পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ আক্তারুজ্জামানের খুটির জোর কোথায় ?
- আপডেট সময় : ১২:১২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯ ১২২ বার পড়া হয়েছে
নীলা রহমান: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রজেকশনিষ্ট আক্তারুজ্জামানের খুটির জোর কোথায়?। ক্ষমতার দাপট, ঘুষ, টেন্ডারবাজির মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছেন মাত্র দশ বছরের ব্যবধানে। বিভিন্ন জালিয়াতিসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই পানখেকো আক্তারের বিরুদ্ধে। সুত্রে জানা যায়, আক্তারুজ্জামান খান ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের (চানপুর) আহমেদাবাদ গ্রামের মৃত মালেক খানের ছেলে। শশুর বাড়ির এক নিকটাত্মিয়ের মাধ্যমে আক্তারুজ্জামান ১৯৯৪ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের প্রজেকশনিষ্ট পদে ১৭ তম গ্রেডে তৎকালীন ১১২৫ টাকা বেতন স্কেলে চাকুরি পান। চাকুরি পাবার পরে সে ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে ভ্যানগাড়িতে করে সিনেমা প্রদর্শন করে বেড়াতো। ২০০১ সাল থেকে সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি অফিসের সহকারী হিসেবেও কাজ করে সিনিয়রদের মন যোগানের চেষ্টা করে। এবং সে এ কাজে বেশ সখ্যতা অর্জন করে। তৎকালীন অফিসারদের মন ও পকেট খুশি করাতে পটু হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যেই অফিস সহকারী বনে যান। ২০০৯ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের পরিচালক গনেশ চন্দ্র সরকারের ছত্রছায়ায় আক্তারুজ্জামান সরকারী বাজেট বিদেশি দাতা সংস্থার বাজেট সংক্রান্ত টেন্ডার ওপি, জিওবি, আরএফপি, জাইকা সংস্থা ইউএনএফপি সংস্থা,ইউনিসেফ সংস্থা বিকেএমআই সংস্থা সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ২৩০ কোটি টাকার অর্থ সংশ্লিষ্ট অফিসিয়ালি নথির কাজগুলো নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন। এর পরে আস্তে আস্তে করে একে একে অধিদপ্তরের সমস্ত কাজ নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিতে শুরু করেন। আক্তারুজ্জামানের অবৈধ সম্পদের মধ্যে বাসা নং ৩০ রোড নং ২৭ ব্লক ডি পল্লবী, মিরপুরে ২ কাঠা জমির উপরে বিলাশবহুল বাড়ি। এছাড়াও বাসা নং ১১ রোড নং ৩১ ব্লক ১০ ডি মিরপুরে। এ ছাড়াও গাজিপুরে ৩ কাঠা জমি সহ নামে বেনামে জমি আছে।
অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল, এ ১০ বছরে আক্তার শত কোটি টাকার মালিক হন। নিজস্ব একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন তার অপকর্ম। মারধর ও হত্যার ভয় দেখিয়ে সবাইকে জব্দ করে রাখেন আক্কারুজ্জামান। আক্তারুজ্জামানের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক সিবিএ নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, আক্তারের চাকরি আমার হাত দিয়ে হয়েছে, কিন্তু চাকরি শেষে আমি চায়ের দোকান করি আর আক্তার টাকার কুমির হয়েছেন। বানিয়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব দেখেও যেন না দেখার ভান করে, ক্ষোভ ওই সিবিএ নেতার। আইইএম ইউনিটের ২৩০ কোটি টাকার ওপি অনুযায়ী বিজ্ঞাপনগুলো সরাসরি জাতীয় পত্রিকায় দেয়ার বিধান থাকলেও, নিজস্ব ব্যক্তি কেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কমিশনের মাধ্যমে কয়েক বছরে শত কোটি টাকা কামিয়েছেন আক্তার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেয়া বিজ্ঞাপনের বিল-ভাউচার তারই প্রমাণ। এসব বিষয়ে যেন অডিট আপত্তি না আসে, সে জন্য অডিট টিমকে ম্যানেজ করে রাখেন বলে অভিযোগ আছে। আইইএম ইউনিটের ফাইল সরবরাহের বেশির ভাগ কাজ আক্তারুজ্জামান করেন তার প্রমাণ ও বিভিন্ন কাগজপত্র অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। ক্রয়ের নামে ভুয়া স্টক রেজিস্টার রিসিভ এবং বিল ভাউচার দাখিল করে সরকারি অর্থ লুটপাট করেছেন, যার প্রমাণ রেজিস্টারে উল্লেখিত ব্যক্তির নাম, পদবী এবং স্বাক্ষর যাচাই করলে পাওয়া যাবে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আক্তার জানান, আমি এমন এক পরিবার থেকে উঠে এসেছি আমার দাদা তৎকালীন সময়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন আমার বাবা ছিলেন ইউপি মেম্বার এবং আমার বাবার অনেক জমিজমা ছিল। আমি ঢাকায় উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। তবে আমি এসোসিয়শনের নির্বাচনে জয়ি হবার পর থেকে নির্দিষ্ট একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে দুদক সহ বিভিন্ন যায়গায় ভ‚ল তথ্য দিয়ে আমার সন্মান ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াশ চালাচ্ছে। আমি একজন সিবিএ নেতা। আমার কাছে মানুষ আসবেই আমি অধিদপ্তরের ৫২ হাজার কর্মচারির নেতা। সবার সুখে দুখে আমি পাশে দাড়াই। এটা অনেকে সহ্য করতে পারেন না। এছাড়াও নির্দিষ্ট একটি মহলের ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থ্যা নেয়ার চেষ্টা করছি খুব দ্রুতই তাজা একটা খবর মিডিয়া পাড়া জানবে ।