ঢাকা ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




ভুয়া বিয়ের ছলে পরে ১৪ বছর বয়সে মা হলো রাহেলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:০৭:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯ ৮১ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি;

দেড় বছর আগে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শরিফুল গাজী। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখায়। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য জোর করে। আমি বিয়ের কথা বলি। আট মাস আগে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বলে আজ থেকে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করি। এরপর থেকে শারীরিক সম্পর্ক শুরু। ১৪ বছর বয়সেই হয় আমার সন্তান।

নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের রাব্বুল বৈদ্যের মেয়ে রাহেলা খাতুন।

রাহেলা খাতুন জানায়, শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আমাকে ঘরে তোলার কথা শরিফুল গাজীকে জানাই। এরপর আমাকে আজ না হয় কাল করে ঘোরাতে থাকে শরিফুল। সেই সঙ্গে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে সন্তান নষ্ট হয়নি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিয়ে অস্বীকার করে শরিফুল। বিয়ের কোনো কাগজ নেই বলে জানায় সে। তার পরিবারকে জানালেও আমাকে স্বীকৃতি দেয়নি। এখন আমি ফোন করলেও রিসিভ করে না শরিফুল। সাত দিন আগে আমার কন্যাসন্তান হয়েছে। বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রেখেছি শরিফা।

রাহেলা খাতুন আরও জানায়, ঘটনাটি নিয়ে থানায় গেলেও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। পুলিশ বলেছে আদালতে গিয়ে মামলা করতে। ২৯ মে আদালতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে মামলা করেছি। তখন সন্তানের জন্ম হয়নি। আমি অসহায় গরিব পরিবারের মেয়ে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। এরপর আর লেখাপড়া করা হয়নি। কি হবে আমার, আমি জানি না। তবে আমি আমার সন্তানের স্বীকৃতি চাই। শরিফুল গাজী (৩০) গাবুরা ইউনিয়নের একই গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গাজীর ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, মাস খানেক আগে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে শরিফুল গাজী। স্থানীয়ভাবে কোনো সমাধান হয়নি। অসহায় মেয়েটির স্বীকৃতি দিতে চায় না শারিফুল ও তার পরিবার।

৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, রাহেলা ও শরিফুলের ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা হচ্ছে। তবে এর কোনো সমাধান কেউ দিতে পারছে না। অবশেষে আদালতে মামলা করেছে মেয়েটি। পরিবারটিও খুব অসহায়।

গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শরিফুল গাজীর বাবা শহিদুল গাজী ঘের ব্যবসায়ী। টাকা অনেক। স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় রাহেলাকে নিয়ে থানায় গেলে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। প্রতারণা করে অসহায় পরিবারের মেয়েটির জীবন নষ্ট করেছে শরিফুল। শরিফুল গাজীর স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে শরিফুল গাজীর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাবা ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল গাজীর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশের ওসি হাবিল হোসেন বলেন, রাহেলা খাতুন এসব অভিযোগ নিয়ে থানাতে আসেনি। ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। মেয়েটি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আদালতে মামলা করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভুয়া বিয়ের ছলে পরে ১৪ বছর বয়সে মা হলো রাহেলা

আপডেট সময় : ১০:০৭:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি;

দেড় বছর আগে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে শরিফুল গাজী। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখায়। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য জোর করে। আমি বিয়ের কথা বলি। আট মাস আগে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বলে আজ থেকে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করি। এরপর থেকে শারীরিক সম্পর্ক শুরু। ১৪ বছর বয়সেই হয় আমার সন্তান।

নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের রাব্বুল বৈদ্যের মেয়ে রাহেলা খাতুন।

রাহেলা খাতুন জানায়, শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আমাকে ঘরে তোলার কথা শরিফুল গাজীকে জানাই। এরপর আমাকে আজ না হয় কাল করে ঘোরাতে থাকে শরিফুল। সেই সঙ্গে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে সন্তান নষ্ট হয়নি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিয়ে অস্বীকার করে শরিফুল। বিয়ের কোনো কাগজ নেই বলে জানায় সে। তার পরিবারকে জানালেও আমাকে স্বীকৃতি দেয়নি। এখন আমি ফোন করলেও রিসিভ করে না শরিফুল। সাত দিন আগে আমার কন্যাসন্তান হয়েছে। বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রেখেছি শরিফা।

রাহেলা খাতুন আরও জানায়, ঘটনাটি নিয়ে থানায় গেলেও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। পুলিশ বলেছে আদালতে গিয়ে মামলা করতে। ২৯ মে আদালতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে মামলা করেছি। তখন সন্তানের জন্ম হয়নি। আমি অসহায় গরিব পরিবারের মেয়ে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। এরপর আর লেখাপড়া করা হয়নি। কি হবে আমার, আমি জানি না। তবে আমি আমার সন্তানের স্বীকৃতি চাই। শরিফুল গাজী (৩০) গাবুরা ইউনিয়নের একই গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গাজীর ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, মাস খানেক আগে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে শরিফুল গাজী। স্থানীয়ভাবে কোনো সমাধান হয়নি। অসহায় মেয়েটির স্বীকৃতি দিতে চায় না শারিফুল ও তার পরিবার।

৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, রাহেলা ও শরিফুলের ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় বেশ সমালোচনা হচ্ছে। তবে এর কোনো সমাধান কেউ দিতে পারছে না। অবশেষে আদালতে মামলা করেছে মেয়েটি। পরিবারটিও খুব অসহায়।

গাবুরা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শরিফুল গাজীর বাবা শহিদুল গাজী ঘের ব্যবসায়ী। টাকা অনেক। স্থানীয়ভাবে সমাধান না হওয়ায় রাহেলাকে নিয়ে থানায় গেলে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। প্রতারণা করে অসহায় পরিবারের মেয়েটির জীবন নষ্ট করেছে শরিফুল। শরিফুল গাজীর স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে শরিফুল গাজীর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাবা ঘের ব্যবসায়ী শহিদুল গাজীর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশের ওসি হাবিল হোসেন বলেন, রাহেলা খাতুন এসব অভিযোগ নিয়ে থানাতে আসেনি। ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। মেয়েটি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আদালতে মামলা করেছে।