নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
যে সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাম পৌনে ৪ লাখ টাকা, সেই অটোরিকশার নিবন্ধনের জন্য যদি ঢাকায় ক্রেতাকে ১৮ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রামে ১২ লাখ টাকা গুনতে হয়, সেটিকে দিনদুপুরে ‘ডাকাতি’ বলাই শ্রেয়। সড়ক পরিবহন খাতে যত অনিয়ম, অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলা আছে, অটোরিকশা নিবন্ধন নবায়নের নামে ক্রেতার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া তার একটি।
সমস্যাটি শুরু হয়েছিল যখন বিএনপি সরকার পুরোনো বেবিট্যাক্সি বাতিল করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা আমদানির অনুমতি দেয়। দুর্নীতির কারণে ২০০৪ সালে বেবিট্যাক্সি আমদানি বন্ধও করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে ঢাকায় পুরোনো মিশুকের পরিবর্তে প্রায় দুই হাজার অটোরিকশার অনুমোদন দেয় বিআরটিএ। এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায়ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর নিবন্ধন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে মেয়াদ শেষে একই মালিকের নামে আবার নতুন অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব যানবাহন চালুর একটি ভালো উদ্যোগকে কীভাবে দুর্নীতি ও যাত্রীসাধারণের ওপর নির্যাতনের স্তরে নিয়ে যাওয়া যায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশা আমদানি ও নিবন্ধন অন্যতম। ২০০২ সালে২ লাখ টাকার বেবিট্যাক্সি বিক্রি করা হয়েছিল ৪-৫ লাখ টাকায়। সেই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁরা কেউ ক্ষমতার পাদপীঠে নেই। অর্থাৎ ক্ষমতা বদলায়, দুর্নীতি-অনিয়ম বদলায় না।
অটোরিকশার নিবন্ধনের নামে দীর্ঘদিন ধরে যে নৈরাজ্য ও অসাধু প্রক্রিয়া চলছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সরকার চাহিদা অনুযায়ী অটোরিকশা আমদানি ও নিবন্ধনের সুযোগ করে দিলে সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে আশা করা যায়। তখন আর কেউ একটি নিবন্ধনের জন্য লাখ লাখ টাকা ‘উৎকোচ’ দিতে রাজি হবে না।