নিজস্ব প্রতিবেদক;
রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় রাজধানীর সব ইউনিটকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশের যেকোনো গাড়িকে আন-অ্যাটেন্ডেড না রাখতে এবং পুলিশের যেকোনো স্থাপনায় প্রবেশকালে সকল আগন্তুককে বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে তল্লাশি করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেসনোটও পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সদরের পাঠানো প্রেসনোটে বলা হয়েছে, মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে হামলা প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতর দৃষ্টি রাখছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের সকল ইউনিটকে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
হামলার বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। আইএসের দায় স্বীকারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে আইএসের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য থাকলে তাও জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ওই বার্তায়।
তবে পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সতর্কতা হিসেবে সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিটকে করণীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের সকল ইউনিটকে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। পুলিশের যেকোনো স্থাপনায় প্রবেশ করতে চাইলে যে কাউকে বিধি অনুযায়ী সতর্কতার সঙ্গে তল্লাশি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্লক রেড, চেকপোস্টে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৬ মে) রাত ৯টায় রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে সিএনজি পাম্পের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব (সবুজবাগ) বিভাগের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা খাতুন, রিকশাচালক লাল মিয়া এবং এক পথচারী আহত হন।
রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরক ছুড়ে মারা হয়েছিল নাকি পরিকল্পিত হামলা তা তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
সোমবার (২৭ মে) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত রিকশাচালক লাল মিয়াকে দেখার পর সাংবাদিকদের বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এ ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে এটি সাধারণ ককটেলের চেয়ে শক্তিশালী। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বোমাটি গাড়িতে পেতে রাখা হয়েছিল।
হামলাকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, কাউন্টার টেরোরিজম, ডিবি, সিআইডি ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। কারা কী উদ্দেশে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এটি কী ধরনের বিস্ফোরক তা কাউন্টার টেরোরিজমের বোম ডিসপোজাল ইউনিট খতিয়ে দেখছে। এটি পুলিশকে টার্গেট করা হয়েছে নাকি অন্য কোনো লক্ষ্যে করা হয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হামলার ঘটনায় রোববার রাতেই বিস্ফোরক ও সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতদের আসামি করে পল্টন থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং ৪৬। মামলার তদন্ত দায়িত্বে রয়েছেন পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আলী।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্টন থানার ডিউটি অফিসার টিএসআই মাইদুল ইসলাম জানান, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি অজ্ঞাত।