ঢাকা ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




নেত্রকোনার শিকলবন্দী গৃহবধূকে উদ্ধার, স্বামী-শ্বশুরসহ আটক ৫

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯ ৮৯ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় যৌতুকের জন্য কলি বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জার বিরুদ্ধে। নির্যাতিত কলি কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় শনিবার ভোরে অভিযুক্ত স্বামী মো. জাহাঙ্গীর আলম, শ্বশুর আব্দুল হামিদ, শাশুড়ি ফাতেমা বেগম, ভাসুর আলমগীর হোসেন ও জা রুমা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের বেলতলী চরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের জন্য কলিকে প্রায়ই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। নির্যাতনের একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার গৃহবধূ কলিকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখা হয়। কৌশলে কলি তার মায়ের কাছে সিলেটে খবর পাঠায়। শুক্রবার বিকেলে সিধলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কর্মকর্তা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করার জন্য আইনিভাবে পুলিশের সহযোগিতা চান। এ ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বেলতলী চরপাড়া গ্রামে কলি বেগমের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে হাত-পায়ে শিকল বাঁধাসহ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিত কলিবাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে জানা যায়, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের মো. আব্দুল হামিদের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে (২৮) সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার তেলিপাড়ার মো. খায়রুল আলমের মেয়ে কলি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বিয়ে করে তারা সিলেটে সংসার শুরু করে। বর্তমানে তাদের সংসারে জান্নাতুল ফেরদৌস মাহিয়া নামে ১৭ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য কলিকে প্রায়ই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। গত বৃহস্পতিবার ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য বললে কলি অস্বীকৃতি জানায়। পরে তাকে স্বামীসহ অন্যরা হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখে। কৌশলে কলি তার মায়ের কাছে সিলেটে খবর পাঠায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় কলিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম জানান, গৃহবধূ কলি বেগমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




নেত্রকোনার শিকলবন্দী গৃহবধূকে উদ্ধার, স্বামী-শ্বশুরসহ আটক ৫

আপডেট সময় : ০১:৩৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় যৌতুকের জন্য কলি বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জার বিরুদ্ধে। নির্যাতিত কলি কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় শনিবার ভোরে অভিযুক্ত স্বামী মো. জাহাঙ্গীর আলম, শ্বশুর আব্দুল হামিদ, শাশুড়ি ফাতেমা বেগম, ভাসুর আলমগীর হোসেন ও জা রুমা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের বেলতলী চরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের জন্য কলিকে প্রায়ই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। নির্যাতনের একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার গৃহবধূ কলিকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখা হয়। কৌশলে কলি তার মায়ের কাছে সিলেটে খবর পাঠায়। শুক্রবার বিকেলে সিধলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কর্মকর্তা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করার জন্য আইনিভাবে পুলিশের সহযোগিতা চান। এ ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বেলতলী চরপাড়া গ্রামে কলি বেগমের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে হাত-পায়ে শিকল বাঁধাসহ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিত কলিবাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে জানা যায়, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের মো. আব্দুল হামিদের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে (২৮) সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার তেলিপাড়ার মো. খায়রুল আলমের মেয়ে কলি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বিয়ে করে তারা সিলেটে সংসার শুরু করে। বর্তমানে তাদের সংসারে জান্নাতুল ফেরদৌস মাহিয়া নামে ১৭ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য কলিকে প্রায়ই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। গত বৃহস্পতিবার ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য বললে কলি অস্বীকৃতি জানায়। পরে তাকে স্বামীসহ অন্যরা হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখে। কৌশলে কলি তার মায়ের কাছে সিলেটে খবর পাঠায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় কলিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম জানান, গৃহবধূ কলি বেগমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর ও জাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।