পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার ২০ গ্রাম প্লাবিত
- আপডেট সময় : ১০:১৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯ ৬৮ বার পড়া হয়েছে
জেলা প্রতিনিধি;
নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুরে দু’দিনের টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় ফসলি জমিসহ বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে ভাঙনের উপক্রম হয়েছে।
এদিকে বিরিশিরি-শ্যামগঞ্জ মহাসড়কের ইন্দ্রপুর এলাকায় সদ্য নির্মিত ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়কের দুই পাশের মাটি সরে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা ও জেলা প্রসাশনের পাশাপাশি এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে রাস্তা রক্ষার কাজ করছেন।
স্থানীয় আশরাফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে পানি চলে আসায় আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। যদি এ ব্রিজটি ভেঙে যায় তাহলে এলাকার শত শত মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।
অপরদিকে কলমাকান্দায় পাহাড়ি ঢলের তোড়ে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা। ভেসে গেছে চাষ করা শতাধিক পুকুরের মাছ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানি বৃদ্ধি এখনও অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উপজেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৫ মিলিমিটার। ভারী বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নতুন করে কলমাকান্দা সদর, পোগলা, বড়কাপন, নাজিরপুর ও কৈলাটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের আরও অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।
এছাড়া পাহাড়ি ঢলের তোড়ে লেংগুরা ইউনিয়নের চৈতা গ্রামের আহমেদ মিয়ার ছেলে হান্নান (২৩) নিখোঁজ হয়েছেন। পরিবারের দাবি হান্নান গত বৃহস্পতিবার সকালে বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশে গণেশ্বরী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তবে পানিবন্দি অধিকাংশ পরিবার কাজে যেতে না পারায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে খাদ্য সংকটে রয়েছেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর না নেয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের প্রতি চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম বলেন, এলাকার ভাঙনরোধে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের সঙ্গে কাজ করছেন। কুল্লাগড়া ইউনিয়নেও ভাঙনরোধে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। আশা করছি দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারব।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা তালুকদার বলেন, এলাকায় হঠাৎ বন্যার পানি প্রবেশ করায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বড় ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সদা প্রস্তুত রয়েছে।
এ ব্যাপারে রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহেরা খাতুন জানান, এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনিসহ পরিষদের সদস্যরা প্রশিক্ষণে আছেন। তাই এলাকায় যেতে পারছেন না।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক তালুকদারসহ তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক মঈন-উল-ইসলাম জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে বিরিশিরি এলাকার ওই সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। সেতুটি রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।