ঢাকা ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo রূপালী ব্যাংকের এমডি ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের প্রভাবশালী নেতা! Logo “আওয়ামী সুবিধাভোগী ৪ কারা কর্মকর্তার কাছে জিম্মি কারা অধিদপ্তর!” Logo পাইকগাছা-কয়রার মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে মাঠে আমিরুল ইসলাম কাগজী Logo এয়ারপোর্ট এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন পিয়ারী ইয়াসিন ধরাছোঁয়ার বাইরে! Logo পিরোজপুর-২ আসনে জনগণের জন্য কাজ করতে চান ফকরুল আলম: নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে Logo পাওনা টাকা চাওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা: নেপথ্যে কসাই পারভেজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ৩৬ জুলাই: যেভাবে প্রতীকী ক্যালেন্ডার হয়ে উঠল জাতীয় প্রতিরোধের হাতিয়ার Logo বাকেরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলা Logo গণপূর্ত প্রকৌশলী জহির রায়হানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান Logo “শতকোটি টাকার দুর্নীতির সাম্রাজ্য: তাপসের ঘনিষ্ট ডিএসসিসির শাহজাহান আলীর ফাঁদে ঢাকা দক্ষিণ সিটি”

একাত্তরের এই দিনে কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬৮ বার পড়া হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১২ ডিসেম্বর। কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি একাত্তরের এই দিনে। যৌথ বাহিনীর টাঙ্গাইল আক্রমণ, সারা দিনরাত যুদ্ধ শেষে ভো‌রে হানাদার বাহিনী অস্ত্র সংবরণ করে। ঢাকায় সামরিক অবস্থানের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত থাকে। ঢাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চলে।

এদিন রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আল-বদর আল-শামস কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। ফরমান আলী তাদের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীদের বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের না‌মের তালিকা। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে সে রাতেই আল-বদর বাহিনী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অা ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে। তারা আর কখনো ফিরে আসেননি। পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট বাহিনীর হাতে তারা শহীদ হন।

পাকিস্তানের শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি সত্ত্বেও রণাঙ্গনে তাদের পশ্চাদপসরণের ধারা তখনও অপরিবর্তিত। ১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় নরসিংদীর ওপর পাকিস্তান দখলের অবসান ঘটে। বিকেলে ভারতের আরও একটি ইউনিট (৪ গার্ডস) ডেমরা ঘাট থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এসে হাজির হয়।

সূর্যাস্তের আগে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দিক থেকে জেনারেল নাগরার বাহিনী টাঙ্গাইলে প্যারাসুট ব্যাটালিয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও কা‌লিয়া‌কৈর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। তাদের সাহায্য এগিয়ে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।

দিনাজপুর অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী খানসামা থানা আক্রমণ করে। যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১৫ জন ও সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের হাতে এক মেজরসহ পাকবাহিনীর ১৯ জন ধরা পড়ে। তবে এদিন দিনাজপুরের বিরল থানার বহলা গ্রামে ঘটে গণহত্যার নৃশংস ঘটনা।

১২ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল প্রবেশ করে এই গ্রামে। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার এক পর্যায়ে কাঞ্চন ক্যাম্পের খান সেনারা গ্রামবাসীকে গ্রাম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দেয়।

খানসেনাদের নির্দেশমতো তল্পিতল্পা নিয়ে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছাড়ার উদ্যোগ নেয়। তারা মাইকযোগে আবার তাদের এক হবার নির্দেশ দেয়। তখন মাগরিবের আজানের সময়। অনেকে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে গেলে ব্রাশফায়ার করা হয় পেছন থেকে। এতে ঘটনাস্থলে শহীদ হন ৩৭ জন।

এদিন নীলফামারী, গাইবান্ধা, নরসিংধী, সরিষাবাড়ি, ভেড়ামারা ও শ্রীপুর হানাদার মুক্ত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

একাত্তরের এই দিনে কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি

আপডেট সময় : ১২:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১২ ডিসেম্বর। কোনো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি একাত্তরের এই দিনে। যৌথ বাহিনীর টাঙ্গাইল আক্রমণ, সারা দিনরাত যুদ্ধ শেষে ভো‌রে হানাদার বাহিনী অস্ত্র সংবরণ করে। ঢাকায় সামরিক অবস্থানের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত থাকে। ঢাকায় কারফিউ অব্যাহত থাকে এবং ঘরে ঘরে তল্লাশি চলে।

এদিন রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আল-বদর আল-শামস কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। ফরমান আলী তাদের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীদের বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের না‌মের তালিকা। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে সে রাতেই আল-বদর বাহিনী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অা ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে। তারা আর কখনো ফিরে আসেননি। পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট বাহিনীর হাতে তারা শহীদ হন।

পাকিস্তানের শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি সত্ত্বেও রণাঙ্গনে তাদের পশ্চাদপসরণের ধারা তখনও অপরিবর্তিত। ১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় নরসিংদীর ওপর পাকিস্তান দখলের অবসান ঘটে। বিকেলে ভারতের আরও একটি ইউনিট (৪ গার্ডস) ডেমরা ঘাট থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এসে হাজির হয়।

সূর্যাস্তের আগে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দিক থেকে জেনারেল নাগরার বাহিনী টাঙ্গাইলে প্যারাসুট ব্যাটালিয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিত্রবাহিনী টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও কা‌লিয়া‌কৈর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। তাদের সাহায্য এগিয়ে আসে কাদেরিয়া বাহিনী। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।

দিনাজপুর অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী খানসামা থানা আক্রমণ করে। যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১৫ জন ও সাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের হাতে এক মেজরসহ পাকবাহিনীর ১৯ জন ধরা পড়ে। তবে এদিন দিনাজপুরের বিরল থানার বহলা গ্রামে ঘটে গণহত্যার নৃশংস ঘটনা।

১২ ডিসেম্বর পাকহানাদার বাহিনীর একটি দল প্রবেশ করে এই গ্রামে। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার এক পর্যায়ে কাঞ্চন ক্যাম্পের খান সেনারা গ্রামবাসীকে গ্রাম ছেড়ে যাবার নির্দেশ দেয়।

খানসেনাদের নির্দেশমতো তল্পিতল্পা নিয়ে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছাড়ার উদ্যোগ নেয়। তারা মাইকযোগে আবার তাদের এক হবার নির্দেশ দেয়। তখন মাগরিবের আজানের সময়। অনেকে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে গেলে ব্রাশফায়ার করা হয় পেছন থেকে। এতে ঘটনাস্থলে শহীদ হন ৩৭ জন।

এদিন নীলফামারী, গাইবান্ধা, নরসিংধী, সরিষাবাড়ি, ভেড়ামারা ও শ্রীপুর হানাদার মুক্ত হয়।