

সূর্যাস্তের আগে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দিক থেকে জেনারেল নাগরার বাহিনী টাঙ্গাইলে প্যারাসুট ব্যাটালিয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও কা‌লিয়া‌কৈর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। তাদের সাহায্য এগিয়ে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।

দিনাজপুর অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী খানসামা থানা আক্রমণ করে। যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১৫ জন ও সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের হাতে এক মেজরসহ পাকবাহিনীর ১৯ জন ধরা পড়ে। তবে এদিন দিনাজপুরের বিরল থানার বহলা গ্রামে ঘটে গণহত্যার নৃশংস ঘটনা।

১২ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল প্রবেশ করে এই গ্রামে। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার এক পর্যায়ে কাঞ্চন ক্যাম্পের খান সেনারা গ্রামবাসীকে গ্রাম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দেয়।

খানসেনাদের নির্দেশমতো তল্পিতল্পা নিয়ে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছাড়ার উদ্যোগ নেয়। তারা মাইকযোগে আবার তাদের এক হবার নির্দেশ দেয়। তখন মাগরিবের আজানের সময়। অনেকে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে গেলে ব্রাশফায়ার করা হয় পেছন থেকে। এতে ঘটনাস্থলে শহীদ হন ৩৭ জন।

এদিন নীলফামারী, গাইবান্ধা, নরসিংধী, সরিষাবাড়ি, ভেড়ামারা ও শ্রীপুর হানাদার মুক্ত হয়।