ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ছড়ানো গুজবে সয়লাব Logo সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে Logo জবিতে আজীবন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo শাবিতে হল প্রশাসনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নোটিসে জোর পূর্বক সাইন আদায় Logo এবার সামনে আসছে ছাত্রলীগ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের মারধরের আরো ঘটনা Logo আবাসিক হল ছাড়ছে শাবি শিক্ষার্থীরা Logo নিরাপত্তার স্বার্থে শাবি শিক্ষার্থীদের আইডিকার্ড সাথে রাখার আহবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের Logo জনস্বাস্থ্যের প্রধান সাধুর যত অসাধু কর্ম: দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ! Logo বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা যুগ্ম পরিচালক আলমগীরের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য  Logo রাজশাহীতে এটিএন বাংলার সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটনকে হয়রানিমূলক মামলায় বএিমইউজরে নিন্দা ও প্রতিবাদ




ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল চান আহমদ শফী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ৬৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন রিপোর্ট |

মু‌জিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে মোদিকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন এবং মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনার ক্ষুব্ধ হয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আহমদ শফী।

হেফাজত ইসলামের আমিরের ছেলে ও সংগঠনের প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহমদ শফী বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মীর, দিল্লিসহ অনেক রাজ্যে মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনও মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে, তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক।

আহমদ শফী আরও বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের ওপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে, তা পরিষ্কার রাষ্ট্রীয়নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতায় ২০ জনের অধিক মুসলমান নিহত হয়েছেন। মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। খুঁজে খুঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ এবং হামলা করা হয়েছে। শুধু মুসলমান হওয়ার অপরাধে ঘরবাড়ি, দোকানপাটে অগ্নসিংযোগ করা হচ্ছে, টাকা-পয়সা লুট করা হচ্ছে। এরপরও মুসলমানরা ধৈর্যধারণ করছে।

ভারতের ইতিহাস, ঐতিহ্যে মুসলিমদের নাম আছে উল্লেখ করে বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরোবিশ্ব ঋণী।

নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে- এমন অভিযোগ করে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবি করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হওয়ার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের এ কথা জেনে রাখা উচিত, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে, তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।

তিনি বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে, অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানরা বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।

বাংলাদেশের সরকার ও মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির আরও বলেন, ভারতীয় মুসলমানদের জানমাল ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

এছাড়া শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর সব মসজিদে ভারতের মুসলিমদের জন্য বিশেষ দোয়া করার অনুরোধ জানান আহমদ শফী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল চান আহমদ শফী

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

অনলাইন রিপোর্ট |

মু‌জিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে মোদিকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন এবং মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনার ক্ষুব্ধ হয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আহমদ শফী।

হেফাজত ইসলামের আমিরের ছেলে ও সংগঠনের প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহমদ শফী বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মীর, দিল্লিসহ অনেক রাজ্যে মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনও মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে, তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক।

আহমদ শফী আরও বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের ওপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে, তা পরিষ্কার রাষ্ট্রীয়নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতায় ২০ জনের অধিক মুসলমান নিহত হয়েছেন। মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। খুঁজে খুঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ এবং হামলা করা হয়েছে। শুধু মুসলমান হওয়ার অপরাধে ঘরবাড়ি, দোকানপাটে অগ্নসিংযোগ করা হচ্ছে, টাকা-পয়সা লুট করা হচ্ছে। এরপরও মুসলমানরা ধৈর্যধারণ করছে।

ভারতের ইতিহাস, ঐতিহ্যে মুসলিমদের নাম আছে উল্লেখ করে বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরোবিশ্ব ঋণী।

নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে- এমন অভিযোগ করে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবি করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হওয়ার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের এ কথা জেনে রাখা উচিত, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে, তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।

তিনি বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে, অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানরা বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।

বাংলাদেশের সরকার ও মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির আরও বলেন, ভারতীয় মুসলমানদের জানমাল ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

এছাড়া শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর সব মসজিদে ভারতের মুসলিমদের জন্য বিশেষ দোয়া করার অনুরোধ জানান আহমদ শফী।